আত্মবিশ্বাসী শাহবাজ-অনুষ্টুপ
Anushtup Majumdar

‘সেমিফাইনালে একই মেজাজে দেখতে পাবেন’

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

কটক শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৩
Share:

জুটি: ব্যাটে-বলে বাংলার ভরসা শাহবাজ ও অনুষ্টুপ (ডান দিকে)।

বাংলাকে সেমিফাইনালে তোলার কারিগর তাঁরা। দু’জনেই ডাকাবুকো। প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে পছন্দ করেন। প্রথম জন শাহবাজ আহমেদ। রঞ্জি মরসুমে ৯টি ম্যাচে ঝুলিতে ৩০টি উইকেট। ব্যাটে রান ৪২৭। ওড়িশার বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে ৮২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রান করেছেন। দ্বিতীয় জন অনুষ্টুপ মজুমদার। অনবদ্য ১৫৭ রান করে যিনি বাংলার শেষ চারের ছাড়পত্র নিশ্চিত করেছেন। সোমবার ম্যাচের পরে আনন্দবাজারের সঙ্গে মাঠেই আড্ডা জুড়লেন দু’জনে।

Advertisement

প্রশ্ন: কোয়ার্টার ফাইনালে আপনাদের হাত ধরেই প্রথম ইনিংসে এগোল বাংলা। অনুভূতিটা কেমন?

অনুষ্টুপ: যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, পালন করে খুশি। ম্যাচের প্রথম দিন সকালে উইকেট স্যাঁতসেঁতে ছিল। পেসারদের সামলানো কঠিন ছিল। কম ঝুঁকি নেওয়ার চেষ্টা করেছি।

Advertisement

শাহবাজ: দলকে জেতানো যে কোনও ক্রিকেটারের স্বপ্ন। আর সে ম্যাচ যদি হয় রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনাল, তা হলে তো কথাই নেই। আমার পারফরম্যান্সে দল উপকৃত হয়েছে, সেটাই অনেক।

প্রশ্ন: কখনও মনে হয়নি, ম্যাচ হাতের বাইরে চলে গেল?

অনুষ্টুপ: এক বারের জন্যও মনে হয়নি এখান থেকে হেরে ফিরব। ওড়িশার বিরুদ্ধে আগে খেলেছি। বসন্ত মোহান্তি, সূর্যকান্ত প্রধানের বোলিংয়ের ধরন জানি। বুঝেছিলাম, প্রথম দু’ঘণ্টা উইকেট না পড়লে ওরা চাপে পড়ে যাবে। চার পেসারে খেলছিল ওড়িশা। তাপমাত্রা চড়া ছিল। এই পরিস্থিতিতে পেসাররা দ্রুত হাঁপিয়ে ওঠে। তার অপেক্ষা করেছি।

শাহবাজ: চলতি মরসুমে এমন পরিস্থিতি আগেও এসেছে। পঞ্জাবের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয়ের পরে কোনও পরিস্থিতি কঠিন মনে হয় না। ভবিষ্যৎ নিয়ে না ভেবে নিজের মতো ব্যাটিং করেছি।

প্রশ্ন: অনুষ্টুপের এটাই কি সেরা ইনিংস?

অনুষ্টুপ: হ্যাঁ। রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে এ ধরনের ইনিংস খেলার সুযোগ আগে হয়নি। তবে যে বার দলীপ ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হলাম, সে বার পূর্বাঞ্চলের হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এমন ইনিংস খেলেছিলাম। ৩৩০ রান তাড়া করছিলাম। ১৯০ রানে ছয় উইকেট পড়ে গিয়েছিল। বসন্ত মোহান্তির সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে জিতিয়েছিলাম। সেঞ্চুরি ছিল। কিন্তু দু’টোর মধ্যে পার্থক্য রয়েইছে।

প্রশ্ন: প্রথম রঞ্জি ট্রফি মরসুমে শাহবাজ আহমেদকে এতটা অভিজ্ঞ দেখানোর কারণ কী?

শাহবাজ: তপন মেমোরিয়ালের হয়ে সিএবি-র প্রথম ডিভিশনে এই পরিস্থিতি থেকে অনেক ম্যাচে জিতেছি। সহজে হাল ছাড়তে শিখিনি।

প্রশ্ন: বাংলার উপরের সারির ব্যাটিং কিন্তু এখনও উদ্বেগের। সেমিফাইনালে ছবি কি পাল্টাবে?

অনুষ্টুপ: আশা করি অভিমন্যুরা রানে ফিরবে। এ ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে রান পেয়েছে কৌশিক ও রামন। এই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগাতে হবে। প্রতিপক্ষের নাম দেখে না খেলে বলের মান অনুযায়ী খেলা দরকার।

শাহবাজ: পরিস্থিতি যেমনই হোক, ভয় পাই না। উপরের সারির ব্যাটসম্যানেরা রান পেলে ভাল, না হলে আমরা তো আছিই।

প্রশ্ন: ইডেনে বল তেমন ঘুরবে না। সে ক্ষেত্রে অন্য কোনও ভাবনা?

শাহবাজ: ম্যাচ পাঁচ দিন নিশ্চয়ই গড়াবে। গরম পড়ছে। আগের মতো স্যাঁতসেঁতে উইকেট পাব না। মনে হচ্ছে চতুর্থ দিন থেকে ঠিক টার্ন পাব।

প্রশ্ন: ঘরের মাঠে সেমিফাইনাল খেলার সুবিধা কতটা?

অনুষ্টুপ: সুবিধা একটাই যে, পিচটা পরিচিত। তবে সেমিফাইনাল ঘরের মাঠে হোক অথবা বাইরে, চাপ একই রকম থাকবে।

প্রশ্ন: সোমবার কর্নাটক তাদের দলে কে এল রাহুলকে যোগ করেছে। তাঁকে নিয়ে কোনও পরিকল্পনা?

শাহবাজ: রাহুলের উইকেট পেলে সব চেয়ে ভাল লাগবে। ও এখন ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ওর বিরুদ্ধে খেলব, এটা প্রেরণা দেবে।

প্রশ্ন: ওড়িশার বিরুদ্ধে ব্যাটিং থেকে বোলিং, দুই বিভাগেই পিছিয়ে পড়ে প্রত্যাবর্তন। সেমিফাইনালের আগে এটা কী মনোবল বাড়িয়ে দিল?

অনুষ্টুপ: মনোবলের সঙ্গে হার-না-মানা মানসিকতার পরিচয় পাওয়া গেল। সেমিফাইনালেও এই পরিস্থিতি হলে ভয় পাব না।

শাহবাজ: সেমিফাইনালে খেলব, এটাই মনোবল দ্বিগুণ করে দিয়েছে। মরসুম শুরুর দু’মাস আগে থেকে যে পরিশ্রম করেছি, তার ফল পাচ্ছি। কর্নাটকের বিরুদ্ধে জিতলে ফাইনালেও আমাদের আটকানো কঠিন।

প্রশ্ন: তিরিশ বছর আগের সেই স্বপ্নের পুনরাবৃত্তির চিন্তা তা হলে শিবিরে প্রবেশ করেছে?

অনুষ্টুপ: লালজি (অরুণ লাল) যে দিন থেকে দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। সে দিন থেকে এই স্বপ্নের পিছনেই ছুটছি। তার জন্য এত পরিশ্রম। এত বড় সুযোগ পেয়ে হাতছাড়া করব না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement