অনূর্ধ্ব-২৩ বাংলা দলের ক্রিকেটারেরা।— ফাইল চিত্র।
অনূর্ধব-২৩ সিকে নাইডু ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সৌজন্যে সেমিফাইনালে পৌঁছল বাংলা। সেই সঙ্গেই উঠে এল বাংলার রঞ্জি ট্রফি দলের মেন্টর অরুণ লালের নজরে। মেন্টর জানিয়ে দিয়েছেন, আসন্ন সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটারকে সুযোগ দেওয়া হবে।
মনোজ তিওয়ারির দলের মেন্টর হলেও ঋত্বিক রায়চৌধুরীর দলের পারফরম্যান্স সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। কে কোন ম্যাচে কত রান করছেন, ক’টা উইকেট পাচ্ছেন, সবই তাঁর নখদর্পণে। রবিবার আনন্দবাজারকে ফোনে অরুণ বলেন, ‘‘অসাধারণ পারফরম্যান্স। সব চেয়ে ভাল বিষয়, এই দলটি লড়াই করতে জানে। মাঠে না গেলেও সব ম্যাচের খবর রাখছি। সাপ্লাই লাইন ভাল খেললে আমাদের উদ্বেগ অনেকটাই কমে যায়। আসন্ন টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় এই দলের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
শুধু টি-টোয়েন্টি দলই নয়। ঋত্বিকের দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে আরও পরিকল্পনা রয়েছে মেন্টরের। আগামী মরসুমে রঞ্জি ট্রফি দলকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য ভিশন ২০২০ প্রকল্পেও স্বেচ্ছায় যোগ দিতে চান অরুণ। দেখে নিতে চান উঠতি ক্রিকেটারদের। ‘‘বাংলায় ভাল ক্রিকেটারের অভাব নেই। শুধু মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এ বার ভিশন ২০২০ প্রকল্পে আমি নিজে গিয়ে দেখতে চাই। মেন্টর হিসেবে এটা আমাকে করতেই হবে,’’ বলছেন ‘ফাইটার লাল’।
কেনই বা খুশি হবেন না মেন্টর! তাঁর ক্রিকেট-দর্শনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলে চলেছে অনূর্ধ্ব-২৩ দল। রঞ্জি মরসুম শুরু হওয়ার আগে মেন্টর বলেছিলেন, দলের মধ্যে লড়াকু মানসিকতা দেখতে চান। মনোজ তিওয়ারির দল লড়াই করলেও ম্যাচের ফল তাঁদের সঙ্গ দেয়নি। কিন্তু অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ফলই তুলে ধরছে তাঁদের লড়াকু মানসিকতার উদাহরণ। গত আটটি ম্যাচের একটিতেও হারানো যায়নি সৌরাশিস লাহিড়ীর দলকে। গ্রুপ পর্বে টানা পাঁচটি ম্যাচ জিতেছেন ঋত্বিকেরা। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে পেয়েছে সাত পয়েন্ট। ইডেনে হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসেই ৬২০ রান করে বিপক্ষকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় সৌরাশিসের দল। জবাবে তৃতীয় দিনের শেষ পর্যন্ত হিমাচলের স্কোর ছিল ৩১৬-৪। চতুর্থ দিনের প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যেই ঋত্বিক, অনন্ত সাহা ও আকাশ দীপের ঝোড়ো স্পেল বিপক্ষকে আটকে দেয় ৪০৬ রানে। আকাশ দীপ নেন চার উইকেট। তিন উইকেট অলরাউন্ডার ঋত্বিকের। অনন্ত ও সূরজ জয়সওয়াল নেন একটি
করে উইকেট।
দলের পারফরম্যান্সে খুশি হলেও এখনই উৎসব চান না অধিনায়ক ঋত্বিক। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘‘সবে অর্ধেক কাজ শেষ হয়েছে। এ বারই শুরু আসল কাজ। বিদর্ভ ভাল দল। সেমিফাইনালে ওদের হারাতেই হবে।’’ কোচ সৌরাশিসেরও একই সূর। বললেন, ‘‘টেনশনে রবিবার ভোর ৪টেয় ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। মাঠেও দ্রুত চলে আসি। ছেলেদের বলেছিলাম, অতিরিক্ত কিছু না করতে। যা এত দিন করে এসেছ, সেটাই চালিয়ে যাও। ওরা যে কতটা সুশৃঙ্খল তা আবার প্রমাণ করে দিয়েছে।’’ আপ্লুত ওপেনার অভিমন্যু ঈশ্বরনও। বলে গেলেন, ‘‘সিনিয়র দল পারেনি তো কী হয়েছে। বাংলার এই দলের হয়েই ট্রফি জিততে চাই।’’