বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মোর্তাজা। -সংগৃহিত।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে তিন ফর্ম্যাটের ক্রিকেট মিলে ন’হাজারি ক্লাবের সদস্যপদ পেয়েছেন বাঁ হাতি ওপেনার তামিম ইকবাল। একই ম্যাচে সব ফর্ম্যাটের ক্রিকেটে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে অনন্য রেকর্ড করে ফেলেছেন সাকিব আল হাসান। আর মাত্র ৩৫ রান করলেই এক ভেন্যুতে সর্বাধিক রানের রেকর্ডও করে ফেলবেন সাকিব। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রিকি পন্টিংয়ের গড়া রেকর্ড (৩৪৬৭রান) ভেঙ্গে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে নিজের সাফল্যকে উপরে তুলে আনবেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের আর একটি মাইলস্টোনের সিরিজে ওয়ানডে ম্যাচ জয়ের সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দল। আজ শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে আফগানদের হারাতে পারলেই ওয়ানডে জয়ের সেঞ্চুরি পূর্ন হবে বাংলাদেশের। সঙ্গত কারণেই আজ দেশের হয়ে ৩১৪তম ওয়ানডে ম্যাচে টস করতে নামবেন যখন মাশরাফি, তখন একটু শিহরিত হওয়ারই কথা তার। অধিনায়কত্বের কেরিয়ারে এমন একটি অধ্যায় রচনার সামনে দাঁড়িয়ে মাশরাফি গর্বিত। ‘‘কেউ না কেউ তো এমন রেকর্ডের সামনে থাকতই। বাংলাদেশের জন্য বড় প্রাপ্তি হবে। চেষ্টা করব দ্বিতীয় ম্যাচেই যেন সেঞ্চুরি উপহার দিতে পারি। তবে তার জন্য আমাদেরকে
ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে।’’
ওয়ান ডে ক্রিকেটে এখনও বাংলাদেশের সফল অধিনায়ক হাবিবুল বাশার সুমন। তাঁর অধিনায়কত্বে ৬৯ ম্যাচে ২৯ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জয়হীন থাকা ৪৭ ম্যাচের বন্ধাত্ম ঘুঁচেছে তার আমলেই। ২০০৫ সালে জিম্বাবোয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ান ডে সিরিজ জয়টাও তাঁর আমলেই। সর্বাধিক সাতটি ওয়ান ডে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ক্যাপ্টেনসি কেরিয়ারে অভিষেক ওয়ান ডে ম্যাচ এবং অভিষেক সিরিজের ট্রফি দুটোই বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক সাকিব ৪৯ ম্যাচে ২৪ জয়ে এখনও মাশরাফির উপরে রয়েছেন। তবে সাফল্যে খতিয়ান দেখলে বাংলাদেশের ১৩টি ওয়ান ডে অধিনায়কের কেউ মাশরাফির ধারে-কাছে নেই। অধিনায়ক মাশরাফি ২৯ ম্যাচে ২১ জয় নিয়ে গড় ৭২.৪১ শতাংশ! ওয়ান ডে ক্রিকেটে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দলের শুরুটা তাঁর অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়ার দ্বিতীয় অধ্যায় থেকেই। ডিফেন্সিভ অধিনায়ক বলেই সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে মুশফিকুরকে সরিয়ে মাশরাফির হাতে অধিনায়কত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর থেকে প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যাওয়া সাফল্য দেখেছে বাংলাদেশ দল।২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট বাংলাদেশ দল। একই বছরে পাকিস্তানকে ৩-০তে হোয়াইট ওয়াশ ছাড়াও ভারত, দক্ষিন আফ্রিকার মতো ক্রিকেট খেলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।অধিনায়কত্বের ২২ মাসের মধ্যে ঘরের মাঠে টানা পাঁচটি সিরিজের সব ক’টি ট্রফি জয়ে অতীতের সব অধিনায়ককে ছাঁপিয়ে রেকর্ডটা ইতিমধ্যেই করে ফেলেছেন। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ১৮ ম্যাচে ১৬টি জয়। বাংলাদেশ এখন প্রতিপক্ষদের কাছে আতঙ্কের নাম। মাশরাফির অধিনায়কত্বের অধ্যায়ে ভারতের কাছে একটি এবং দক্ষিন আফ্রিকার কাছে একটি ম্যাচ বাদ দিলে অবশিষ্ট সব ক’টিতে যে সাফল্যের হাসি হেসেছে বাংলাদেশ দল। ওয়ানডে সিরিজে টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয়ে চোখ এখন নড়াইলকঠিন হয়ে যাওয়া প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে সাত রানে হারিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচেই সিরিজের ট্রফি নিশ্চিত করতে চান মাশরাফি, ‘‘দ্বিতীয় ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচটি জিততে পারলে সিরিজটা নিশ্চিত হয়ে যাবে।’’ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচ জিততে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২৩তম ম্যাচ পর্যন্ত। ভারতের হায়দারাবাদের লাল বাহাদুর শাস্ত্রী স্টেডিয়ামে কেনিয়ার বিপক্ষে সেই জয়ে বাংলাদেশকে এক যুগ প্রতীক্ষা করতে হয়েছে! প্রথম ১০০ ম্যাচে জয় মাত্র ৬টি, দ্বিতীয় ১০০ ম্যাচে জয়ের সমষ্টি সেখানে ৪০, তৃতীয় ১০০ ম্যাচে ৪২টিতে করেছে উৎসব বাংলাদেশ। ৩০০তম ওয়ান ডে ম্যাচে ধোনির নেতৃত্বে শততম জয়ের সাক্ষী মাশরাফি। এমন এক অধিনায়কের হাত ধরে দেশের শততম জয় দেখতেই যে মুখিয়ে আছে দেশবাসী।
আরও খবর
অনন্য রেকর্ডেও আক্ষেপ সাকিবের