বিধ্বস্ত: ফাইনালে এসেও জেতা হল না ট্রফি। হতাশ অরিন্দমেরা। আইএসএল
গত মরসুমে চেন্নাইয়িন এফসি-কে হারিয়ে এটিকে-কে আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। ম্যাচের পরে আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসও আবেগে ভেসে গিয়েছিলেন। এক বছরের মধ্যেই যে ছবিটা এ ভাবে বদলে যাবে, স্পেনীয় কোচ হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি।
শনিবার ফতোরদা স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১৮ মিনিটে ডেভিড উইলিয়ামস গোল করে এটিকে-মোহনবাগানকে এগিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে লাফিয়ে উঠেছিলেন হাবাস। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে থমথমে মুখে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে যোগ্যতা অর্জন করা থেকে সপ্তম আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন— এ ভাবে শেষ করে দেবে মুম্বই সিটি এফসি। হারের হতাশা থেকেই ফের বিতর্কে জড়ালেন হাবাস।
শনিবার গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে হারের হতাশায় ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠক না করেই ড্রেসিংরুমে চলে যান সবুজ-মেরুন কোচ। ফের নিয়ম ভাঙায় ছ’লক্ষ টাকা জরিমানা হচ্ছে এটিকে-মোহনবাগানের।
ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠক না করে হাবাসের ড্রেসিংরুমে ফিরে যাওয়ার ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। এই মুম্বইয়ের বিরুদ্ধেই লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ০-২ হারের পরে একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন তিনি। এর জন্য দুই লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় এটিকে-মোহনবাগানকে। সেই সঙ্গে সতর্ক করে দেওয়া হয়, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে দ্বিগুণ জরিমানা দিতে হবে। শনিবারের ঘটনার জন্য চার লক্ষ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে এটিকে-মোহনবাগানকে। এর সঙ্গে যোগ হবে আগের দুই লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, মোট ছয় লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে সবুজ-মেরুনকে। এ দিন ম্যাচের পরে কথা বলেননি এটিকে-মোহনবাগানের ফুটবলারেরাও।
এটিকে-মোহনবাগান অবশ্য এই মুহূর্তে জরিমানা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নয়। সপ্তম আইএসএলের ফাইনালে হারের যন্ত্রণায় রীতিমতো বিপর্যস্ত ফুটবলারেরা। ক্ষোভ বাড়ছে রেফারিং নিয়ে। ম্যাচের ৬০ মিনিটে হাভি হার্নান্দেসের ফ্রি-কিক মুম্বইয়ের মহম্মদ রকিপের হাঁটুতে লেগে গোলে ঢুকে যায়। কিন্তু লাইন্সম্যান গোল বাতিল করেন। তাঁর যুক্তি, অফসাইডে ছিলেন রয় কৃষ্ণ। সবুজ-মেরুনের কেউ-ই অবশ্য তা মানতে রাজি নন। তাঁদের দাবি, নায্য গোল বাতিল করা হয়েছে। মাঠের মধ্যেই প্রতিবাদ জানান রয় কৃষ্ণ, মনবীর সিংহরা। কিন্তু লাইন্সম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে গোল বাতিল করেন রেফারি। তবে মুম্বইয়ের দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা দায়ী করছেন অরিন্দম ভট্টাচার্যকে। ম্যাচের পরে মাঠের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন এটিকে-মোহনবাগানের গোলরক্ষক। তাঁকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন হাবাস ও সতীর্থরা। সপ্তম আইএসএলে এটিকে-মোহনবাগানের ফাইনালের নেপথ্যে অন্যতম কারিগর অরিন্দমও। ২৩টি ম্যাচে ৫৯টি গোল বাঁচিয়েছেন তিনি। সপ্তম আইএসএলের সেরা গোলরক্ষক হিসেবে সোনার গ্লাভসও পেলেন। কিন্তু মুম্বইয়ের কাছে হেরে ট্রফি হাতছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা হয়তো সব সময়ই কাঁটার মতো বিঁধে থাকবে অরিন্দমের মনে।