রঞ্জিতে আজ মনোজদের সামনে মধ্যপ্রদেশের চ্যালেঞ্জ

ইডেনে গতির পিচে ভরসা পেসাররাই

এক সপ্তাহ আগেই যে উইকেটে দুরন্ত বোলিং করে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান পেসার ওশেন থমাস, সেই উইকেটেই রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচে মধ্যপ্রদেশকে স্বাগত জানাতে চলেছেন মনোজ তিওয়ারিরা। 

Advertisement

ঈন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫০
Share:

টক্কর: লড়াইয়ে নামার আগে ইডেনে দুই অধিনায়ক। নমন ওঝা ও মনোজ তিওয়ারি। রবিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

এক দিকে অশোক ডিন্ডা ও ঈশান পোড়েল। অন্য দিকে আবেশ খান ও ঈশ্বর পাণ্ডের জুটি। ইডেনে ঘাসে ঢাকা গতিময় উইকেট অপেক্ষা করে রয়েছে এঁদেরই জন্য।

Advertisement

এক সপ্তাহ আগেই যে উইকেটে দুরন্ত বোলিং করে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান পেসার ওশেন থমাস, সেই উইকেটেই রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচে মধ্যপ্রদেশকে স্বাগত জানাতে চলেছেন মনোজ তিওয়ারিরা।

দু’দলেরই শক্তি পেস আক্রমণ। তাই বিপক্ষ অধিনায়ক নমন ওঝা মনে করেন, এই ম্যাচে হয়তো দাপট দেখাবেন পেসাররা। কিন্তু বাংলার অধিনায়ক মনোজ তা মানতে রাজি নন। তাঁর মত, পেসাররাও এই উইকেটে যে রকম সাহায্য পায়, ভাল শট খেলতে পারে ব্যাটসম্যানেরাও। তাই বোলারদের পাশাপাশি ব্যাটসম্যানদেরও সমান দায়িত্ব নিতে হবে। উইকেটে ঘাস দেখে ভয় পেলে চলবে না। প্রয়োজনে অতিরিক্ত ব্যাটসম্যান ও তৃতীয় পেসার নিয়ে নামতে পারে বাংলা। সে ক্ষেত্রে বিবেক সিংহ ও মুকেশ কুমারকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে এই ম্যাচে।

Advertisement

বাংলা শিবির সূত্রে খবর, শ্রীবৎস গোস্বামীর পরিবর্তে দলে নেওয়া হতে পারে বিবেককে। কারণ, বিবেক বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান, যিনি উইকেটকিপিংও করতে পারেন। তাঁকে দিয়ে এ ম্যাচে কিপিং করানোর ভাবনাও রয়েছে বাংলা শিবিরের। মরসুমের প্রথম ম্যাচে হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে দশ রান করে আউট হয়েছিলেন শ্রীবৎস। তাই মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে তাঁকে ছাড়াই হয়তো নামছে বাংলা। মনোজ বলেন, ‘‘বিবেক কিপিং করতে পারে বলেই ওকে ১৬ জনের দলে রাখা হয়েছে। যদিও সকালের আগে প্রথম এগারো ঠিক করা হবে না। তবে বিবেকের খেলার সম্ভাবনা আছে।’’

গত তিন দিন ধরেই আলাদা করে নেটে কিপিং করানো হয় বিবেককে। রবিবার সকালে অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে স্পিনারের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নেন তিনি। নজর রাখা হয় মুকেশের উপরেও। দু’দিকেই বল সুইং করানোর ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। তাই ইডেনের পরিবেশে কার্যকরী হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে মুকেশের কাছে। বাদ পড়তে পারেন প্রদীপ্ত প্রামাণিক। শেষ ম্যাচে উল্লেখযোগ্য পারফম্যান্স থাকায় অবশ্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হতে পারে। তবে মনোজ বলেন, ‘‘কাল সকালে পিচ না দেখে কিছু বলতে পারব না। পিচে ঘাস আছে ঠিকই কিন্তু সে রকম স্যাঁতসেঁতে ভাব আছে কি না, তা দেখে এই সিদ্ধান্ত নেব।’’

ইডেনের বাইশ গজের চরিত্র নিয়ে মনোজের মন্তব্য, ‘‘দিনের প্রথম দেড় ঘণ্টা পেসাররা সাহায্য পায়। কিন্তু লাঞ্চ ও চা-বিরতির মধ্যে দু’ঘণ্টা ব্যাটসম্যানদের জন্য আদর্শ। আবার বিকেলে বল নড়াচড়া করতে শুরু করে।’’ বঙ্গ অধিনায়কের লক্ষ্য, দলকে বড় ইনিংস উপহার দেওয়া। গত তিন দিন ধরে নেটে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। মাঠের এক পাশে গিয়ে বড় শট নেওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। যাতে কোনও ভাবেই আর আটকানো না যায় বাংলার অধিনায়ককে। হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে হাফসেঞ্চুরি করে আউট হওয়ার যন্ত্রণা এখনও ফুটে বেরোচ্ছে তাঁর অনুশীলনে। বলেন, ‘‘প্রস্তুতি ভালই হয়েছে। এ বার মাঠে তা প্রয়োগ করতে পারলেই সাফল্য আসবে। এ বার থেকে হাফসেঞ্চুরি করার পরে আরও সতর্ক হতে হবে। (অরুণ) লালজির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছি।’’

মনোজ আরও মনে করেন, ব্যাটিং, বোলিংয়ের পাশাপাশি জেতার জন্য প্রয়োজন দলীয় প্রচেষ্টা। তাঁর কথায়, ‘‘আগের ম্যাচে যা হয়েছে, সব মাথা থেকে বার করে দিতে চাই। দলীয় প্রচেষ্টা দিয়েই খেলতে হবে আমাদের। একাগ্রতার সঙ্গে সেটা করার চেষ্টা করছি আমরা। বাকিটা মাঠে করে দেখাতে হবে।’’

বিপক্ষ পেসার ঈশ্বর পাণ্ডে পারলে রবিবারই মাঝের পিচে বল নিয়ে নেমে পড়েন। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘উইকেট দেখে মনে হচ্ছে এখনই নেমে পড়ি। ভাল ঘাস রয়েছে। প্র্যাক্টিস পিচে গুড-লেংথ স্পট থেকেই বুকের কাছে ওঠানো যাচ্ছিল বল। আশা করা যায়, ম্যাচের পিচেও সেই সুবিধাই পাওয়া যাবে।’’

আমাগী চার দিনে সত্যিই পেসারদের মুখে হাসি ফোটে কি না, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement