ফুরফুরে: সহকারীকে কেক খাওয়াচ্ছেন আলেসান্দ্রো। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
বুধবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন সংলগ্ন মাঠে ইস্টবেঙ্গল অনুশীলনে ব্যতিক্রমী দৃশ্য। ফুটবলারদের নিয়ে সহকারী কোচেরা মাঠে নেমে পড়েছেন। দেখা নেই প্রধান কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়ার। অথচ, এ-দিন থেকেই তাঁর অনুশীলনে যোগ দেওয়ার কথা। কোথায় গেলেন লাল-হলুদ কোচ?
সকাল ন’টা চল্লিশ নাগাদ যুবভারতীতে এলেন আলেসান্দ্রো। বুধবার সকালেই স্পেন থেকে কলকাতায় পা দিয়েছেন তিনি। বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি চলে এসেছেন যুবভারতীতে। দীর্ঘ বিমানযাত্রার ক্লান্তির ছাপ যদিও নেই তাঁর চোখে-মুখে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উন্মাদনার মধ্যে দিয়ে ড্রেসিংরুমে ঢুকলেন আলেসান্দ্রো। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তৈরি হয়ে নেমে পড়লেন মাঠে। সহকারী কোচ জোসেফ ফেরে (কোকো)-ই এত দিন অনুশীলন করিয়েছেন। তা-ই প্রথমেই তাঁর কাছ থেকে খোঁজ-খবর নিলেন ফুটবলারদের। এর পরে অনুশীলন ম্যাচে দেখে নিলেন লালরিনডিকা রালতে, কাশিম আইদারা, বোরখা গোমেস পেরেস-দের। অনুশীলনের পরে কেকও কাটলেন আলেসান্দ্রো।
সামনেই কলকাতা লিগ ও ডুরান্ড কাপ। কতটা তৈরি দল? আলেসান্দ্রো অনুশীলনে যোগ দিয়েই লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছেন। লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচের কথায়, ‘‘আই লিগ ও সুপার লিগ আমাদের প্রধান লক্ষ্য। ১০ জুলাই থেকে অনুশীলন শুরু হয়েছে। প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে।’’ জবি জাস্টিন এটিকে-তে চলে গিয়েছেন। এনরিকে এসকুয়েদাকে গত মরসুমে আই লিগ শেষ হওয়ার আগেই দল থেকে ছেঁটে ফেলেছিলেন। তার পর থেকেই ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্ট্রাইকার কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। আলেসান্দ্রো জানিয়েছিলেন, নতুন স্ট্রাইকার তিনি নিজেই নির্বাচন করবেন। শোনা গিয়েছিল, স্পেন থেকে এক জন স্ট্রাইকার নিয়ে কলকাতায় ফিরবেন লাল-হলুদ কোচ। যদিও তিনি বুধবার তিনি একাই এলেন। নতুন স্ট্রাইকার কবে আসবেন? আলোসান্দ্রো বলছেন, ‘‘চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি, দ্রুতই নতুন স্ট্রাইকার দলে যোগ দেবে।’’
কলকাতা লিগে ইস্টবেঙ্গল অভিযান শুরু করছে ৩১ জুলাই। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষ জর্জ টেলিগ্রাফ। ডুরান্ড কাপে আর্মি (রেড) দলের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচ ৩ অগস্ট। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে দু’টো ম্যাচ হওয়ায় ক্ষুব্ধ আলোসান্দ্রো বললেন, ‘‘কোনও পেশাদার দল মাত্র তিন দিনের মধ্যে দু’টো ম্যাচ খেলতে পারে না। এই ধরনের ক্রীড়াসূচি বিপর্যয় ডেকে আনবে।’’
ডুরান্ড কাপে খেলা নিয়ে লাল-হলুদ শিবিরের অন্দরমহলে ফের সংঘাত শুরু হয়ে গিয়েছে। ক্লাবের কর্তারা চান পূর্ণশক্তির দল পাঠাতে। কিন্তু ফুটবল দলের দায়িত্বে থাকা বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, কোচ চান ডুরান্ড কাপে অনূর্ধ্ব-১৯ দল পাঠাতে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ ডুরান্ড কাপের আয়োজকেরাও। এ দিন আলোসান্দ্রো খোলাখুলি বললেন, ‘‘সব প্রতিযোগিতায় আমরা যেমন খেলব, তেমনই ফুটবলারদের কথাও ভাবতে হবে। মনে রাখতে হবে, অ্যাকাডেমির ফুটবলারেরা শুধু অনুশীলন করার জন্য নয়। ওদের খেলতেও দিতে হবে।’’
কয়েক দিন আগেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবুতে ভাইচুং ভুটিয়া লাল-হলুদ জার্সিতে ফের মাঠে নেমে সরকারি ভাবে ক্লাব ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। যদিও ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার বলেছিলেন, আলেসান্দ্রো অনুমতি দিলেই মাঠে নামবেন। স্প্যানিশ কোচ কি লাল-হলুদ জনতার নয়নের মণিকে ফের মাঠে নামার সুযোগ দেবেন? আলোসান্দ্রো বললেন, ‘‘সবে কলকাতায় পৌঁছলাম। আমার লক্ষ্য দলটাকে তৈরি করা। অন্য কোনও বিষয় নিয়ে মন্তব্য করব না।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।