বেলজিয়ামের আসল চেহারা এ বার বোধহয় বোঝা গেল

ইউরোয় শক্তিশালী টিমগুলোর কোচেদের একটা স্ট্র্যাটেজি আমাকে বেশ মজা দিচ্ছে। যেটা শনিবার করলেন বেলজিয়ামের মার্ক উইলমটস। প্রথমার্ধে বিপক্ষকে দেখে নাও, দ্বিতীয়ার্ধে গুঁড়িয়ে দাও।

Advertisement

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৬ ০৯:২৬
Share:

বেলজিয়ামের নায়ক লুকাকু। শনিবার বোর্দোয়।

বেলজিয়াম-৩ (লুকাকু-২, উইটসেল)

Advertisement

আয়ারল্যান্ড-০

ইউরোয় শক্তিশালী টিমগুলোর কোচেদের একটা স্ট্র্যাটেজি আমাকে বেশ মজা দিচ্ছে। যেটা শনিবার করলেন বেলজিয়ামের মার্ক উইলমটস। প্রথমার্ধে বিপক্ষকে দেখে নাও, দ্বিতীয়ার্ধে গুঁড়িয়ে দাও।

Advertisement

স্পেন, ইতালি, ইংল্যান্ডও এ বার এই অঙ্কে খেলে বাজিমাত করেছে। একজন ফুটবল কোচ হিসেবে এটা আমারও অপছন্দের নয়। কারণ, আমার হাতে যদি বেশ কয়েকটা এ কে ৪৭ থাকে, থাকে যুদ্ধে জেতার নিশ্চিত আত্মবিশ্বাস, তা হলে শত্রুকে প্রথমে মেপে নিতে দোষ কোথায়?

ইউরোতে কাপ ফেভারিটদের যে তালিকা বিশেষজ্ঞরা তৈরি করেছেন তাতে হ্যাজার্ড-লুকাকুদের দল উপরের দিকেই আছে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে ইতালির কাছে বেলজিয়াম হেরে যাওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল, দলটা লম্বা রেসের ঘোড়া নয়। ওদের দ্বিতীয় ম্যাচের পর স্বীকার করছি, ভুল ভেবেছিলাম। শনিবার ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের দু’নম্বর, ইউরোপের এক নম্বর দলের খেলা দেখে আমার ধারণা বদলে গিয়েছে। এরা টুর্নামেন্টে অনেকের ঘুম কাড়বে।

রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড দলটা খুব খারাপ বলব না। তবে অভিজ্ঞতার অভাব আছে। শেষ মিনিট পর্যন্ত ‘লড়কে লেঙ্গে’ মনোভাব নেই। সেখাতেই মার খেয়ে গেল ওরা এ দিন। বেলজিয়াম টিমটাকে বলা হচ্ছে ‘গোল্ডেন ব্রিগেড’। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে বিশ্বের অন্যতম সেরা তরুণ ফুটবলারদের সম্ভার সাজানো। চেলসির কুর্তোয়া হ্যাজার্ড, ম্যাঞ্চেস্টার সিটির দে’ব্রায়ান, এভার্টনের লুকাকু—সব অতিপরিচিত নাম। তাদের কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটা পেলাম অবশ্য ম্যাচের মোটামুটি শেষের দিকে।

স্পেনের মতো অত বেশি পাস খেলা নেই। বিশেষ স্কোয়ার পাস নেই। তিন-চারটে পাস এবং সব ক’টা পজিটিভ। ডিরেক্ট পাস। আক্রমণে ওঠার সময় গতি বাড়িয়ে নেওয়া। অ্যাটাকিং থার্ডে চিতার মতো হঠাৎ প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিহ্বল করে দিয়ে গোলের মুখ খুলে ফেলা। টিভিতে দেখতে দারুণ লাগল আমার। আর এ ভাবেই বেলজিয়ামের তিন গোল। যার মধ্যে লুকাকুর প্রথম গোলটা দুর্দান্ত। দে’ব্রায়ানের বাড়ানোর বল লুকাকু ধরার পর সামনে অনেক বাধা ছিল। দু’জন ডিফেন্ডার, গোল পোস্ট প্রায় সতেরো গজ দূরে— কোনও কিছুই কিন্তু বাধা হয়নি লুকাকুর। প্লেসিংটা এত ভাল ছিল যে, বাঁচানো সম্ভব ছিল না আইরিশ কিপার র‌্যান্ডলফের। লুকাকুর শেষ গোলটাও তো অনেকটা একই রকম।

৪-২-৩-১ ফর্মেশনে দল নামিয়েছিলেন উইলমটস। কিন্তু সেটা দ্বিতীয়ার্ধে যখন আয়ারল্যান্ডকে ঝাপ্টা দিতে শুরু করল, বদলে হয়ে যাচ্ছিল ৪-২-৪। প্রথম ম্যাচ হারার পর গ্রুপ অব ডেথ থেকে পরের রাউন্ডে উঠতে এ দিন যেন আরও বেশি করে মরিয়া দেখাল বেলজিয়ামকে। ওদের মাঝমাঠ যেন রাজধানী এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। একবার গরম হয়ে ছুটতে শুরু করলে আটকায় কে? দে’ব্রায়ান, উইটসেলদের সামনে তাই আয়ারল্যান্ড পায়ের জঙ্গল তৈরি করেও লাভ হয়নি।

হ্যাজার্ডরা একটা বার্তা অবশ্যই এ দিনের ম্যাচের মাধ্যমে ইউরোপকে দিয়ে গেল— বেলজিয়াম টুর্নামেন্টে অনেক দূর যাবে।

ছবি: এএফপি।


ড্র আইসল্যান্ডের

রূপকথার জয় আটকে আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল হাঙ্গেরি। শনিবার গ্রুপ ম্যাচে প্রথমে পেনাল্টি থেকে গোল করে আইসল্যান্ডকে ১-০ এগিয়ে দেন গিলফি সিগার্ডসন। ম্যাচের শেষের দিকে সেইভারসনের আত্মঘাতী গোলে ১-১ হয়। ইনজুরি টাইমে ফ্রি-কিকের সুযোগ পেলেও ওয়ালে মেরে নষ্ট করেন সিগার্ডসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement