ফুরফুরে: কলকাতায় এলেন আরিয়ান দত্ত। —নিজস্ব চিত্র।
নেদারল্যান্ডসের হয়ে খেললেও তাঁরা দু’জনেই চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা। ছ’মাস ক্লাব ক্রিকেট খেলতেন আমস্টারডামে। সেপ্টেম্বরের পরে চলে আসতেন ভারতে। পঞ্জাবের প্রাক্তন ক্রিকেটার অমিত উনিয়ালের কাছে অনুশীলন চলত তাঁদের।
অমিতের ফ্ল্যাটেই থাকতেন দুই ক্রিকেটার। তাঁরা এখন নেদারল্যান্ডসের বিশ্বকাপ দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ওপেনার বিক্রমজিৎ সিংহ এবং অফস্পিনার আরিয়ান দত্ত।
আরিয়ান মিডিয়াম পেসার হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিলেন। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই উপলব্ধি করেন, ১৫ নম্বরের জুতো পরতে হচ্ছে তাঁকে। পা এতটা বড় হয়ে যাওয়ার ফলে ‘শিন বোন’-এ যন্ত্রণা শুরু হয়। অমিতই তাঁকে স্পিনার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আনন্দবাজারকে আরিয়ান ও বিক্রমজিতের কোচ বলছিলেন, ‘‘আরিয়ান পায়ের উপরে বেশি চাপ দিতে পারত না। শিন বোন-এ ব্যথা করত। তাই ওকে স্পিনার হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। তার পর থেকেই ওর জীবন পাল্টে যেতে শুরু করে। ক্লাব ক্রিকেটে সাফল্য পেয়ে দ্রুত জাতীয় দলে সুযোগ পায়। এখন ও-ই দলের প্রধান স্পিনার।’’
চলতি বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচে সাত উইকেট পেয়েছেন আরিয়ান। বৃহস্পতিবার কলকাতা পৌঁছনো মাত্র তাঁর গালে চওড়া হাসিই বলে দিতে পারে, তিনি কতটা আত্মবিশ্বাসী। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তিন উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন আরিয়ান। আর. অশ্বিনের পরে চলতি বিশ্বকাপে প্রথাগত অফস্পিনার বলতে রয়েছেন তিনিই। তাঁর কোচের কথায়, ‘‘উচ্চতার জন্য বল অনেকটা বেশি বাউন্স করে ওর। নতুন বলেও টার্ন করাতে পারে। নেদারল্যান্ডস তো ওকে দিয়েই ইনিংস শুরু করছে।’’
অশ্বিনের খুব বড় ভক্ত আরিয়ান। তিনি চান, অন্তত এক বার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে। কোচের কথায়, ‘‘গতকালই কথা হচ্ছিল। আরিয়ান বলছিল যে ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচের জন্য ও আর অপেক্ষা করতে পারছে না। অফস্পিনার হিসেবে যাত্রা শুরু করার পরে অশ্বিনই ওর অনুপ্রেরণা। খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন, ওর অ্যাকশন অনেকটা অশ্বিনের মতো।’’
নেদারল্যান্ডসের ওপেনার বিক্রমজিৎ আবার ক্রিস গেলের ভক্ত। তাঁকে অনুকরণ করেই মাথায় ফেট্টি পরেন। গেলের মতোই বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাট করার চেষ্টা করেন। হায়দরাবাদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫২ রান করে চমক দিয়েছিলেন বাঁ-হাতি ওপেনার। কলকাতায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিনি কী করেন, সেটাই দেখার। কোচ যদিও বলছিলেন, ‘‘বিক্রমজিতের ছন্দের উপরে অনেকটা নির্ভর করে নেদারল্যান্ডসের পারফরম্যান্স। প্রতিযোগিতা যে ভাবে শুরু করেছিল, সেই মানসিকতা নিয়ে ইনিংসকে দীর্ঘায়িত করতে পারছে না। প্রতিযোগিতার মাঝে আমার কাছে পরামর্শ চেয়েছে। যতটা সম্ভব ওকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। এ বার দেখা যাক, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছন্দে ফিরতে পারে কি না।’’