anil kumble

আলাপ ভ্রমণ সংস্থায়, প্রথম পক্ষের সন্তানকে পেতে স্ত্রীর আইনি লড়াইয়ের শরিক ছিলেন অনিল কুম্বলেও

১৯৯৯ সালে খাতায় কলমে প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল চেতনার। সে বছরই ডিভোর্স প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই কুম্বলেকে বিয়ে করেন তিনি। ৬ বছরের মেয়ে আরুণি থেকে যায় প্রথম স্বামীর কাছেই।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২০ ১১:৫২
Share:
০১ ২০

ভ্রমণ সংস্থায় গিয়েছিলেন নিজের কাজে। সেখানেই আলাপ সংস্থার কর্মী চেতনার সঙ্গে। ক্রমে আলাপ ঘনিষ্ঠ হতে বিয়ের প্রস্তাব। কিন্তু চেতনা কিছুতেই রাজি নন। সম্পর্কের উপর থেকে তাঁর বিশ্বাস চলে গিয়েছিল। প্রেমের উপর হারানো বিশ্বাস ফিরিয়ে এনে তাঁকেই বিয়ে করেছিলেন অনিল কুম্বলে।

০২ ২০

বেঙ্গালুরুর একটি ভ্রমণ সংস্থায় চাকরি করতেন চেতনা রামলিঙ্গম। প্রথম স্বামী কে ভি জাহগিরদারকে ছেড়ে চলে আসার পরেই ট্রাভেল এজেন্টের চাকরি নিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement
০৩ ২০

অসুখি দাম্পত্যে থাকতে চাননি চেতনা। যন্ত্রণা ভুলে থাকার জন্য আরও বেশি করে ডুবে থাকতেন কাজে। তাঁর একমাত্র মেয়ে রয়ে গিয়েছিল প্রথম স্বামীর কাছে। মেয়েকে নিজের কাছে আনার জন্য মরিয়া চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন তিনি।

০৪ ২০

সেই চেষ্টায় পাশে পেলেন কুম্বলেকেও। তিনি কোনও দিন তাঁকে ছেড়ে যাবেন না, চেতনাকে বুঝিয়েছিলেন কুম্বলে। ফিরিয়ে এনেছিলেন সম্পর্ক এবং প্রেমের উপরে তাঁর হারিয়ে যাওয়া আস্থা।

০৫ ২০

১৯৯৯ সালে খাতায় কলমে প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছিল চেতনার। সে বছরই ডিভোর্স প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই কুম্বলেকে বিয়ে করেন তিনি। ৬ বছরের মেয়ে আরুণি থেকে যায় প্রথম স্বামীর কাছেই।

০৬ ২০

কোনওরকম জাঁকজমক, রোশনাইয়ের বাইরে রেজিস্ট্রি ম্যারেজে জীবনসঙ্গী হিসেবে সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হন চেতনা এবং কুম্বলে। সংবাদ মাধ্যমেও তাঁদের বিয়ে নিয়ে বেশি প্রচার হোক, চাননি দু’জনেক কেউই। কারণ তাঁদের মনে হয়েছিল এতে আরুণির উপর কুপ্রভাব পড়বে।

০৭ ২০

এর পর দীর্ঘ আইনি লড়াই পেরিয়ে মেয়ে আরুণির কাস্টডি পান কুম্বলে দম্পতি। আরুণি এখন ব্যবহার করেন ‘কুম্বলে’ পদবিই। পরবর্তীতে অনিল এবং চেতনার আরও দু’টি সন্তান হয়েছে। ছেলে মায়স এবং মেয়ে স্বস্তি। ৩ সন্তানকে নিয়ে অনিল এবং চেতনার ভরপুর সংসার।

০৮ ২০

কুম্বলে যেমন চেতনার লড়াইয়ের শরিক হয়েছেন, অন্য দিকে চেতনাও স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সব ওঠাপড়ায়। তাঁকে খেলার মাঠে খুব একটা দেখা যায় না ঠিকই। কিন্তু সব টানাপড়েনে তিনিই কুম্বলের মানসিক শক্তির উৎস।

০৯ ২০

যে বেঙ্গালুরু শহরে এখন কুম্বলে দম্পতির সংসার, তার রাস্তাতেই ক্রিকেট খেলে বড় হয়েছেন কুম্বলে। আদতে তাঁদের পরিবার এসেছিল কেরল থেকে। তবে দীর্ঘ দিন থাকতে থাকতে এখন তাঁরা কন্নড়ই হয়ে গিয়েছেন।

১০ ২০

১৩ বছর বয়সে কুম্বলে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন স্থানীয় ‘ইয়ং ক্রিকেটার্স’ ক্লাবে। ক্রিকেটের পাশাপাশি পড়াশোনাও চলেছে স্বাভাবিক ছন্দে। ১৯৯১-৯২ সালে কুম্বলে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তার আগেই অবশ্য ১৯৯০ সালে জাতীয় দলে তাঁর আত্মপ্রকাশ হয়ে গিয়েছে।

১১ ২০

কুম্বলে প্রথম ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন ১৯৮৯ সালে। পরের বছরই এপ্রিলে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়ান ডে ম্যাচে জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য খুলে যায়। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট দলে সুযোগও সে বছরেই, অগস্টে।

১২ ২০

১৩২ টেস্টে এই প্রাক্তন লেগ স্পিনারের সংগ্রহ ৬১৯টি উইকেট। রান করেছেন ২৫০৬। ২৭১টি ওয়ানডেতে তাঁর শিকার ৩৩৭টি উইকেট। রান করেছেন ৯৩৮।

১৩ ২০

শুধু পরিসংখ্যান এবং রেকর্ডের অঙ্ক দিয়ে বিচার করা যাবে না ‘জাম্বো’র ক্রিকেটারজীবন। তাঁর বোলিং রান আপের জন্য এই নামেই কুম্বলেকে ডাকতেন সহযোদ্ধারা।

১৪ ২০

চেতনার সঙ্গে বিয়ে ছাড়া আরও একটি কারণে ১৯৯৯ বছরটা কুম্বলের কাছে স্মরণীয়। এই বছরেই দিল্লিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ফিরোজ শাহ কোটলায় তিনি স্পর্শ করেছিলেন জিম লেকারের রেকর্ড। একটি ইনিংসে বিপক্ষের ১০টি উইকেটই পেয়েছিলেন তিনি।

১৫ ২০

কুম্বলের লড়াকু মানসিকতার প্রতীক হয়ে আছে ২০০২ সালে অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট। ব্যাটিং করার সময় বলের আঘাতে কুম্বলের চোয়াল ভেঙে গিয়েছিল।

১৬ ২০

কিন্তু তার পরেও হার মানেনি তিনি। প্রাথমিক শুশ্রূষার পরে ভাঙা চোয়ালে ব্যান্ডেজ জড়িয়ে ১৪ ওভার বোলিং করেছিলেন তিনি। দর্শকদের স্মৃতিতে তাঁর ব্যান্ডেজ জড়ানো অবস্থায় বল করার ছবি আজও অমলিন।

১৭ ২০

২০০৮ সালের ২ নভেম্বর দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তৃতীয় টেস্টের পরে অবসর ঘোষণা করেন কুম্বলে। এর পর আইপিএল-এ অবশ্য ছিলেন তিনি।

১৮ ২০

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে কিছু মরসুমে আইপিএল খেলার পরে ২০১১ সালে কুম্বলে এই প্রতিযোগিতা থেকেও সরে দাঁড়ান। এর পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং পরে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রধান উপদেষ্টার পদেও ছিলেন তিনি। এ বছর তাঁকে দেখা গিয়েছে পঞ্জাবের কোচ হিসাবে।

১৯ ২০

২০১৬ সালে অনিল কুম্বলেকে জাতীয় দলের প্রধান প্রশিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তিনি সেই দায়িত্ব ছেড়ে দেন। মনে করা হয়, অধিনায়ক বিরাট কোহালির সঙ্গে মতান্তরের কারণেই সরে দাঁড়ান প্রাক্তন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।

২০ ২০

দীর্ঘ কেরিয়ারে কোনও দিন বিতর্কের পথে হাঁটতে চাননি কুম্বলে। জাতীয় দলের কোচ হিসেবে থাকবেন বলে মাথা হেঁট করেননি সম্মানের কাছে। চাননি বিতর্কও। থেকেছেন অমলিন, যেমন ছিলেন পাতলা সোনালি ফ্রেমের চশমা পরে ক্রিকেট খেলা শুরুর প্রথম দিন থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement