দিলীপ বেঙ্গসরকর
দুরন্ত ইয়র্কারে স্টাম্প ছিটকে দিলেন যশপ্রীত বুমরা। দৌড়ে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন বিরাট কোহালি এবং বাকি সতীর্থেরা। চলল ‘হাই ফাইভ’, আলিঙ্গনের মাধ্যমে উৎসব পালন। কিন্তু করোনার মতো ছোঁয়াচে সংক্রমণের মাত্রা কমার পরে ক্রিকেট যখন শুরু হবে, তখন কি এ ধরনের উৎসবের ভঙ্গি দেখতে পাবেন সমর্থকেরা? প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকর বেশ চিন্তিত। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলা দলের কোচ অরুণ লাল ও প্রাক্তন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও।
ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে থুতু ব্যবহার করে বল পালিশ করার পদ্ধতি নিয়ে। আনন্দবাজারে একান্ত সাক্ষাৎকারে মহম্মদ শামি জানিয়েছিলেন, থুতু লাগিয়ে পালিশ করার পদ্ধতি বদলানো হতে পারে। এমনকি বেঙ্কটেশ প্রসাদ, প্রবীণ কুমার, জেসন গিলেসপিরাও থুতু দিয়ে বল পালিশ করার পদ্ধতি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এ বার উৎসবের ভঙ্গি নিয়েও বাড়ছে উদ্বেগ।
আনন্দবাজারকে ফোনে বেঙ্গসরকর বলছিলেন, “মনে হয়, করোনাভাইরাস যত দিন থাকবে, তত দিন কোনও পর্যায়ের ক্রিকেটই শুরু হবে না। শুরু করা উচিতও না। এ বছর সব ধরনের প্রতিযোগিতা বন্ধ রাখাই ভাল।” যোগ করেন, “কিন্তু মাঠে তো ক্রিকেটারদের ফিরতেই হবে। তখন বেশ কিছু বদল দেখতে পাওয়া যেতে পারে। যেমন থুতু দিয়ে বল পালিশ করা নিয়ে এখন থেকেই ধন্দ দেখা দিয়েছে। থুতুর ব্যবহার সত্যি সমস্যা তৈরি করতে পারে। তেমনই উৎসবের ভঙ্গিতেও পরিবর্তন দেখা যেতে পারে।” কেন? বেঙ্গসরকরের উত্তর, “ভাইরাস দমন করা গেলেও একটা ভয় প্রত্যেকের মধ্যেই কাজ করবে। যে-হেতু এই সংক্রমণ খুবই ছোঁয়াচে, তাই মাঠে আলিঙ্গন ও হাই ফাইভের মাধ্যমে উৎসব দেখা যাবে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।” তা হলে এর বিকল্প কী? বেঙ্গসরকরের প্রস্তাব, “প্রত্যেকে নিজেদের উৎসবের ভঙ্গী ভেবে রাখতে পারে। অন্যকে ছোঁয়া ছাড়া কী ভাবে উৎসব করা যায়, তা ভেবে দেখতে হবে।”
প্রাক্তন ভারতীয় ব্যাটসম্যান ও বাংলার কোচ অরুণ লালও বেশ চিন্তিত। বলছিলেন, “ম্যাচের মধ্যে এ ধরনের সচেতনতা বজায় রাখা বেশ কঠিন। উত্তেজক মুহূর্তে এইসব মাথায় রাখা যায় না। কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তা বেশ চিন্তায় ফেলেছে। আশ্চর্য হব না, যদি কাউকে মুখাবরণ পরে ব্যাট করতে দেখি। ছোঁয়াচে ভাইরাসের ভয়টা তো থেকে যাবে। কিন্তু সচেতন হয়েই এগোতে হবে আমাদের। যতটা কম অন্যকে ছোঁয়া যায়, ততই ভাল। প্রয়োজনে উৎসবের ভঙ্গিও বদলানো হবে। থুতু দিয়ে বল পালিশ করার অভ্যাস তো পাল্টাতেই হবে।”
প্রাক্তন বাংলা অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি বলেই দিলেন, এ বিষয়ে সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনাও করবেন তিনি। মনোজের কথায়, “সবাই দেখতে পাচ্ছে এই সংক্রমণ কতটা ভয়ঙ্কর। ক্রিকেটারেরা তো সমাজের বাইরে নয়। সংক্রমণ এড়ানোর জন্য সব ধরনের সচেতনতা মানতে হবে।” আরও বলেন, “উৎসবের ভঙ্গি বদলানোর বিষয়টা নিয়ে আগেও ভেবেছি। আগের মতো আলিঙ্গন করার আগে সবাই দু’বার ভাববে।” কিন্তু তাতে দলীয় বোঝাপড়ায় চিড় ধরবে না তো? “কেন চিড় ধরবে? দলের প্রত্যেকের সঙ্গে আলোচনা করেই উৎসবের ভঙ্গি পরিবর্তনের প্রস্তাব উঠবে। সেখান থেকেই বেরিয়ে আসবে একাধিক উপায়,” বলছেন তিনি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)