পর্যবেক্ষণ: বোলিং শক্তি যাচাই করছেন কোচ অরুণ। —নিজস্ব চিত্র
গত আট বছরে রঞ্জি ট্রফিতে বাংলার সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক অশোক ডিন্ডা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও তিনিই অন্যতম সেরা। কিন্তু এ বার বাংলার জার্সিতে তাঁকে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, কেন ডিন্ডার খেলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে? সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির দল থেকে বাদ পড়ার পরে সিএবি-তে এসে তিনি বলে গিয়েছিলেন, ‘‘আর বাংলার জার্সিতে আমাকে দেখা যাবে না।’’ যা নিয়ে তীবর বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেই সময়ে বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি আলোচনা না হলেও ডিন্ডা-বিতর্ক ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বাংলার রঞ্জি ট্রফি আভিযানের আগে।
বৃহস্পতিবার রাতে সিএবি সচিব অভিষেক ডালমিয়া অভিজ্ঞ পেসারকে ডেকে পাঠান। বাংলার জার্সিতে তাঁকে ফের মাঠে নামার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু শুক্রবার তিনি অনুশীলনে আসেননি। এমনকি তাঁর না আসার কারণ দলকে জানানোর প্রয়োজনও মনে করেননি।
আরও পড়ুন: ঈশানের দাপটে ফাইনালে বাংলা
ডিন্ডার এই আচরণে ক্ষুব্ধ সিএবি কর্তৃপক্ষ থেকে কোচ। যুগ্মসচিব দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘গতকাল ডিন্ডাকে অনুরোধ করা হয় রঞ্জি ট্রফিতে খেলার জন্য। এখন দেখার, ও কী সিদ্ধান্ত নেয়।’’ কোচ অরুণ লাল তো বলেই দিলেন, ‘‘যদি কেউ অনুশীলনে না আসে, তা হলে তাকে কিসের ভিত্তিতে দলে সুযোগ দেব? আর এক-দু’দিন দেখব, তার পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ যা নিয়ে ডিন্ডার পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘টি-টোয়েন্টি দল থেকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানতে পারিনি। সদুত্তর না পাওয়া পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেব না।’’
পরামর্শ: ব্যাটিং পরামর্শদাতা লক্ষ্মণের ক্লাসে অভিমন্যু। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সল্টলেক ক্যাম্পাসের মাঠে বাংলার পেসারকে ছাড়াই শুরু হয়ে গেল রঞ্জি ট্রফির প্রস্তুতি। বাংলার ব্যাটিং পরামর্শদাতা ভিভিএস লক্ষ্মণের প্রশিক্ষণে টেকনিক উন্নত করে তোলার কাজ করলেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, অভিমন্যু ঈশ্বরনেরা।
এ দিন দু’ভাগে অনুশীলন করানো হয় বাংলার ক্রিকেটারদের। শুরুতে নেটে ব্যাট করিয়ে দেখে নেওয়া হয়, কে কোন জায়গায় রয়েছেন। লাঞ্চের পরে দ্বিতীয় সেশনে শুরু হয় ভুল সংশোধনের ক্লাস।
লক্ষ্মণের সব চেয়ে বেশি নজর ছিল সুদীপের উপরে। বাংলার সহ-অধিনায়ক একেবারেই ছন্দে নেই। বিজয় হজারে ট্রফিতে চার নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে একটি হাফসেঞ্চুরিও করতে পারেননি। কোন জায়গায় সুদীপের সমস্যা হচ্ছে, তা জিজ্ঞাসা করেন লক্ষ্মণ। তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ‘‘শরীরের বাইরের বল খেলো না। শুধু বোলারের সোজাসুজি শট খেলার চেষ্টা করো।’’
অভিমন্যুর সঙ্গেও বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালেন লক্ষ্মণ। সীমিত ওভারের প্রতিযোগিতার পরে টেকনিকে কিছু পরিবর্তন দেখা গিয়েছে বাংলার অধিনায়কের। লক্ষ্মণ তাঁকে দ্বিতীয় স্লিপ অঞ্চল থেকে ব্যাট নামানোর নির্দেশ দিলেন। কী ভাবে বাউন্সারের সঙ্গে মোকাবিলা করা উচিত, তা নিয়েও এক ঘণ্টার বিশেষ ক্লাস করালেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। তার পরেই নেটে শুরু হল বল ছাড়ার মহড়া। লক্ষ্মণ নিজেও বল ছুড়ে দেখে নিলেন, বাউন্সারের বিরুদ্ধে কাদের সব চেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে।