ময়দানে মিছিল ক্রীড়াবিদদের। ছবি: অভীক রায়।
এ বার পথে নামল ক্রীড়ামহল। আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে অবস্থান বিক্ষোভ ও মিছিল করলেন ক্রীড়াবিদেরা। ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাশে প্রথমে হয় অবস্থান বিক্ষোভ। তার পরে মিছিল।
এই মিছিলের অন্যতম উদ্যোক্তা প্রাক্তন ক্রীড়াবিদ সোমা বিশ্বাস মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছিলেন, কাউকে আলাদা করে আমন্ত্রণ করেননি তাঁরা। বুধবার দুপুরে দেখা গেল, প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিভিন্ন খেলার সঙ্গে যুক্ত ক্রীড়াবিদেরা। ছিলেন, অতনু দাস, দোলা বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম সরকার, গুরবক্স সিংহ, অনিত ঘোষ, অর্ণব মণ্ডল, দেবজিৎ ঘোষ, অভ্র মণ্ডল, বুলা চৌধুরী, দিব্যেন্দু বড়ুয়া, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তি মল্লিক, জ্যোতির্ময়ী শিকদারেরা।
প্রথমে গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাশে অবস্থান বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পরে মিছিল শুরু হয়। আকাশবাণী ভবন, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র, বাবুঘাট হয়ে ইডেন গার্ডেন্সের সামনে দিয়ে আবার গোষ্ঠ পালের মূর্তির সামনে এসে মিছিল শেষ হয়। পরে তাঁদের মধ্যে থেকে ছ’জন প্রতিনিধি আরজি কর হাসাপাতালে বিক্ষোভরত চিকিৎৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে যান। তাঁরা হলেন, গুরবক্স সিংহ, গৌতম সরকার, শাসুল আলম, অশোক সামন্ত, সুমিত মুখোপাধ্যায় ও সোমা বিশ্বাস।
প্রতিবাদে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার তথা বর্তমানে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার প্রধান কল্যাণ চৌবে। তিনি বলেন, “প্রাক্তন খেলোয়াড় হিসাবে এখানে এসেছি। অসংখ্য খেলোয়াড় এসেছেন। বিভিন্ন খেলার সঙ্গে যুক্ত প্রাক্তনেরা এখানে আছেন। সারা পৃথিবীতে ন্যায়ের দাবিতে প্রতিবাদ হচ্ছে। এ রকম একটা সময়ে প্রাক্তন খেলোয়াড়দের ডাকে এসেছি। আমি চাই, এ রকম ঘৃণ্য ঘটনা যেন আর না হয়। এই ঘটনায় যেন সুবিচার হয়।”
গত রবিবার যুবভারতীর বাইরে ডার্বি বাতিলের প্রতিবাদে ও আরজি কর-কাণ্ডে বিচার চেয়ে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডানের মিছিলেও গিয়েছিলেন কল্যাণ। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পুলিশ যে ভাবে ডার্বি বাতিল করেছিল, তার নিন্দা হয়েছে। সমর্থকদের উপর হামলা, লাঠি চার্জের তীব্র নিন্দা করেছি। রাতে কয়েক জন সমর্থককে লালবাজার থেকে ছাড়িয়েছি। পরের দিন শুনলাম আরও চার জনকে বিনা কারণে আটকে রাখা হয়েছিল। তাদের বাড়িতেও গিয়েছি। আমরা এআইএফএফ-এর তরফ থেকে চিঠি দিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীকে, যাতে ডুরান্ডের বাকি ম্যাচ কলকাতায় হয়।”
ঘটনার নিন্দা করেছেন গৌতম, শান্তির মতো প্রাক্তন ক্রীড়াবিদেরাও। গৌতম বলেন, “আগে এই রকম কোনও দিন হয়নি। এটা নারকীয় ঘটনা। এর দ্রুত বিচার চাই। এই রকম ঘটনা কখনওই হওয়া উচিত নয়।” শান্তিও দ্রুত শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমি নিজেও এক জন মা। আরজি করে যা হয়েছে, তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে কেউ ভবিষ্যতে এই ধরনের কাজ করার সাহস না পায়।”
বুধবার জানা গিয়েছিল, এই মিছিলে থাকতে পারেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রী ডোনা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, সৌরভের এই মিছিলে আসার কথা রয়েছে। কিন্তু বুধবার ক্রীড়াবিদদের মিছিলে দেখা যায়নি মহারাজকে।