Ranji

জিতলে এটাই হবে সেরা ইনিংস, বললেন অনুষ্টুপ

শনিবার ইডেন সাক্ষী হয়ে থাকল তাঁর এক অবিশ্বাস্য ইনিংসের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২০ ০৪:০৬
Share:

যোদ্ধা: দলকে টেনে তুলে ফিরছেন অনুষ্টুপ। শ্রদ্ধাবনত সতীর্থেরা। হাততালিতে স্বাগত জানাচ্ছেন। নিজস্ব চিত্র

ছোটবেলায় গোয়েন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। ফেলুদা, ব্যোমকেশের বই পড়ে দিনের পর দিন কেটে যেত তাঁর। ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন কখনওই দেখেননি। তাঁর আকর্ষণ ছিল ফুটবল। বাবার হাত ধরে ক্রিকেটে আসা চনন্দনগরের ছোট ছেলেটির। সেখান থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলার হয়ে খেলার জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন অনুষ্টুপ মজুমদার। এমনকি তিন বছর আগে রেলের চাকরি ছাড়তেও দ্বিধাবোধ করেননি। শুধুমাত্র বাংলার জার্সিতে খেলার তাগিদে জীবনের সব চেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পিছুপা হননি বাংলার অভিজ্ঞ সৈনিক।

Advertisement

শনিবার ইডেন সাক্ষী হয়ে থাকল তাঁর এক অবিশ্বাস্য ইনিংসের। কর্নাটকের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালের প্রথম দিন তাঁর অপরাজিত ১২০ রানের ইনিংস দেখে মুগ্ধ রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে অশোক ডিন্ডা। সম্বরণ বলছিলেন, ‘‘১৭ বছর বাংলার হয়ে খেলার পরেও বলছি, এই রকম ইনিংস কখনও দেখিনি। ৬৭ রানে ছয় উইকেট হারানোর পরে ঘরোয়া ক্রিকেটে সেরা বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে দুরন্ত ইনিংস উপহার দিয়ে গেল।’’ অশোক ডিন্ডা দলে না থাকলেও ইডেনে এসেছিলেন ম্যাচ দেখতে। বলছিলেন, ‘‘রুকু (অনুষ্টুপ) বাংলা দলের অভিভাবক। এটাই ওর ব্যাট করার ধরন। অসাধারণ
ইনিংস খেলল।’’

যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই অনুষ্টুপকে ইনিংস সাজাতে হয় শাহবাজ ও আকাশ দীপকে নিয়ে। শাহবাজ ব্যাটসম্যান হলেও আকাশ নীচের সারির ব্যাটসম্যান। তাঁদের নিয়ে ইনিংস সাজানোর সময় কী আলোচনা করছিলেন? ম্যাচ শেষে অনুষ্টুপ বলেন, ‘‘শাহবাজকে কিছু বলতে হয়নি। দ্রুত রান করতে পছন্দ করে। সেটাই ওর স্বাভাবিক ক্রিকেট। কিন্তু আকাশের ভয়ডরহীন ইনিংস কিন্তু পার্থক্য গড়ে দিল। বিপক্ষ ভাবতেই পারেনি, আকাশ এত ভাল ব্যাট করে। ওকে শুধু বলেছিলাম, স্পিনারকে
আক্রমণ করতে।’’

Advertisement

ওড়িশার বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালেও দলের স্কোর যখন ৪৬-৫, সেই পরিস্থিতি থেকে ১৫৭ রান করেছিলেন অনুষ্টুপ। সেমিফাইনালে তিনিই বাংলার ত্রাতা। এখনও পর্যন্ত কোন ইনিংসটি সেরা? অনুষ্টুপের উত্তর, ‘‘কটকে ভেবেছিলাম ওটাই সেরা ইনিংস। কিন্তু কর্নাটকের বোলিং আক্রমণ আরও শক্তিশালী। ওদের বিরুদ্ধে রান করেছি। জিতলে বলব, এটাই সেরা ইনিংস।’’

বাংলার উপরের সারির ব্যাটসম্যানেরা ফের ব্যর্থ। অনুষ্টুপও মানছেন, উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন অনেকে। তাঁর কথায়, ‘‘যে সব বলে উইকেট হারিয়েছি, তার মধ্যে কয়েকটি ডেলিভারিই ভাল ছিল। বেশ কয়েকটি ম্যাচে ব্যর্থ আমাদের ওপরের সারি। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে
আসতে হবে।’’

৩৫ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান এক সময় চাকরি ছেড়েও বাংলার হয়ে সুযোগ পাচ্ছিলেন না। সেই পরিস্থিতিতে কখনও খেলা ছেড়ে দিতে ইচ্ছে হয়নি? অনুষ্টুপ বলে গেলেন, ‘‘বাংলার হয়ে খেলার জন্য চাকরি ছেড়েছি। কিন্তু ক্রিকেট ছাড়ার কথা কখনও ভাবিইনি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement