প্রস্তুতি: ইস্টবেঙ্গলের জিমে জনি আকোস্তা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
কলকাতা লিগও তাঁদের চাই, লাল-হলুদ কর্তারা এই বার্তা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সুভাষ ভৌমিকের সব অঙ্কই ওলট-পালট। স্বঘোষিত ভাবনারও জলাঞ্জলি।
আর তারই জেরে সিরিয়ান মিডিয়ো আল আমনাকে আজ মঙ্গলবার শক্তিশালী পাঠচক্রের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নামিয়ে দিচ্ছেন ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। টিডি সুভাষ ঠিক করেছিলেন, আই লিগের কথা ভেবে কলকাতা লিগের বেশির ভাগ ম্যাচে বিশ্রাম দেবেন আমনাকে। তার সেই অবস্থান বদলে ফেলছেন তিনি।
কিন্তু পোড় খাওয়া সুভাষ মচকান, তবু ভাঙেন না গোছের মানুষ। তাই সোমবার সকালে অনুশীলনের পর তাঁর মুখ থেকে ‘আমনাকে শুরু থেকেই খেলাব’ এই বক্তব্য বেরোয়নি। বেরিয়েছে, ‘‘আমি আমনাকে শুরু থেকে খেলাব না এ রকম কোনও ধর্নুভঙ্গ পণ কখনও করিনি।’’ সে জন্যই নিজেদের মধ্যে অনুশীলন ম্যাচে এ দিন হাতে থাকা দুই বিদেশি কাশিম আইদারার সঙ্গে আল আমনাকে মাঝমাঠে খেলিয়েছেন সুভাষ।
কলকাতা লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র হওয়ার পরই সুভাষকে শুনতে হয়েছে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। অগ্নিগর্ভ ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে সদস্য সমর্থকদের সামলাতে নামাতে হয়েছিল পুলিশও। সেই দৃশ্যের যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য শুধু আমনা নয়, দলে আরও দুটো পরিবর্তন করছে ইস্টবেঙ্গল।
পরপর দু’ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যর্থ বালি গগনদীপকে রিজার্ভ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার জায়গায় স্ট্রাইকারে নামানো হবে জোবি জাস্টিনকে। আর চোট পাওয়া লালরিন্দিকা রালতের (ডিকা) জায়গায় শুরু থেকেই নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্র্যান্ডনকে। লালরিন্দিকা এ দিন অনুশীলন করেননি। তাঁর যা চোট তাতে দশ-বারো দিনের আগে মাঠে ফেরা কঠিন। লিগের প্রথম দুটি ম্যাচে বিরতির পর আমনা এবং ব্র্যান্ডনকে নামানোর পর ইস্টবেঙ্গলের খেলায় ঝাঁঝ বেড়েছিল। চাপের মুখে সুভাষ সেটাই নিয়ে আসছেন শুরুতে।
এ দিন ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে ছিল প্রয়াত সচিব পল্টু দাসের জন্মদিন উপলক্ষ্যে নানা অনুষ্ঠান। সকাল থেকেই তাই গ্যালারিতে হাজির ছিলেন প্রচুর সদস্য-সমর্থক। তাদের অনেককে এ দিনও দেখা গিয়েছে আগুনে মেজাজে। পাঠচক্র এ বারের লিগের অন্যতম শক্তিশালী দল। সেই দলের সঙ্গে জিততে না পারলে যে সমস্যা বাড়বে তা জানেন তিন বার আই লিগ জয়ী কোচ সুভাষ। পাঠচক্রে শুধু নেদারল্যান্ডসের কোচই নন, তিন জন ভাল বিদেশি আছে। জিম্বাবোয়ের ভিক্টর কামুকার সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার আন্তো পেইচ এবং জাপানের ফুতা নাকামোরারা অনেক হিসেবই উল্টে দিতে পারেন। এঁদের সঙ্গে বড় দলে খেলা দুই অভিজ্ঞ ফুটবলারও আছেন। এঁরা হলেন লালকমল ভৌমিক এবং স্নেহাশিস চক্রবর্তী। মোহনবাগানের কাছে হারের পর মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যের টালিগঞ্জ অগ্রগামীকে চার গোল দিয়েছে পাঠচক্র। তার মধ্যে দুটো গোলও করেছেন তাদের ক্রোয়েশিয়ান স্ট্রাইকার পেইচ। কল্যাণীতে অনুশীলনের পর পাঠচক্র কোচ বলে দিয়েছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের আল আমনাই খেলাটা তৈরি করে। ওর জন্য আমাদের আলাদা পরিকল্পনা আছে।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা যত কম ভুল করব তত সফল হব।’’
ইস্টবেঙ্গলে সই করা কোস্টা রিকার বিশ্বকাপার জনি আকোস্তা আজকের ম্যাচেও নেই। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলা স্টপার জনি এ দিন সকালে নেমে পড়েছেন অনুশীলনে। তবে আমনাদের সঙ্গে মাঠে নয়, জিমেই ছিলেন সারাক্ষণ। ক্লাবের শীর্ষ কর্তারা জানাচ্ছেন, দু’চার দিনের মধ্যেই তাঁর সব কাগজপত্র এসে যাবে। লিগ
ম্যাচও খেলবেন।
মঙ্গলবার কলকাতা লিগে
ইস্টবেঙ্গল: পাঠচক্র (ইস্টবেঙ্গল মাঠে ৪-৩০)