প্রতিবাদী: ফেডারেশনের ট্রায়াল নিয়ে প্রশ্ন বজরং পুনিয়ার। ছবি: পিটিআই।
ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন আয়োজিত জাতীয় ট্রায়ালে অংশগ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী কুস্তিগির বজরং পুনিয়া। শুধুমাত্র অংশগ্রহণ না করাই নয়, আগামী ১০ ও ১১ মার্চ দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ট্রায়ালের স্থগিতাদেশের জন্য দিল্লি হাইকোর্টে যৌথ পিটিশন দায়ের করা হয়েছে তাঁর তরফে।যদিও বজরং পিটিশন দাখিল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের বিশ্বস্ত সূত্র মারফত এও জানা গিয়েছে বুধবারই বজরং, বিনেশ ফোগত, সাক্ষী মালিক এবং তাঁর স্বামী সত্যার্থ কাদিয়ান আদালতে গিয়েছিলেন এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী শুক্রবার। এপ্রিল মাসে কিরগিজস্তানে বসবে এশিয়ান কুস্তি চ্যাম্পিয়নশিপের আসর। সেখান থেকে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করা যাবে। ট্রায়ালের মাধ্যমে কুস্তিগিরদের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য বাছাই করা হবে।
রাশিয়া থেকে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বজরং জানিয়েছেন তিনি শেষ দু’মাস ধরে অনুশীলনে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এই ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করবেন না, যদি সঞ্জয় সিংয়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন এর আয়োজন করে। তার সঙ্গেই ভারত সরকারের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বজরং। তাঁর কথায়, “আমি ট্রায়ালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলে আমার প্রশিক্ষণের পেছনে নিশ্চয়ই ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করতাম না। কিন্তু বুঝতে পারছি না কী ভাবে নির্বাসনে থাকা কুস্তি ফেডারেশন ট্রায়াল পরিচালনা করছে? আমার মাথায় এটাও ঢুকছে না, সরকার এই ব্যাপারে নীরব কেন? তাদের কি কোনও বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে?” ফেব্রুয়ারির শুরুতে ইউনাইটেড ওয়ার্ল্ড রেসলিং (ইউডব্লিউডব্লিউ) ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিলেও ভারত সরকার এখনও তেমন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এখানেই না থেমে তিনি আরও যোগ করেছেন, “ভারত সরকার দ্বারা নির্বাসিত হওয়া একটি ক্রীড়া ফেডারেশন কী ভাবে সার্কুলার জারি করে ট্রায়ালের সময়সূচি নির্ধারণ করে তা আমি বুঝতে পারছি না। যদি অ্যাড হক কমিটি বা সরকার এই ট্রায়ালের আয়োজন করে তবেই আমরা তাতে অংশগ্রহণ করব।” শুধুমাত্র বজরংই নন, সাক্ষী মালিক ও বিনেশ ফোগতরাও ট্রায়ালে অংশগ্রহণ করবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ট্রায়ালে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত আমরা তিন জনে একসঙ্গে নিয়েছি। আমরা এই ব্যাপারে একে অপরের পাশে রয়েছি।” যদিও এই ব্যাপার নিশ্চিতকরণের জন্য সংবাদসংস্থার তরফে সাক্ষী ও বিনেশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সফল হয়নি। বজরং দিল্লি হাইকোর্টে যাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে চার জন কুস্তিগিরই হাইকোর্টে যোগাযোগ করেছেন।
প্রসঙ্গত মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন নিগ্রহের প্রতিবাদে ব্রিজভূষণ শরণ সিংহকে সরিয়ে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের দায়িত্বে আনা হয় তাঁরই ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় সিংহকে। এতে আগুন তো নেভেইনি, বরং আরও ঘি পড়ে। ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রতিবাদী কুস্তিগিররা। বিনেশ তো খেলরত্ন ও অর্জুন পুরস্কারও ফিরিয়ে দেন। সাক্ষী মালিক অবসর ঘোষণা করেন। বিনেশ পরে জয়পুরে জাতীয় পর্যায়ে সোনা জিতে প্রতিযোগিতামূলক কুস্তিতে প্রত্যাবর্তন করেছেন।