মহড়া: উদ্বেগ নিয়েই প্রস্তুতি কাশ্মীরের ফুটবলারদের। ছবি: প্রণব দেবনাথ
কলকাতা থেকে দূরত্ব ১৬৯৬ কিলোমিটার। কিন্তু সেই কাশ্মীরের বাড়িতেই গত ৪৮ ঘণ্টায় যোগাযোগ করতে পারেননি ডুরান্ড কাপ খেলতে কলকাতায় আসা রিয়াল কাশ্মীরের ফুটবলাররা। কাশ্মীর নিয়ে যখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ, তখন সেখানকার ফুটবলাররা হাজির কলকাতায় ডুরান্ড কাপ খেলতে। ফলে তাঁদের শরীর কলকাতায় থাকলেও মন পড়ে সেই কাশ্মীর উপত্যকাতেই।
গত বছরের আই লিগে জম্মু ও কাশ্মীরের দলটিকে তৃতীয় স্থানে তুলে আনা দলটির ভূমিপুত্র দানিশ ফারুক, খালিদ কায়ুমদের গলায় তাই উৎকণ্ঠা। ফোনে যোগাযোগ করা হলে মঙ্গলবার দুপুরে দু’জনেই বলে দেন, ‘‘বাড়িতে কখনও কখনও ফোন লাগছে। তবে তা ৩০-৪০ সেকেন্ডের বেশি নয়। কখনও যোগাযোগ হচ্ছে না। ফলে গত ২৪ ঘণ্টায় বাড়ির সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। এতে একটা মানসিক চাপ তো থাকেই। তবে আমরা কলকাতায় এসেছি ফুটবল খেলতে। তাই এই মুহূর্তে ডুরান্ড কাপেই মন দিচ্ছি।’’
বুধবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে চেন্নাই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ডুরান্ড কাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে রিয়াল কাশ্মীর। এ দিন দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কল্যাণীতে অনুশীলন করেছে কাশ্মীরের দলটি। তাদের হোটেলেও আঁটসাঁট নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে। দলের স্কটিশ কোচ ডেভিড রবার্টসন গত দু’বছর ধরে যুক্ত রয়েছেন দলের সঙ্গে। তিনি আবার এই প্রসঙ্গে ঢুকতে নারাজ। বলেন, ‘‘কাশ্মীরে যখন প্রথম বার এসেছিলাম, তখনই দেখেছিলাম, সারা দিন বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট সংযোগ থাকে না। কাজেই এগুলোর সঙ্গে আমরা রপ্ত। কাশ্মীর উপত্যকার যে ভূমিপুত্ররা আমাদের সঙ্গে রয়েছে, তারা হয়তো বাড়ির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেনি। একটা পেশাদার ফুটবল দলের সদস্যরা জানে, ফুটবলটাই তাদের ধ্যানজ্ঞান। তাই ম্যাচেই মনোনিবেশ করতে বলেছি ওদের। ছেলেরা সেটাই করছে।’’
দলের মালিক সন্দীপ ছাট্টু সস্ত্রীক এসেছেন কলকাতায় ডুরান্ড কাপের খেলা দেখতে। তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ। বলেন, ‘‘সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে
পারি না।’’
সন্দীপ আরও বলছেন, ‘‘শনিবার থেকেই কাশ্মীর উপত্যকার মানুষ বুঝতে পেরেছিলেন, একটা কিছু হতে চলেছে। কিন্তু সেটা কী ব্যাপার, তা আগাম আঁচ করা যায়নি।’’ যোগ করেন, ‘‘দলের সাত জন ফুটবলার কাশ্মীরের ভূমিপুত্র। প্রায় সকলেই বাড়ির লোকের সঙ্গে শেষ বার কথা বলেছে রবিবার রাতে। সোমবার দিল্লিতে নেমে জানতে পারি খবরটা। কলকাতায় নেমে আর কারও সঙ্গে আমি যোগাযোগ করতে পারিনি।’’
এ দিকে, কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রিকেটেও নানা প্রশ্নের সূত্রপাত হয়েছিল। কারণ, ইতিমধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে দু’টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল—জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে। কিন্তু এই মুহূর্তে লাদাখ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাই এ দিন সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে প্রশাসকদের কমিটির প্রধান বিনোদ রাই জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘লাদাখের ক্রিকেটাররা রঞ্জিতে আপাতত জম্মু ও কাশ্মীরের হয়েই খেলতে পারবেন।’’
বাংলার কোচ রঞ্জন: সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার কোচ হলেন রঞ্জন ভট্টাচার্য। মেয়েদের সিনিয়র জাতীয় ফুটবলে রাজ্য দলের কোচ প্রতিমা বিশ্বাস। মঙ্গলবার আইএফএ-র কোচেস কমিটির সভার পর চেয়ারম্যান রঘু নন্দী বললেন, ‘‘লিগ চলছে। কোচ হওয়ার জন্য সঞ্জয় সেন, শঙ্করলাল চক্রবর্তী, মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ওঁরা রাজি নয়। যাদের পাওয়া গিয়েছে তাদের কোচ করেছি।’’ ১০ সেপ্টেম্বর শুরু হবে সন্তোষ ট্রফি। কলকাতা লিগে এ দিন ম্যাচ ছিল জর্জ টেলিগ্রাফের সঙ্গে কালীঘাট এম এসের। সেই ম্যাচ জিতে ফিরে জর্জের কোচ রঞ্জন খবর পান তিনি সন্তোষে দায়িত্ব পাচ্ছেন। পাঁচ বছর জর্জের কোচিং করা রঞ্জন বললেন, ‘‘এটা আমার প্রথম সুযোগ। লিগ চলছে। ফুটবলার পাওয়া কঠিন। কিছু ফুটবলারের সঙ্গে কথা বলে রেখেছি। আইএফএ-র সঙ্গে বুধবার কথা বলে অনুশীলনের দিন ঠিক করব।’’
অস্বস্তিতে মহমেডান: আজ প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছে মহমেডান স্পোর্টিং। তাদের প্রতিপক্ষ এরিয়ান। ডুরান্ডে মোহনবাগানের কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে চাপে রয়েছে সুব্রত ভট্টাচার্যের দল। রঘু নন্দীর এরিয়ান যথেষ্ট শক্তিশালী। ফলে চাপে রয়েছেন সুব্রত।
টেবল টেনিস: নবীন সঙ্ঘের উদ্যোগে দক্ষিণ কলকাতা টিটি মিটে দ্বিমুকুট পেলেন মুনমুন কুণ্ডু। তিনি মেয়েদের সিঙ্গলস ও যুব বিভাগে সেরা হলেন। অন্য বিভাগে সেরা অঙ্কলিকা চক্রবর্তী, সৃজনদেব মান্না, অঙ্কিত বসু।
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ—মহমেডান স্পোর্টিং: এরিয়ান
(মহমেডান ৩-০০)।