আইসিসিকে বার্তা বোর্ডের, এখনই পাক-বয়কট নয়

তবে নজিরবিহীন ভাবে আইসিসি-তে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। শুক্রবার রাজধানীতে বৈঠক করেন শীর্ষ কর্তারা। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের প্রধান বিনোদ রাই এবং অন্যতম সদস্য প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার ডায়ানা এডুলজি উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫২
Share:

সতর্ক: ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে সাবধানি বিনোদ রাইরা। নিজস্ব চিত্র

বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিরাট কোহালিরা খেলবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিজেদের কোর্টে রাখল না ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। জানিয়ে দিল যে, এ ব্যাপারে যা বলার সরকারই বলবে। সরকারের পক্ষ থেকে যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা মেনে চলবে ক্রিকেট বোর্ড।

Advertisement

তবে নজিরবিহীন ভাবে আইসিসি-তে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। শুক্রবার রাজধানীতে বৈঠক করেন শীর্ষ কর্তারা। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্সের প্রধান বিনোদ রাই এবং অন্যতম সদস্য প্রাক্তন মহিলা ক্রিকেটার ডায়ানা এডুলজি উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবারই দেশের সর্বোচ্চ আদালত সিওএ-র তৃতীয় সদস্য হিসেবে নিয়োগ করেছে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফ্টেন্যান্ট জেনারেল রবি থোড়গেকে। পাকিস্তান বয়কটের ডাকের মধ্যে কার্গিল যুদ্ধে জড়িত থাকা থোড়গের নিযোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার ব্যাপারটি আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেই খবর।

বোর্ডের সিইও রাহুল জোহরি অবশ্য আইসিসি-কে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাতে ভারতীয় বোর্ড দাবি তুলেছে, ‘‘পুলওয়ামার জঙ্গি হানার মতো ঘৃণ্য আক্রমণের নিন্দা করেছে আইসিসি-র সব সদস্য দেশ। সন্ত্রাসবাদকে যে দেশ প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাতে আইসিসি-র উচিত তাদের সঙ্গে সব রকম সম্পর্ক ছিন্ন করা।’’ পাকিস্তানের নাম না করলেও ভারতীয় বোর্ড বুঝিয়ে দিয়েছে, ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার উচিত তাদের বহিষ্কার করা। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় বোর্ড আসন্ন বিশ্বকাপে ক্রিকেটার এবং সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন। আশা করা যায়, আইসিসি এবং ইসিবি ক্রিকেটার, ম্যাচ আধিকারিক এবং সমর্থকদের কঠোরতম নিরাপত্তা দেবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পাকিস্তানকে আসতে না দিয়ে চাপে ভারত

শুক্রবার রাত পর্যন্ত ভারতীয় বোর্ডের এমন চিঠি নিয়ে আইসিসি-র তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। এই মুহূর্তে আইসিসি প্রধানও এক জন ভারতীয়, শশাঙ্ক মনোহর। প্রশ্ন উঠছে, ভারতীয় বোর্ডের এমন চিঠি নিয়ে আইসিসি কোনও পদক্ষেপ করতে পারে কি না। প্রথা অনুযায়ী, আইসিসি তাদের পরবর্তী বৈঠকে এই চিঠির প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে পারে। নিয়ামক সংস্থায় অতীতের মতো প্রভাব যদি ভারতীয় বোর্ডের থাকত, তা হলে হয়তো বৈঠকে অন্যদের সমর্থন আদায় করে নিয়ে নিজেদের দাবিকে জোরাল ভাবে পেশ করতে পারত তারা। এখন কোহালিরা বিশ্ব ক্রিকেট বাণিজ্যে এক নম্বর হলেও কর্তাদের সেই ক্ষমতা আর নেই। সাম্প্রতিক অতীতেই দু’বার ভোটাভুটি হয়েছে। দু’বারই হেরেছে ভারতীয় বোর্ড। তাই পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ডাক দিলেও ভারতীয় কর্তারা কতটা কী করতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে শুটিং বিশ্বকাপ দুই পাক প্রতিযোগীকে আসতে না দিয়ে যখন পাল্টা বিপাকে পড়ে গিয়েছে ভারতই।

আরও পড়ুন: উদ্বোধন বাতিল করে সাহায্য সেনা-পরিবারকে

বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়ার কথা ম্যাঞ্চেস্টারে ১৬ জুন। সেই প্রসঙ্গ তুলে সিওএ চেয়ারম্যান বিনোদ রাই সভার পরে বলে দেন, ‘‘১৬ জুনের এখনও অনেক দেরি রয়েছে। তাই ওই ম্যাচ নিয়ে পরেও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব আমরা।’’ আইসিসি-কে পাঠানো চিঠি নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গি হানা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কথা প্রকাশ করে চিঠি দিয়েছি। তাতে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে।’’

ওয়াকিবহাল মহলের মত হচ্ছে, এ ভাবে কোনও একটি দেশকে সরাসরি দায়ী করে খেলার নিয়ামক সংস্থায় চিঠি পাঠানো নিয়মের বাইরে এবং প্রথাবিরুদ্ধ। সেই কারণেই পাকিস্তানের নাম করা হয়নি চিঠিতে। পুলওয়ামার জঙ্গি হানার কথা তুলে নিন্দা করা হলেও বিশ্বকাপের সময় ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার প্রসঙ্গের আড়ালে তা করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement