বেসবল চ্যাম্পিয়ন জন জের সঙ্গে ধোনি। মার্কিন মুলুকে ক্রিকেটের পাশাপাশি বেসবল তারকার সঙ্গেও সময় কাটান ধোনিরা। ছবি: টুইটার।
শেষ পর্যন্ত ডিআরএস-এ সম্মতি দেওয়ার ইঙ্গিত দিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এত দিন যা এ দেশের ক্রিকেটে ছিল ব্রাত্য, সেই ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস অদূর ভবিষ্যতে শর্তসাপেক্ষে ব্যবহারের ইঙ্গিত দিলেন বোর্ড প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর। শর্তটা হল, এলবিডব্লিউ-র সিদ্ধান্তে হক আই ব্যবহার করা যাবে না। কারণ, এই প্রযুক্তি নিখুঁত নয় বলে যুক্তি বিসিসিআই-এর।
হক আই প্রযুক্তি নিয়ে আপত্তির কথা অবশ্য আগেও জানিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। তবে ডিআরএস নিয়ে ইতিবাচক মন্তব্য এই প্রথম, যা বোর্ডপ্রধান করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে। সম্প্রতি আইসিসি বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এক বিশেষজ্ঞ দলকে ডিআরএস নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই গবেষণার রিপোর্ট সম্প্রতি আইসিসি-কে দিয়েছেন তাঁরা। আর ভারতীয় দলের কোচ অনিল কুম্বলে যেহেতু আইসিসি-র ক্রিকেট কমিটিরও প্রধান, তাই সেই রিপোর্ট তিনিও পেয়েছেন। কুম্বলের পরামর্শেই এই অবস্থানে পৌঁছেছে বোর্ড।
অনুরাগ ঠাকুরের বক্তব্য, ‘‘হক আই প্রযুক্তি একশো শতাংশ নিখুঁত কি না, সেই প্রশ্ন আমি আগেও তুলেছিলাম। মার্কিন বিশেষজ্ঞরাই যখন এই ব্যাপারে নিশ্চিত নন, তখন আমাদেরও কিছু বলার নেই। যে প্রযুক্তি একশো শতাংশ নিখুঁত নয়, সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না কি?’’ অদূর ভবিষ্যতে যে দেশের মাঠে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডিআরএস ব্যবহার করা হতে পারে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আংশিক ভাবে ডিআরএস ব্যবহার করতে পারি। তবে এলবিডব্লিউ-এর সিদ্ধান্ত এর মাধ্যমে নেওয়া যাবে না। হক আই-কে বাইরে রেখেই এটা করতে হবে। দেখা যাক, আইসিসি সম্মতি দেয় কি না।’’
আইসিসি-র সঙ্গে যে ভারতীয় বোর্ডের সম্পর্ক খুব ভাল জায়গায় রয়েছে, বোর্ডের সাম্প্রতিক কিছু বিবৃতিতে তা মনে হচ্ছে না। শশাঙ্ক মনোহর ভারতীয় বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে আইসিসি-র প্রধান পদে বসার পর থেকে যেন তিক্ততা আরও বেড়েছে। আইসিসি-র বেশ কিছু প্রস্তাবেই সম্প্রতি আপত্তি জানিয়েছে বিসিসিআই। প্রস্তাবিত দ্বিস্তরীয় টেস্ট নিয়ে আপত্তির কথা আগেই জানিয়েছে বোর্ড। এ বার আইসিসি-র টেস্ট ক্রিকেটকে চার দিনের করার ভাবনাতেও যে সায় নেই বোর্ডের, তাও জানিয়ে দিলেন বোর্ড প্রধান। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে তিনি বলেন, ‘‘একটা নিখুঁত পরিকল্পনা সামনে না রেখে এগনোর কোনও মানে হয় না। আমরা এ সবের মধ্যে নেই। সমস্যাটা যখন মাঠে দর্শক কমে যাওয়া নিয়ে, তখন আরও দর্শক কী করে আনা যায়, তা নিয়ে ভাবাই ভাল।’’
আগামী এক বছরে ভারতের মাটিতে ১৪টা টেস্ট হওয়ার কথা। সেগুলোতে দর্শক আনা ভারতীয় বোর্ডের কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য খেলা দেখা ছাড়াও দর্শকদের জন্য আরও কিছু বিনোদনের প্যাকেজ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে বোর্ড। সে জন্য প্রতিটি আয়োজক সংস্থাকে তারা ৬০ লাখ টাকা করে দেবে বলে জানিয়েছে।