গুয়ার্দিওলা: স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে।
কার্লো আন্সেলোত্তি কি ইউরোপে ফের বায়ার্ন মিউনিখের আধিপত্য ফেরাতে পারবেন?
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এসে পেপ গুয়ার্দিওলা কি প্রমাণ করতে পারবেন তিনি যে কোনও লিগেই সমান দাপুটে?
জোসে মোরিনহো কি স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের হটসিটে বসে নতুন সোনালি অধ্যায় শুরু করবেন ক্লাবের হয়ে?
ইউরোপ জুড়ে এ রকম কয়েক কোটি পাউন্ডের প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। দলবদলের বাজার এখন ফুটবলারদের দিয়ে নয়। মজে রয়েছে ইউরোপের তিন সেরা কোচেকে নিয়ে।
কোচ বদলের এই ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’ শুরু হয় যখন বায়ার্ন মিউনিখ সরকারি ভাবে জানিয়ে দেয় পরের মরসুমে কোচ হচ্ছেন কার্লো আন্সেলোত্তি। গুয়ার্দিওলার সঙ্গে বৈঠকের পরে পরিষ্কার হয়ে যায় মরসুমে শেষে নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজছেন স্প্যানিশ কোচ। যার পরে সময় না নষ্ট করে দ্রুত আন্সেলোত্তির সঙ্গে চুক্তি করে ফেলে বায়ার্ন। তবে নতুন কোচ ঘোষণা হওয়ার পরে বায়ার্ন সমর্থকদের মেনে নিতে একটু সময় লাগে। কারণ কিছু মাস আগেই বায়ার্নকে কটাক্ষ করে আন্সেলোত্তি বলেছিলেন, ‘‘বায়ার্নের ম্যাচ দেখতে খুব বোরিং লাগে। বুন্দেশলিগায় প্রতিযোগিতা বলে কিছু নেই। খুবই সহজ বায়ার্নের জন্য।’’
তবে কোচ ঘোষিত হওয়ার পরপর সেই পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা দূরে রেখে আন্সেলোত্তি বলছেন, ‘‘যখন বায়ার্নের প্রস্তাব পেলাম তখন আর কোনও কিছু ভাবিনি। বায়ার্নের মতো ক্লাবের কোচ হতে পেরে গর্বিত। আমার বন্ধু গুয়ার্দিওলাকে বাকি মরসুমের জন্য শুভেচ্ছা জানাতে চাই।’’ নতুন কোচ বেছে নিলেও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, জার্মান ফুটবলের সঙ্গে ঠিক কতটা মানাতে পারবেন আন্সেলোত্তি? সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে আবার আন্সেলোত্তি বলছেন, ‘‘কোনও অসুবিধা হবে না আমার। আমি এখন থেকেই জার্মান ভাষা শিখছি। কিন্তু বলতে পারি খুব সহজ নয় ভাষাটা।’’
আন্সেলোত্তি: বায়ার্নের জার্সিতে।
গুয়ার্দিওলার মন্ত্র যদি সুন্দর ফুটবল হয় তবে আন্সেলোত্তির অস্ত্র হল ম্যান ম্যানেজমেন্ট। দলকে উদ্বুদ্ধ করা। আন্সেলোত্তি বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় সবথেকে কঠিন কাজ হচ্ছে ফুটবলারদের উদ্বুদ্ধ করা। চেলসি ফুটবলারদের দেখে মনে হয়নি ওরা দারুণ ভাবে তেতে আছে। মোরিনহোর চাকরি গেল। গত বার শুরু থেকে চেলসি দারুণ খেলছিল। এ বছর সম্পূর্ণ উল্টো ছিল।’’
মোরিনহো: এ বার কি ম্যান ইউয়ে?
আন্সেলোত্তি যেখানে জার্মান ক্লাস করছেন, গুয়ার্দিওলা সেখানে হয়তো আরও স্পষ্ট ইংলিশ বলার অভ্যাস করছেন। জল্পনা, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগই তো হতে চলেছে গুয়ার্দিওলার পরের চ্যালেঞ্জ। স্পেনীয় কোচকে নিয়ে আগাম ফাঁদ পেতে রেখেছিল ম্যাঞ্চেস্টার সিট়ি। প্রায় ফাঁকা মাঠে দৌড়োচ্ছিল সের্জিও আগেরোর ক্লাব। কিন্তু সেই দৌড়ে এ বার যোগ হল আরও একটা ক্লাব। চেলসি।
শোনা যাচ্ছে, গুয়ার্দিওলার স্ত্রী নাকি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন স্বামীর কোচিং কেরিয়ার নিয়ে। আসলে গুয়ার্দিওলার স্ত্রী ক্রিস্টিনা সেরা নাকি ব্যক্তিগত ভাবে লন্ডনে থাকা পছন্দ করবেন। চেলসি চাইছে, স্ত্রীকে হাত করে গুয়ার্দিওলাকে তুলে নিতে। স্প্যানিশ কোচকে নিতে এতটাই মরিয়া চেলসি যে নিজের ক্লাব কর্তাদের সাফ নির্দেশ দিয়েছেন মালিক রোমান আব্রামোভিচ— টাকার কথা না ভেবে প্রতিদিন স্প্যানিশ কোচের এজেন্টদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে। মোরিনহোকে বার্ষিকভাবে দেওয়া হত ১ কোটি ৪০ লক্ষ পাউন্ড। তার থেকে গুয়ার্দিওলাকে দ্বিগুণ টাকা দিতে রাজি আছেন আব্রামোভিচ। গুয়ার্দিওলাকে আনতে পোগবা, রয়েসের মতো ফুটবলারকে তুলে নিতে চান তিনি। যাতে গুয়ার্দিওলার হাতে ট্রফি জেতার যোগ্য অস্ত্র থাকে।
নিজের প্রিয় ক্লাব থেকে দ্বিতীয়বার বরখাস্ত হলেও খুব শীঘ্রই আবার কাজে ফিরছেন জোসে মোরিনহো। জল্পনা চলছে, হয়তো তাঁর ‘গুরু’ লুই ফান গলের হটসিটেই বসবেন ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ান।’ ম্যান ইউ কর্তাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই কথাবার্তা সেরে রেখেছেন মোরিনহো। এমনিতেও খুব খারাপ ফর্মে রয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেওয়া ছাড়াও ঘরোয়া লিগেও অপ্রত্যাশিত সব হারের মুখে পড়তে হচ্ছে ম্যান ইউকে। ফান গলকে পরের তিন ম্যাচের লাইফলাইন দেওয়া হলেও মোরিনহোকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে নিয়ে আসার লোভ ছাড়তে পারছেন না ম্যান ইউ কর্তারা। তাই দেরি না করে জানুয়ারির মধ্যেই মোরিনহোর সঙ্গে চুক্তি করতে ইচ্ছুক ম্যান ইউ।