দ্বৈরথ: মোহনবাগানের ভরসা বেইতিয়া। ইস্টবেঙ্গলের মেরা। নিজস্ব চিত্র
দু’জনেই ফুটবলার জীবনের প্রথম গুরু মানেন তাঁদের বাবাকে। স্পেনে থাকার সময়ে দু’জনে এক মরসুম এক সঙ্গে খেলেছেন রেসিং ফেরল ক্লাবে। রবিবার সেই দুই বন্ধু জোসেবা বেইতিয়া ও খুয়ান মেরা গঞ্জালেস ডার্বিতে নামবেন মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে।
যে মহারণের আগে ইস্টবেঙ্গলের ২৩ নম্বর জার্সিধারী খুয়ান মেরা আত্মবিশ্বাসী বাবা আন্তোনিয়ো মেরা ডার্বি দেখতে স্পেন থেকে কলকাতায় উড়ে আসায়। যে কথা জানিয়ে খুয়ান বললেন, ‘‘রবিবার আমার কাছে বিশেষ একটা দিন। ছোটবেলার ফুটবল গুরু গ্যালারিতে বসে ম্যাচ দেখবেন ভেবে বাড়তি প্রেরণা পাচ্ছি। চাই গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে জিতিয়ে বাড়ি ফিরে বাবার সঙ্গে উৎসব করতে।’’ যোগ করেন, ‘‘জোসেবা আমার সঙ্গে এক মরসুম স্পেনের ক্লাবে খেলেছে। কিন্তু মাঠে নব্বই মিনিট আমরা বন্ধু নই।’’
মোহনবাগানের ১০ নম্বর ফুটবলার বেইতিয়া শনিবার বিকেলে অনুশীলন করে বেরোনোর মুখে বলে গেলেন, ‘‘বাবা স্পেনে বসেই কলকাতা ডার্বিতে নজর রাখবেন। ম্যাচটা জিততে সেরা ফুটবলটা খেলতে হবে। কলকাতা লিগ ডার্বিতে জয় আসেনি। এ বার আমাদের জিততেই হবে।’’
সম্মানের এই দ্বৈরথে জয়ের জন্য মোহনবাগান শিবির যেমন তাকিয়ে বেইতিয়ার দিকে, লাল-হলুদ শিবিরের ভরসা খুয়ান মেরা। দুই প্রধানের সমর্থকেরাও বিশ্বাসী, আজ রবিবার আই লিগের ডার্বিতে তারকা হতে পারেন এই দুই স্পেনীয় ফুটবলার।
কোচ কিবু ভিকুনার দলের মাঝমাঠের প্রধান অস্ত্র বেইতিয়া। তিনি খেললেই মোহনবাগান সচল হয়ে ওঠে। সেট পিসের সময় রিয়াল সোসিদাদ ‘বি’ দলে খেলে আসা বেইতিয়ার কর্নার বা ফ্রি-কিক থেকেই খুলে যায় গোলের দরজা। বেইতিয়ার বড় অস্ত্র বলের উপরে দখল। ছোট, বড় পাস বাড়িয়ে খেলা তৈরি করার আসল কারিগর তিনিই। বল পায়ে না থাকলে দৌড়ে ফাঁকা জায়গাও তৈরি করে ফেলেন। রয়েছে দু’তিন জনকে ড্রিবল করে বেরিয়ে যাওয়ার ক্ষমতাও। এ দিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ইস্টবেঙ্গল তো আপনাকে কড়া নজরে রাখবে। যা শুনে গাড়িতে ওঠার আগে বেইতিয়া বলে গেলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই বিপক্ষ দল তো সেটাই করে এসেছে। নজর এড়িয়ে কী ভাবে খেলতে হয় তা জানি। কাল একটা অন্য খেলা অপেক্ষা করছে।’’
খুয়ান মেরা এমনিতে বাঁ প্রান্তে খেললেও মাঝেমধ্যেই খাইমে সান্তোস কোলাদোর সঙ্গে প্রান্ত বদল করে বিপক্ষ রক্ষণকে ধাঁধায় ফেলেন। পাশাপাশি কাট করে ভিতরে ঢুকে গোলের দিকে ধেয়ে এসে বড় শট মারারও প্রবণতা রয়েছে এই স্পেনীয় ফুটবলারের। চকিতে ঘুরে বল নিয়ে গতিতে বেরিয়ে যেতে পারেন। জোরালো শট রয়েছে। বল পায়ে ইনসাইড ও আউটসাইড, দু’দিক দিয়েই যেতে পারেন। সঙ্গে বিষাক্ত সব ক্রস ভাসিয়ে দিতে দক্ষ বিপক্ষ রক্ষণে।
ইটালির প্রাক্তন জাতীয় ফুটবলার ফ্রান্সিসকো তোত্তির ভক্ত বলছেন, ‘‘আগের ম্যাচে কী হয়েছে ভুলে যান। ডার্বিতে অন্য উদ্যমে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। সমর্থকেরাও পাশে রয়েছেন।’’ যোগ করলেন, ‘‘চূড়ান্ত ক্লাসে কোচ যা বুঝিয়ে দেবেন, সেই ছকেই সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে হবে আমাদের। আই লিগে দু’গোল করেছি। ডার্বিতে ভাগ্য ভাল থাকলে গোলের সংখ্যা বাড়তেই পারে। তবে তার চেয়েও
গুরুত্বপূর্ণ দলের জয়।’’