বিক্ষুব্ধ: বাংলা ছেড়ে পঞ্জাবের পথে আয়ুষী পোদ্দার। ফাইল চিত্র
অগস্টের শেষ নাগাদ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়া যাচ্ছেন তিনি। বাংলার এক মাত্র মেয়ে হিসাবে দুটো ইভেন্টে নামার ছাড়পত্র পেয়েছেন।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সের যোগ্যতা পেতে যে পয়েন্ট দরকার, তা করছেন অনুশীলনেই। ৫০ মিটার থ্রি পজিশন (জুনিয়র) রাইফেলে এখন দেশের এক নম্বর শুটার তিনি। ৫০ মিটার প্রোনে তিন নম্বর।
সোলে বিশ্বকাপ শুটিংয়ে দলগত বিভাগে সোনা পেয়েছেন। পেয়েছেন ব্রোঞ্জও। বাংলার হয়ে পনেরোটির উপর পদক পেয়েছেন জাতীয় প্রতিযোগিতা থেকে।
সেই ‘সোনার মেয়ে’ আয়ুষী পোদ্দার এ বার বাংলা ছাড়ার পথে।
পঞ্জাব ও মহারাস্ট্র থেকে তাঁকে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাদের রাজ্য দলে যোগ দেওয়ার জন্য। প্রাথমিক ভাবে পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে নামবেন ঠিক করে ফেলেছেন আয়ুষী। সে জন্যই ভর্তি হয়েছেন চণ্ডীগড়ের ডি এ ভি কলেজ। সেখানেই স্নাতক স্তরের পাঠ নেবেন বৈদ্যবাটির এই মেয়ে।
কিন্তু কেন বাংলার এই প্রতিশ্রুতিমান মেয়ে চলে যেতে চাইছেন রাজ্যে ছেড়ে? জাতীয় শিবিরে যোগ দিতে যাওয়ার আগে শনিবার বেশ ক্ষোভের সঙ্গে আয়ুষী বললেন, ‘‘বাংলা আমি ছাড়তে চাইছিলাম না। কিন্তু আমি তো এখান থেকে কোনও সাহায্য পাচ্ছি না। এখানে পঞ্চাশ মিটারের আন্তর্জাতিক মানের কোনও শুটিং রেঞ্জই নেই। যে গুলো আছে তা রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় নামার জন্য ঠিক আছে। কিন্তু আমরা যাঁরা আন্তর্জাতিক পদক পাই বা পেতে চাই তাদের কী হবে? অনুশীলন করবো কোথায়?’’ এর পর বছর আঠেরোর জেদী মেয়ে অভিযোগ করেন, ‘‘আমার চেয়ে কম যোগ্যতা ও সাফল্য পাওয়া দু’একজন সব সুযোগ সুবিধা রাজ্য ক্রীড়া দফতরের থেকে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমি রাইফেল কেনার টাকা চেয়ে চেয়েও প্রতিবার ফিরে এসেছি। অন্য রাজ্যে গেলে সব সাহায্য ওঁরা দেবেন বলছেন। তা ছাড়া ১০ মিটার এয়ার রাইফেলের গুলির চেয়ে আমার ইভেন্টের গুলির দাম অনেক বেশি। সেগুলো কিনতে তো ভিক্ষে করতে হচ্ছে আমাকে।’’
চেক প্রজাতন্ত্রে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা খেলতে গিয়ে অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয় তাঁর। আয়ুষী দাবি করছেন, পুরনো রাইফেলের নাট-বল্টু খুলে যাওয়ায় পদক হাতছাড়া হয়েছিল সে বার। এখনও সেই রাইফেল নিয়েই চলছে অনুশীলন। নতুন রাইফেল কিনতে তাঁর দরকার আট লক্ষ টাকা। আয়ুষীর বাবা ও কোচ পঙ্কজ পোদ্দার রাজ্য ক্রীড়া দফতরকে পাঠানো কয়েকটা চিঠি দেখিয়ে বলছিলেন, ‘‘আয়ুষী যা স্কোর করছে তাতে পদক পেতেই পারে কোরিয়ায়। কিন্তু ভাল রাইফেল না পেলে তো কিছুই করা যাবে না। রাজ্য সরকারকে সাহায্য চেয়ে কত বার যে চিঠি দিয়েছি। কেউ গুরুত্বই দিচ্ছে না।’’