সাবধান! সেই পুরনো ছন্দে জোকোভিচ

ফেডেরার যেমন রবিবার প্রথম সেটে জেতার পরে দ্বিতীয় সেটে হেরে গিয়েছিলেন, ঠিক একই চিত্রনাট্য দেখে এ বার প্রমাদ গুনেছিলেন নোভাক জোকোভিচের ভক্তরা। সুইস মহাতারকার ঘাতক ছিলেন গ্রিসের ২০ বছর বয়সি স্তেফানোস চিচিপাস। এ বার সেই ভূমিকায় দেখা যেতে পারত রাশিয়ার ২২ বছর বয়সি দানিল মিদভিদিভকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫০
Share:

হুঙ্কার: শেষ আটে জোকার। রয়টার্স

রজার ফেডেরারের বিদায়ের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই আরও এক ইন্দ্রপতন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল সোমবার মেলবোর্ন পার্কে।

Advertisement

ফেডেরার যেমন রবিবার প্রথম সেটে জেতার পরে দ্বিতীয় সেটে হেরে গিয়েছিলেন, ঠিক একই চিত্রনাট্য দেখে এ বার প্রমাদ গুনেছিলেন নোভাক জোকোভিচের ভক্তরা। সুইস মহাতারকার ঘাতক ছিলেন গ্রিসের ২০ বছর বয়সি স্তেফানোস চিচিপাস। এ বার সেই ভূমিকায় দেখা যেতে পারত রাশিয়ার ২২ বছর বয়সি দানিল মিদভিদিভকে। শেষ পর্যন্ত ভক্তদের স্বস্তি দিয়ে দু’বছর পরে অস্ট্রেলীয় ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলেন সার্বিয়ান তারকা। তিন ঘণ্টা ১৫ মিনিটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে রুশ প্রতিদ্বন্দ্বীকে ৬-৪, ৬-৭ (৫), ৬-২, ৬-৩ হারিয়ে। গত মরসুমে উইম্বলডন এবং যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জেতার পরে গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফির হ্যাটট্রিকের থেকে আর তিন ধাপ দূরে বিশ্বের এক নম্বর জোকোভিচ।

গত দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ফেডেরারের বিদায়ের পরে অনেকেই ধরে নিয়েছেন যে রকম ছন্দে খেলছেন জোকোভিচ, ১৫ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম এ বারই হাতে তুলবেন মেলবোর্ন পার্কে। কোর্টে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে মজা করে বিশ্বের এক নম্বর বলেও দেন, ‘‘আমার পরবর্তী ম্যাচের প্রতিদ্বন্দ্বী এখন নজর রাখছে ধরে নিয়ে বলছি, জিতে দারুণ লাগছে। এত তরতাজা জীবনে কখনও নিজেকে মনে হয়নি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মেলবোর্নে এক নম্বরের পতন, টেনিস সম্রাজ্ঞীর প্রত্যাবর্তন

খেলোয়াড়জীবনের মোট ১৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে মেলবোর্ন পার্ক থেকে ছ’টি খেতাব জিতেছেন জোকোভিচ। রেকর্ড সাত নম্বর ট্রফি জেতার দৌড়ে কোয়ার্টার ফাইনালে তাঁর সামনে এ বার অষ্টম বাছাই কেই নিশিকোরি। জাপানি তারকার চ্যালেঞ্জ সামলাতে পারলে তাঁকে সেমিফাইনালে ২০১৬-র উইম্বলডন রানার্স মিওস রাওনিচ বা ২৮ নম্বর বাছাই লুকাস পওলির সামনে পড়তে হতে পারে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ফাইনালে হতে পারে বিশ্বের এক বনাম দুই অর্থাৎ নোভাক-রাফা দ্বৈরথ।

জোকোভিচকে অবশ্য শেষ তিনটি হার্ডলের আগে আরও একটা চ্যালেঞ্জ সামলাতে হচ্ছে। সেটা ক্লান্তি। ‘‘ম্যাচের শেষ ২০ মিনিট শারীরিক দিক থেকে খুব একটা স্বস্তিতে ছিলাম না। দেখা যাক পরের দিন শরীর কী রকম থাকে। ক্লান্তিটা ঠিক কাটিয়ে উঠতে পারব এই আত্মবিশ্বাস রয়েছে।’’ সোমবার ম্যাচের পরে বলেছেন জোকোভিচ। ক্লান্তির কারণও রয়েছে। মেলবোর্নের গরমের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বীর লম্বা র‌্যালির সঙ্গেও পাল্লা দিতে হয়েছে তাঁকে। জোকোভিচ বলেছেন, ‘‘বেশির ভাগ সময়েই একে অন্যকে তাড়া করে গিয়েছি আমরা। এক এক সময় তো ৪০-৪৫টা র‌্যালিও হয়েছে। সেই কারণেই হয়তো এই ক্লান্তি ভাবটা এসেছে।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘তবে ক্লান্তিটা সামান্যই। খুব একটা চিন্তার কিছু দেখছি না।’’

আরও পড়ুন: ডার্বিকেই পাখির চোখ করছেন ‘সুস্থ’ এনরিকে

ক্লান্তির সমস্যা ভোগাতে পারে জোকোভিচের শেষ আটের প্রতিদ্বন্দ্বী নিশিকোরিকেও। যাঁকে কোয়ার্টারে উঠতে লড়তে হল পাঁচ ঘণ্টা পাঁচ মিনিট। তিনি হারান ২৩ নম্বর বাছাই পাওলো কারেনো বুস্তাকে ৬-৭ (৮), ৪-৬, ৭-৬ (৪), ৬-৪, ৭-৬ (৮)। এই নিয়ে তিনটি পাঁচ সেটের ম্যাচ খেললেন তিনি এ বার। সোমবার দু’সেট হারার পরে তৃতীয় সেটে টাইব্রেকারে ৫-৮ পিছিয়ে ছিলেন নিশিকোরি। এই সময়ে নাটকীয় ভাবে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়।

পাওলোর একটি শট নেটে লেগে কোর্টে পড়ার পরে লাইন জাজ আউট কল করেন। ফিরতি শটে নিশিকোরি ব্যাকহ্যান্ড উইনার মারেন। ক্ষুব্ধ পাওলো রিপ্লের দাবি করলে দেখা যায় তাঁর শট আউট ছিল না। কিন্তু চেয়ার আম্পায়ার থমাস সুইনি পয়েন্ট দেন নিশিকোরিকে। বিতর্কিত এই সিদ্ধান্তে প্রবল ক্ষুব্ধ হন স্প্যানিশ খেলোয়াড়। মেজাজের সঙ্গে ছন্দও হারান। ম্যাচ জয় থেকে মাত্র দু’পয়েন্ট দূরে ছিলেন তিনি। কিন্তু এই ঘটনার পরে ম্যাচটাই হেরে বসেন। নিশিকোরির সঙ্গে হাত মেলানোর পরে কোর্টে নিজের কিট ব্যাগও ছুড়ে ফেলেন রাগে।

শুধু তিনিই মেজাজ হারাননি সোমবার অস্ট্রেলীয় ওপেনে। কানাডার রাওনিচের বিরুদ্ধে স্ট্রেট সেটে হারার পরে চতুর্থ বাছাই আলেকজান্ডার জেরেভ কোর্টে র‌্যাকেট আছড়ে ভাঙেন। উত্তাপ কিন্তু ক্রমশ বাড়ছে মেলবোর্নে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement