Wrestlers' Protest

বিজেপির বিরুদ্ধে সরব দলেরই এক মহিলা সাংসদ, ৩৫ দিন চুপ থাকার পর কুস্তিগিরদের জন্য বার্তা

দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তিগিরদের ধর্না শুরু হওয়ার পর থেকে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন বিজেপি নেতারা। অবশেষে কুস্তিগিরদের সমর্থন করলেন কেন্দ্রে শাসকদল বিজেপির দুই সাংসদ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২৩ ১৮:২৪
Share:

দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নামঞ্চে কুস্তিগির সাক্ষী মালিক (বাঁ দিকে) ও বিনেশ ফোগট। ছবি: পিটিআই

দিল্লির যন্তর মন্তরে কুস্তিগিরদের ধর্না শুরু হওয়ার পর থেকে চুপ রয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রের শাসকদলের সাংসদ এবং জাতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের বিরুদ্ধে হেনস্থার প্রতিবাদে গত ২৩ এপ্রিল থেকে ধর্না শুরু হয়েছিল। ৩৫ দিনে এক জন বিজেপি নেতাও সেখানে গিয়ে কুস্তিগিরদের সঙ্গে দেখা করেননি। এমনকি রাজধানীতে সংসদ ভবন অভিযানের সময় সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগটের মতো কুস্তিগিরকে আটক করার পরেও সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেননি বিজেপির কোনও নেতা। অবশেষে কুস্তিগিরদের সমর্থন করলেন বিজেপির দুই সাংসদ প্রীতম মুণ্ডে ও বিজেন্দ্র সিংহ।

Advertisement

মহারাষ্ট্রের বিড়ের মহিলা সাংসদ প্রীতম পেশায় চিকিৎসক। তিনি মহিলা কুস্তিগিরদের এই হেনস্থা আর মেনে নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। প্রীতম বলেন, ‘‘সাংসদ নয়, এক জন মহিলা হিসাবে বলছি, যখন কোনও মহিলা এই ধরনের অভিযোগ করেন, তখন সেই বিষয় গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তদন্ত করা উচিত। যদি তদন্ত না হয়, তা হলে সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে ভাল লক্ষণ নয়।’’ এই ঘটনা আর দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বলেই মনে করছেন প্রীতম। তিনি বলেন, ‘‘এখন এই ঘটনা আর দেশের মধ্যে আটকে নেই। আমি যদি এখন তদন্ত কমিটি গড়ার অনুরোধ করি, তা হলে সেটা লোকদেখানো হবে। আমি আশা করছি, এই ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’

কুস্তিগিরদের ধর্নায় বেশ অস্বস্তিতে হরিয়ানার বিজেপি নেতৃত্ব। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের পরেই ওই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে বিতর্কের দ্রুত মীমাংসা না হলে এই আন্দোলন দলের বিপক্ষে যেতে পারে বলে মনে করছেন হরিয়ানার বিজেপি নেতারা। বিশেষ করে যে ভাবে কুস্তিগিরেরা পদক বিসর্জনের কথা বলছেন, তাতে দলের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। হরিয়ানার হিসারের বিজেপি সাংসদ বিজেন্দ্র বলেন, ‘‘বিষয়টি গোড়াতেই মিটিয়ে ফেলা প্রয়োজন ছিল। যে ভাবে কুস্তিগিরেরা পদক ভাসানোর কথা বলছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। অনেক পরিশ্রম, ঘাম ঝরিয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয় সম্ভব হয়। বাধ্য করা না হলে সেই পদক কেউ জলে ফেলে দেওয়ার কথা বলে না।’’

Advertisement

বুধবার এই বিষয়ে মুখ খুলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লি পুলিশ ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করছে। কুস্তিগিরদের উদ্দেশে তাই আমার অনুরোধ, তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।’’ একই সুর শোনা গিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের গলাতেও। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষ হয়ে গেলে সরকার পদক্ষেপ করবে।’’

ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছে বেশ কয়েকটি বিরোধী দল। কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, আম আদমি পার্টির মতো বিরোধী দলগুলি এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় কেন্দ্রের উপর চাপাচ্ছে। দিন দিন দেশ জুড়ে আরও বাড়ছে আন্দোলন। যোগ দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলিও। দিল্লি ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে অবশেষে কুস্তিগিরদের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন বিজেপির দুই সাংসদ। যদিও দলের তরফে এই বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement