ফরাসি ওপেনে সেমিফাইনাল লাইন আপটা একেবারে অপ্রত্যাশিত বলা যাবে না। তরুণ ডমিনিক থিয়েমকে গ্র্যান্ড স্ল্যামের শেষ চারে দেখে দারুণ লাগছে। তবে যে ভাবে নোভাক জকোভিচ ছিটকে গেল সেই একটা জায়গাতেই শুধু আমি হতাশ। জকোভিচকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। তাই ধারাভাষ্য দিতে দিতে থিয়েমের বিরুদ্ধে ম্যাচটার শেষ সেট দেখার সময় খুব কষ্ট হচ্ছিল। প্রথম আর দ্বিতীয় সেটের মাঝামাঝি পর্যন্ত গত বারের চ্যাম্পিয়ন মরিয়া হয়ে লড়াই চালিয়েছিল। তবে এর পর থেকেই ওর ছন্দটা হারিয়ে গেল আর তার পর চেপে বসল প্রবল হতাশা।
এখন জকোভিচ কী করবে?
সবচেয়ে ইতিবাচক ব্যাপারটা হল, আন্দ্রে আগাসিকে ওর সুপার কোচ করে আনা। প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন আগাসি অবশ্য ফরাসি ওপেনে দ্বিতীয় সপ্তাহে উপস্থিত থাকতে পারেনি অন্য দায়িত্ব থাকায়। তবে আমি আশা করব এর পরে অন্তত গ্র্যান্ড স্ল্যামে পুরো সময়ের জন্য উপস্থিত থাকার ব্যাপারটা আগাসি নিশ্চিত করবে। পুরো সময়ের কোচের পাশাপাশি আর এক জন ফিটনেস ট্রেনারও দরকার এখন নোভাকের। জকোভিচের ভাইকে সম্মান জানিয়েই বলছি, প্রাক্তন চ্যাম্পিয়নের পুরনো ফর্ম আর ধারাবাহিকতা ফিরিয়ে আনতে এখন যে দ্রুত পরিবর্তনগুলো প্রয়োজন সেগুলো ও এখন আনতে পারবে না।
এ সব বলার পাশাপাশি তরুণ থিয়েমকেও কিন্তু কৃতিত্ব দিতে ভুলে গেলে চলবে না। দুরন্ত ক্লে কোর্ট মরসুম চলছে থিয়েমের। বুধবার খুব চতুর এবং সাহসি টেনিস খেলেছে ও। শুক্রবার আবার রাফায়েল নাদালের মুখোমুখি হচ্ছে সোমিফাইনালে থিয়েম। কয়েক সপ্তাহ আগেই রোমে নাদালকে ও হারিয়ে দিয়েছিল। তিন দিনের মধ্যে জকোভিচ আর নাদালকে হারানোটা বিরাট ব্যাপার। থিয়েম কিন্তু সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে। যদিও এ বার ফরাসি ওপেন জেতার দৌড়ে আমার ফেভারিট নাদালই। আর মনে হয় না থিয়েম হারাতে পারবে নাদালকে।
আরও পড়ুন: বার্সাতেই অবসর নিতে চান মেসি
অনেক দিন পরে নাদালকে এত ফিট দেখে খুব ভাল লাগছে। গত বছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ওর টেনিস থেকে বিশ্রাম নেওয়াটা খুব কাজে দিয়েছে। নাদালকে দেখে মনে হচ্ছে ক্লে কোর্টে যেন নতুন কোনও খেলোয়াড় খেলছে। রবিবার তাই চ্যাম্পিয়নের ট্রফি জেতার দৌড়ে নাদালই ফেভারিট। কার্লোস ময়াকে সুপার কোচ করার পরে নাদালের প্রস্তুতি একটা অন্য মাত্রা পেয়েছে মনে হচ্ছে। একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্যোগ যে ক্লে কোর্টের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়কেও সাহায্য করতে পারে সেটাই বোঝা যাচ্ছে।
অন্য দিকে, স্ট্যান ওয়ারিঙ্কা নিঃশব্দে এগিয়ে যাচ্ছে টুর্নামেন্টে। এখনও পর্যন্ত ও একটাও সেট হারায়নি। এতেই বোঝা যাচ্ছে ও কী রকম ফর্মে আছে। পাশাপাশি শীর্ষবাছাই অ্যান্ডি মারে যত টুর্নামেন্ট এগোচ্ছে তত ফর্মে ফিরছে মনে হচ্ছে। ওয়ারিঙ্কা আর মারের সেমিফাইনালের লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবে। তবে আমি কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখব ওয়ারিঙ্কাকে।