কোচ কপেলের নেতৃত্বে খেতাব পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া এটিকে

চোট তাঁর ফুটবল জীবনে বারবার থাবা বসালেও কখনও দমিয়ে রাখতে পারেনি। নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন। সেই স্টিভন জেমস কপেলকে ঘিরেই আইএসএল খেতাব পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখছে এটিকে।

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৭
Share:

নজরে: মধ্যমণি এটিকে-র নতুন কোচ স্টিভন জেমস কপেল। সঙ্গে সঞ্জীব গোয়েন্কা, সঞ্জয় সেনরা। বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

চোট তাঁর ফুটবল জীবনে বারবার থাবা বসালেও কখনও দমিয়ে রাখতে পারেনি। নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন। সেই স্টিভন জেমস কপেলকে ঘিরেই আইএসএল খেতাব পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখছে এটিকে।

Advertisement

জামশেদপুর এফসি ছেড়ে এই মরসুমে এটিকের দায়িত্ব নিয়েছেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন তারকা কপেল। বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতায় এটিকের নতুন জার্সি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একেবারে অন্য মেজাজে পাওয়া গেল তাঁকে। ফুটবল জীবনে কপেলের গতি ছিল বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডারদের আতঙ্ক। কোচ হিসেবেও একই রকম আক্রমণাত্মক তিনি। জার্সি উদ্বোধনের পরে আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বললেন, ‘‘কতগুলো পাস খেলল তোমার দল। বল দখলের লড়াইয়ে অন্যদের চেয়ে কতটা এগিয়ে, আমার কাছে তা মূল্যহীন হয়ে যায় জিততে না পারলে। আমার কোচিং দর্শন খুব স্পষ্ট— টিকে থাকতে হলে জেতা ছাড়া পথ নেই।’’

কোচের এই দর্শন ছড়িয়ে পড়েছে ফুটবলারদের মধ্যেও। এই মরসুমে এটিকের অধিনায়ক ম্যানুয়েল লানসারোতে ব্রুনো থেকে প্রণয় হালদার, জানিয়ে দিলেন, আইএসএলে ট্রফি পুনরুদ্ধারই একমাত্র লক্ষ্য।

Advertisement

কোচ হিসেবে আইএসএলে কপেলের অভিষেক হয়েছিল কেরল ব্লাস্টার্স এফসিতে। প্রথম বছরেই দলকে ফাইনালে তুলেছিলেন। কিন্তু টাইব্রেকারে এটিকের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ১৯৮২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের অন্যতম তারকার। গত বছর ছিলেন জামশেদপুরে। যদিও তাঁর দল শেষ চারেও পৌঁছতে পারেনি। এ বার এটিকের দায়িত্বে। কপেল বলছেন, ‘‘এটিকে কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মুগ্ধ হয়েছিলাম। খেতাব পুনরুদ্ধারের জন্য ওঁদের তাগিদ দেখে অভিভূত। তাই কোচ হওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পরে দ্বিতীয় বার ভাবিনি।’’ যোগ করলেন, ‘‘ফুটবলের প্রতি কলকাতার মানুষের আবেগ ও ভালবাসাও আমাকে উৎসাহিত করেছে এটিকের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য।’’

আইএসএলে প্রথম বছর এটিকে-কে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। দ্বিতীয় বার এটিকের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্যেও স্প্যানিশ মস্তিষ্ক। তিনি, জোসে ফ্রান্সিসকো মলিনা। গত মরসুমে এটিকের দায়িত্বে ছিলেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের আর এক প্রাক্তন তারকা টেডি শেরিংহ্যাম। দশ দলের আইএসএলে ন’নম্বরে শেষ করেছিল এটিকে। এ বার ফের ব্রিটিশ কোচ দায়িত্বে। কী ভাবে দলকে খেলাতে চান কপেল? এটিকে কোচ বললেন, ‘‘স্পেনে প্রস্তুতি শিবির হয়েছে। প্র্যাক্টিস ম্যাচ খেলেছি আমরা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুরো দল নিয়ে অনুশীলন হয়নি। ফলে আমরা কী ধরনের ফুটবল খেলব, সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’

তবে কপেল যে এখন থেকেই প্রতিপক্ষদের নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু দিয়েছেন, তা বুঝিয়ে দিলেন। তাঁর মতে, এটিকের খেতাব জয়ের পথে প্রধান বাধা চারটি দল। চেন্নাইয়িন এফসি, বেঙ্গালুরু এফসি, পুণে সিটি এফসি ও এফসি গোয়া। কেন? কপেলের ব্যাখ্যা, ‘‘চারটি দলই মূলত একই দল ধরে রেখেছে। ফলে ফুটবলারদের মধ্যে দারুণ বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে। চেন্নাই ও গোয়ার কোচও বদল হয়নি। গত বছর বেঙ্গালুরুতে আলবের্তো রোকার সহকারী কার্লোস কুদরাতই এখন দায়িত্বে। পুণেতে শুধু নতুন কোচ। আমার মতে, এই চারটি দলই প্রধান প্রতিপক্ষ আমাদের।’’

আইএসএল খেতাব পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতির ব্যস্ততার মধ্যেও অবশ্য প্রাক্তন ক্লাব ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সব খবর রয়েছে কপেলের কাছে। তবে তিনি জোসে মোরিনহোর পরিবর্তে একেবারেই জ়িনেদিন জ়িদানকে ম্যানেজার করার পক্ষে নন। কপেল বলে দিলেন, ‘‘এই মুহূর্তে মোরিনহো বিশ্বের অন্যতম সেরা ম্যানেজার। আমার ব্যক্তিগত মত, মোরিনহোকে সরিয়ে জ়িদানকে দায়িত্ব দেওয়া ঠিক নয়।’’ কেন? স্যর আলেক্স ফার্গুসনের উদাহরণ দিয়ে বললেন, ‘‘স্যর আলেক্স ফার্গুসন রাতারাতি কিন্তু সব কিছু বদলে দেননি ম্যান ইউনাইটেডের। তিন বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল পরিবর্তন করেতে। তার পরেই ম্যান ইউনাইটেড অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিল। তাই মোরিনহোকেও সময় দেওয়া উচিত ক্লাব কর্তৃপক্ষের।’’

কপেল একই রকম থাকলেও বদলে গিয়েছেন এটিকে অন্যতম অংশীদার সঞ্জীব গোয়েন‌্কা। জানালেন, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান আইএসএলে খেললে তাঁর আপত্তি নেই। সাংবাদিক বৈঠকে বললেন, ‘‘বাংলা থেকে যত বেশি দল আইএসএলে খেলবে, তত ভাল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement