এ বারের আইএসএলের দুই উজ্জ্বল মার্কি। কলকাতার পস্টিগা। মুম্বইয়ের ফোরলান।
আইএসএলের প্রথম দু’মরসুমে মার্কি নেওয়ার নীতিটা খুব সমালোচনার মুখে পড়েছিল। বড় নামেদের সই করাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাবগুলো যতটা খরচ করেছ, সেই মাপের পারফরম্যান্স পায়নি। যেটা খুবই চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু এ বার আইএসএল টেবলের উপরের দিকে থাকা দলগুলোর দিকে তাকালে বলাই যায়, তিন জন মার্কি এমন খেলছে যেটা কোনও মার্কির থেকেই আশা করা হয়। মুম্বই সিটি, দিল্লি ডায়নামোস, এটিকের মার্কি ফুটবলার তাদের টিমকে উদ্বুদ্ধ করছে। মার্কিদের ঘিরেই গেমপ্ল্যান তৈরি করছে।
মুম্বই সব সময় দল বানাতে আর মার্কি সই করাতে বড় রকমের টাকা খরচ করে। আর এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষে বসে আছে ওরাই। এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, এ বার দিয়েগো ফোরলানকে মুম্বইয়ের সই করানোর সিদ্ধান্তটা সঠিক হয়েছে।
বড় বড় নামেরা যেখানে কিছু করতে ব্যর্থ, ফোরলান সেখানে দ্রুত মানিয়ে নিয়েছে ওর প্রথম আইএসএলে। ইউরোপের বিভিন্ন সেরা লিগে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, ইন্টার মিলান, আটলেটিকো মাদ্রিদের মতো ক্লাবে খেলা ছাড়াও ২০১০ বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল জিতেছিল ফোরলান। এত কিছুর পরেও ফোরলান কিন্তু মাটির মানুষ, যে সব সময় সতীর্থদের সাহায্য করতে চায়।
এই মরসুমে যেখানে বেশি গোল হচ্ছে না, ফোরলানই একমাত্র ফুটবলার যে হ্যাটট্রিক করেছে। শুধু গোল করাই নয়, ফোরলান উদ্বুদ্ধ করছে গোটা মুম্বই দলকে। একজন প্রকৃত মার্কির মতোই।
দিল্লির মার্কি ফ্লোরেন্ট মালুদাও এখনও পর্যন্ত দারুণ খেলছে। গত মরসুমে দিল্লির সেমিফাইনাল পৌঁছনোর পিছনেও অবদান ছিল ওর। আইএসএল থ্রি-তে গুরুত্বপূর্ণ গোল করছে মালুদা যা দিল্লিকে আরও ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। ডায়নামোসের মেরুদণ্ড ও-ই। দিল্লির প্রতিটা মুভ মালুদাকে কেন্দ্র করে হচ্ছে। মাঠে ওর সাহায্যেই দিল্লি ওদের ডিফেন্সিভ স্ট্র্যাটেজিকে আক্রমণে বদলায়। আমার মতে এ বার দিল্লির অন্যতম ফেভারিট হওয়ার কারণ ওরা সবচেয়ে সংগঠিত দল। আর তার কারণ মালুদা।
স্ট্রাইকার হিসেবে হেল্ডার পস্টিগার জাত নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে গত বার প্রথম ম্যাচেই চোট পেয়েছিল ও। এ বারও চোটের কারণে শুরুর দিকে বেশ কিছু ম্যাচ খেলতে পারেনি। কিন্তু মাঠে ফেরার পর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি এটিকের মার্কিকে।
পস্টিগা বল নিয়ে যতটা ভয়ঙ্কর তার থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর বল ছাড়া। ওর মতো প্রতিভাবান ফিনিশার এটিকের যেমন গুরুত্বপূর্ণ গোল করেছে, তেমনই গোল করিয়েওছে। হিউমের সঙ্গে পস্টিগার জুটি যে কোনও বিপক্ষ ডিফেন্সের কাছে দুঃস্বপ্নের। পস্টিগার মতো মার্কি ম্যাচ আর হৃদয়, একইসঙ্গে দুটোই জিততে এসেছে।