তামিম ইকবাল। -ফাইল চিত্র।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনটি স্বস্তিতে কাটল বাংলাদেশের। প্রকৃতির প্রতিকূলতা আর বাস্তবতার বাধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ হল। ওয়েলিংটনের আকাশের মুখ ভারই ছিল সকাল থেকে। বৃষ্টিও বাধ সাধল বার কয়েক। তবু বেসিন রিজার্ভের ২২ গজে আলো ছড়ালেন তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হক।
বৃষ্টির দাপটে সারাদিনে খেলা হয়েছে মাত্র ৪০.২ ওভার। এই অল্প সময়ে অসাধারণ কিছু করার সুযোগ ছিল না বরং খারাপেরই আশঙ্কা ছিল বেশি। কিন্তু সেই শঙ্কাকে দূরে ঠেলে জ্বলে উঠল তামিম ও মুমিনুলের ব্যাট।
প্রথম দিনের শেষে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিং করতে এসে ১৫৪/৩এ থামতে হয় বাংলাদেশকে। ১১৯ রান তোলার পর বৃষ্টিতে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকে খেলা। এরপর খেলা শুরু হলেও বেশিক্ষণ চলেনি। বেসিন রিজার্ভে আগের চার ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১৪৩!
দিনটা আরও ভাল হতে পারত, যদি মুহূর্তের অসর্তকতায় নিজের উইকেট উপহার না দিয়ে আসতেন মাহমুদুল্লাহ। তবে আরও খারাপও হতে পারত, যদি খেলা শেষের খানিক আগে সাকিব আল হাসানের ক্যাচ নিতে পারতেন মিচেল সাঁতনার। প্রথম দিনের শেষে ক্রিজে রয়েছেন মুমিনুল ও সাকিব। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল বাংলাদেশ। যেটা হয়তো ভাবেনি কিউইরা। বিশ্বের অ্যনতম সেরা পেস জুটি টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি চারের বেশি।
কন্ডিশনের কারণে টস জয়টা খুব করে চাইছিল বাংলাদেশ। তামিম অবশ্য শুরু থেকেই মনোভাব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। ম্যাচের তৃতীয় বলেই চালিয়ে দেন বাইরের বলে। স্লিপ কর্ডনের ওপর দিয়ে চার। বোল্টের পরের ওভারে আবার কানায় লেগে বাউন্ডারি। পরের বলেই দারুণ এক কাট শট, এবার মাঝব্যাটে চার।
আরও খবর: মাশরাফির বিকল্প খুঁজছে বিসিবি
ইমরুল কায়েস ফেরেন বাজে এক শটে। তবে তামিমের ব্যাটিংয়ের ধরণে প্রভাব ফেলেনি তা এতটুকুও। সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন বোল্টকে। বল ফেলার জায়গাই দিচ্ছিলেন না। বাংলাদেশের রান যখন ৫০, তামিমেরই তখন ৪৯। সাউদিকে কভার ড্রাইভে তিন রান নিয়ে ৪৮ বলে অর্ধশত রান করে ফেললেন তামিম। তার মধ্যে ছিল ১০টি বাউন্ডারি। ৫৬ রান করে বোল্টের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন তিনি। ততক্ষণে প্রতিপক্ষকে বার্তা দিয়ে দিয়েছেন।
এ বার পালা ছিল মুমিনুলের। তামিম ফিরতেই হাল ধরেন তিনি।
২৯ ওভার পর বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে তিন ঘণ্টা। দিনের খেলা শেষের আয়োজন যখন চলছে, তখনই আবার শুরু। মাহমুদুল্লাহর বিদায়ের ঘণ্টাও যেন বাজল তখনই। ওয়াগনারের ফাঁদে পা দিয়ে মাহমুদুল্লাহর হতাশাজনক বিদায়ে ভাঙল ৮৫ রানের জুটি। তাঁর ব্যাক্তিগত সংগ্রহ ২৬। এর পরই ওয়াগানারের বলেই মিড উইকেটে সাকিবের ক্যাচ ফেলেন সাঁতনার। এই সবের মধ্যেই ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে ভরসা দিয়ে যাচ্ছেন ৬৪ রানে অপরাজিত মুমিনুল। দিন শেষে তামিম ইকবাল বললেন, ‘‘প্রথম দিনের পারফরম্যান্সে দল যথেষ্টই খুশি।
তবে অতীত আর এবারেরই ওয়ানডে, টি২০-র অভিজ্ঞতা বলছে, এই খুশি মিলিয়ে যেতে পারে মুহূর্তেই। বাংলাদেশের ব্যাটিংও তো ওয়েলিংটনের আবহাওয়ার মতোই। এই ভাল, এই খারাপ।’’