নিজেকে খরচ করার স্কিলও শিখিয়ে গেল দেল পিয়েরো

দিল্লি ফ্রি-কিক পেলে দেল পিয়েরো। দিল্লি কর্নার পেলে দেল পিয়েরো। দিল্লির থ্রো হলেও সেটা নিতে সাইডলাইনে দেল পিয়েরো। জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে অনেক দিন পর কোনও ফুটবল ম্যাচ হল। এবং প্রায় ভর্তি গ্যালারি থেকে সবচেয়ে বেশি হাততালি আর চিত্‌কার উঠল ম্যাচের সাঁইত্রিশ মিনিটে। যখন রিজার্ভ বেঞ্চে এতক্ষণ বসে থাকা ইতালিয়ান কিংবদন্তি ফরোর্য়াড উঠে দাঁড়িয়ে জার্সির উপরের ভেস্ট-টা খুলে সামান্য ওয়ার্ম আপের পর মাঠে নামল।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১২
Share:

খেলার শেষে মাঠে অন্য ম্যাচ। তারকা যেখানে সানিয়া মির্জা।

দিল্লি ডায়নামোস-০
পুণে সিটি-০

Advertisement

দিল্লি ফ্রি-কিক পেলে দেল পিয়েরো। দিল্লি কর্নার পেলে দেল পিয়েরো। দিল্লির থ্রো হলেও সেটা নিতে সাইডলাইনে দেল পিয়েরো।

Advertisement

জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে অনেক দিন পর কোনও ফুটবল ম্যাচ হল। এবং প্রায় ভর্তি গ্যালারি থেকে সবচেয়ে বেশি হাততালি আর চিত্‌কার উঠল ম্যাচের সাঁইত্রিশ মিনিটে। যখন রিজার্ভ বেঞ্চে এতক্ষণ বসে থাকা ইতালিয়ান কিংবদন্তি ফরোর্য়াড উঠে দাঁড়িয়ে জার্সির উপরের ভেস্ট-টা খুলে সামান্য ওয়ার্ম আপের পর মাঠে নামল।

দেল পিয়েরোর প্রথম আইএসএল ম্যাচ দেখে মনে হচ্ছে, টুর্নামেন্টে ও নিজেকে এ রকম বুদ্ধি করেই খরচ করবে। বরাবর স্কিলের চেয়ে বেশি মস্তিষ্ক ব্যবহার করা ফুটবলার। অবসর নেওয়ার পর ৩৯ বছরে ভারতীয় লিগে খেলতে এসে হয়তো এ ভাবেই কোনও ম্যাচে শেষ এক ঘণ্টা খেলবে, অথবা কোনটায় প্রথম ষাট মিনিট। যাতে ক্লান্তির শিকার না হয়, যাতে মার্কি ফুটবলার হয়ে দলের বোঝা না হয়ে ওঠে।

শুধু ফুটবল স্কিল কেন, আইএসএলে জগদ্বিখ্যাত বিদেশি ফুটবলারদের থেকে এগুলোও আমাদের ছেলেদের শেখার কী ভাবে টিমের কাছে নিজেকে সবচেয়ে বেশি উপযোগী রাখব!

পুণের ত্রেজেগুয়ে আবার পুরো তিরানব্বই মিনিটই মাঠে থাকল। জুভেন্তাসে দীর্ঘ এক যুগ দেল পিয়েরোর এই ফরাসি সুপারস্টার সঙ্গী বয়সে তিন বছরের মাত্র ছোট। ক্লাব পর‌্যায়ে সম্ভবত প্রথম বার বন্ধুর মুখোমুখি হয়ে তার মতোই বুঝিয়ে গেল, ফুটবলারের জাতের বয়স কখনও বাড়ে না। দেল পিয়েরো আর ত্রেজেগুয়ে একটা মোটামুটি নীরস গোলশূন্য ড্র ম্যাচে যে ভাবে বল ধরে খেলল, যে ভাবে বারবার জায়গা বদল করল, উইথ দ্য বল গতির হেরফের ঘটাল, যে ভাবে পাস দেওয়া-নেওয়া করল, তাতে দিল্লি বা পুণের পরের ম্যাচগুলোতেও দর্শকের ভিড় প্রায় অনিবার্য।


দেল পিয়েরোদের লড়াই।

দেল পিয়েরো যদি সতীর্থ ড্যানিশ ফরোয়ার্ড য়ুনকার কিংবা ইনজুরি টাইমেও তরুণ ব্রাজিলিয়ান গুস্তাভো সান্তোসের (শটটা শেষ মুহূর্তে পোস্টে লেগে দিল্লির নিশ্চিত তিন পয়েন্ট পাওয়া আটকে দেয়।) জন্য গোলের বল বাড়িয়ে থাকে এ দিন, তা হলে উল্টো দিকে ত্রেজেগুয়ে নিজেই দু’-তিনটে ভাল শট নিয়েছিল। যার একটা গোলেও ঢুকেছিল, কিন্তু সম্ভবত তার আগেই ফাউল করায় কলকাতা ময়দানের বাঙালি রেফারি প্রাঞ্জল বন্দ্যোপাধ্যায় গোল নাকচ করেন। সাহসী সিদ্ধান্ত। বিশ্ব ফুটবলের মেগাতারকাদের প্রাঞ্জল গোটা ম্যাচ সামলালেনও ভাল।

ইন্ডিয়ান সুপার লিগ শুধু ভারতীয় ফুটবলারদেরই বিদেশি তারকা প্লেয়ারদের সঙ্গে নিয়মিত গা ঘষাঘষি করার সুযোগ করে দিয়ে তাদের হীনমন্যতা কাটিয়ে দিতে পারে, তাই-ই নয়। এ দেশের রেফারিদেরও হয়তো সাহসী করে তুলবে। ভারতীয় ফুটবলারদের মতো ভারতের রেফারিংয়ের মানও হয়তো উন্নত করবে ভবিষ্যতে।

তিন দিনে তিন শহরে তিন ম্যাচেই গ্যালারিতে বিনোদন জগতের সেলিব্রিটিদের উজ্জ্বল উপস্থিতি দেখলাম। কিন্তু তার চেয়েও যেন বেশি উজ্জ্বল মাঠের ভেতরের ফুটবল ম্যাচটা। আইএসএলের সংগঠকদের মূল উদ্দেশ্যঘুমন্ত ভারতীয় ফুটবলে ধামাকা বোধহয় সফল হতে চলেছে।

ছবি: পিটিআই

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement