আত্মবিশ্বাসী: উইম্বলডন জয়ের পরে প্রত্যয়ী মুগুরুজা। ফাইল চিত্র
গত চার বছরে মাত্র দু’টো ম্যাচ তিনি জিতেছেন ফ্লাশিং মেডোজে। কিন্তু উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন গারবিনে মুগুরুজা এই মুহূর্তে যথেষ্ট ভাল ফর্মে। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের খারাপ রেকর্ডটা এ বার বদলে দিতে বদ্ধপরিকর এই স্প্যানিশ তরুণী। পেত্রা কুইতোভার বিরুদ্ধে চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে নামার আগে যা বললেন তিন নম্বর বাছাই খেলোয়াড়।
প্রশ্ন: যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জিতলে আপনি তর্কাতীত ভাবে এক নম্বর হয়ে যাবেন। এটা কি আপনাকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করছে?
মুগুরুজা: আমি শুধু ম্যাচ জিততে চাই। র্যাঙ্কিং এমনিতেই ভাল হবে। আমি এখন একটা একটা ম্যাচ ধরে এগোতে চাই। কেন জানি না, নিউ ইয়র্কে গত কয়েক বছর ধরে আমি মোটেই ভাল খেলতে পারিনি। এই টুর্নামেন্টটা আমার পছন্দের, কিন্তু কিছুতেই সফল হতে পারি না এখানে।
প্র: এখনাকার অতীত রেকর্ড কি আপনাকে উদ্বুদ্ধ করে না বাড়তি চাপে ফেলে দেয়?
মুগুরুজা: এক দিক দিয়ে এই খারাপ রেকর্ড আমার ওপর চাপ কমিয়ে দিয়েছে। নিজের পর প্রত্যাশা কমে গিয়েছে। তবে এখন প্রতিটা ম্যাচ আমি ফাইনাল হিসেবে ধরে এগোচ্ছি। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে খেলতে আমি খুব ভালবাসি। এর আগে আমি দেখেছি, কোনও না কোনও কারণে ম্যাচ আমার হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। এ বার আমি এখানে আগে এসেছি। প্রস্তুতি ভাল হয়েছে, শুরুটাও ভাল হয়েছে। এখন দেখা যাক কী হয়।
প্র: কিছু দিন আগেই ভিনাস উইলিয়ামসকে হারিয়ে উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। কী ভাবে জয়ের উৎসব করেছিলেন?
মুগুরুজা: জয়ের উৎসবটা খুব সংক্ষিপ্ত হয়েছিল। ম্যাচটা নিয়ে এত টেনশন ছিল, জেতার পরে এত সাক্ষাৎকার দিতে হল...সব মিলিয়ে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমার টিমের সঙ্গে একটা স্প্যানিশ রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলাম, একটু ওয়াইন খেয়েছিলাম। তার পর তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ি। পরের দিন ম্যাচের রিপ্লেটা একটু দেখি। কয়েকটা পয়েন্ট দেখেছিলাম আর কী ভাবে জয়ের পরে কোর্টে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলাম, সেটা আবার দেখি। আসলে জেতার পরে কোর্টে কী করেছিলাম, সেটা ভুলে গিয়েছিলাম।
প্র: আপনিই প্রথম খেলোয়াড় যিনি কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উইলিয়ামস বোনেদের হারিয়েছেন (সেরিনাকে হারান ফরাসি ওপেনে, ভিনাসকে উইম্বলডনে)। এটা আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
মুগুরুজা: এই তথ্যটা আমার কাছে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোনও ফাইনালে উইলিয়ামস বোনেদের হারানোটা একটা বাড়তি কৃতিত্বের। ওরা এতটাই ভাল। আমি আরও একটা দিক দিয়ে ব্যাপারটা দেখি। ওদের হারানো মানে বিশ্বকে বুঝিয়ে দেওয়া, ওই টুর্নামেন্টে আমিই সেরা খেলোয়াড়।
প্র: গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালের আগে আপনার মনের অবস্থা কী রকম থাকে?
মুগুরুজা: আমি চেষ্টা করি আত্মবিশ্বাসী থাকার। কিন্তু আসলে আমি ভীযণ নার্ভাস হয়ে পড়ি, এমনকী টেনশনে কাঁপতেও থাকি। কোর্টে নামার আগের এই অপেক্ষাটা মারাত্মক। একবার কোর্টে নেমে পড়লে আমি জানি, কী করতে হবে। জেতার জন্য তখন মরিয়া হয়ে উঠি। ফাইনালে উঠে হেরে যাওয়ার যন্ত্রণা কী, তা আমি জানি।
প্র: আপনি এখন দু’টো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন। আরও জেতার জন্য নিশ্চয়ই মুখিয়ে আছেন?
মুগুরুজা: অবশ্যই। আপনি যখন একটা ট্রফি জিতবেন, তখন পরেরটা জেতার জন্য আরও মরিয়া হয়ে উঠবেন। এটা একটা নেশার মতো।
প্র: আপনি এখন স্পেনেও যেমন একজন হিরো, বিশ্ব জুড়ে ছোট ছোট মেয়েরাও আপনার থেকে প্রেরণা খোঁজে। কী ভাবে দেখছেন ব্যাপারটা?
মুগুরুজা: অবশ্যই এটা একটা খুব ভাল অনুভূতি। যখন কোনও বাচ্চা সামনে এসে বলে, আমি তোমার মতো হতে চাই, তখন খুবই ভাল লাগে। অন্যদের উদ্দীপিত করতে পারাটা আমার একটা কাছে একটা বিশেষ অনুভূতি।