টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রানের মালিক হওয়ার আগে নেটে কুক। বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।
রেকর্ডটার থেকে মাত্র ৩২ রান দূরে তিনি। ওই ক’টা রান করতে পারলেই গ্রাহাম গুচের ৮৯০০ রান টপকে হয়ে উঠবেন টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক। তবু হেডিংলে টেস্টের আগের দিন অ্যালিস্টার কুক বলে দিচ্ছেন, ‘‘রান যে যতই করুক না কেন, গ্রাহাম গুচ এক জনই হয়!’’
গুচের সঙ্গে কুকের তুলনায় এই মুহূর্তে মেতে আছে ব্রিটেন। প্রাক্তন ক্যাপ্টেনের পাশে বর্তমান ক্যাপ্টেনের কেরিয়ার রেখে কাটাছেঁড়া করে তুলে আনা হচ্ছে নানা হিসাব। ব্রেন্ডন ম্যাকালামদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে ১৬২ করে ইংল্যান্ডকে ১২৪ রানে জিতিয়েছেন কুক। এ বার যদি হেডিংলের দ্বিতীয় টেস্টেই ওই ৩২ টা রান করে ফেলেন তা হলে গুচের রান তিনি অতিক্রম করবেন ১১৪ টেস্টে। গুচ যেখানে নিয়েছিলেন ১১৮ টেস্ট। আবার এটাও বলা হচ্ছে যে, কুক কম টেস্টে রানটা করলেও গুচের মতো বিশ্বের সর্বকালের সেরা বোলারদের বিরুদ্ধে খেলতে হয়নি তাঁকে।
কুক অবশ্য এ সব আলোচনার একটাও কানে তুলতে নারাজ। বলেছেন, ‘‘গুচির রেকর্ড পেরিয়ে যেতে পারলে ক্রিকেট জীবনের একটি মধুর মুহূর্ত তৈরি হবে। তবে নিজেকে কোনও দিনই ওর মাপের ব্যাটসম্যান বলে মনে করতে পারব না। গ্রাহাম গুচ একটাই হয়। ও-ই ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান।’’
তাঁর নিজের কেরিয়ারে গুচের অবদান বিশাল জানিয়ে কুকের বক্তব্য, নিজেকে বড়জোর গুচের সাগরেদ বলতে রাজি তিনি।
‘‘গুচি যদি আমাকে ব্যাটিং নিয়ে সাহায্য না করত, তা হলে আজ আমি ক্রিকেটার হিসাবে এই জায়গায় তো নয়ই, এই জায়গার ধারেকাছেও পৌঁছোতে পারতাম না,’’ বলেছেন কুক। তার পর যোগ করেছেন, ‘‘আঠারো বছর বয়সে এসেক্সের হয়ে খেলা শুরু করার সময় থেকেই গুচি আমার পাশে থেকেছে। তার পর নিজের খেলার বিভিন্ন দিকের উন্নতি ঘটাতে অনেকের কাছে কোচিং নিয়েছি। কিন্তু প্রয়োজনে বা সমস্যায় পড়লে এক জনের কাছেই ফিরে গিয়েছি বার বার। কারণ সেই মানুষটা আমার খেলার শক্তি, দুর্বলতা—সবটা জানে। আর সে গুচি।’’
সেই জন্যই কি গুচের রেকর্ড ভাঙার সামনে দাঁড়িয়ে একটু যেন অস্বস্তিতে কুক? তাঁর কথাতেই, ‘‘গুচির রেকর্ডটা যদি ভাঙি, বেশ অদ্ভুতই লাগবে। কারণ আমার খেলা মেজেঘষে দিতে ও যদি এগিয়ে না আসত, আমার খেলায় উন্নতি ঘটানোর জন্য যদি নিজে পরিশ্রম না করত, তা হলে আজ টেস্ট ক্রিকেটে আমার নামের পাশে যতগুলো রান দেখছেন, তার অর্ধেকও করে উঠতে পারতাম না।’’
কাল থেকে শুরু দ্বিতীয় টেস্টে কুক নিজের গুরুকে টপকে যেতে পারবেন কি না, সেটা দেখার। প্রথম টেস্টের বড় সেঞ্চুরির পর ট্রেন্ট বোল্টদের পাল্টা দেওয়ার জন্য তাঁর দিকেই তাকিয়ে দল। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক ম্যাকালামও এ দিন বলেছেন, ‘‘কুক এখন দারুণ পরিণত। ও সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যেখানে গোটা টিম ওর নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে। ওর পরিসংখ্যানই বলে দেয় ও কত বড় ক্রিকেটার।’’
কুক নিজে অবশ্য বলছেন, নাইট রাইডার্স আর নিউ সাউথ ওয়েলসের কোচ ট্রেভর বেলিসকে পাশে পেয়ে গোটা ইংল্যান্ড টিম দারুণ তেতে। বলেছেন, ‘‘ট্রেভরকে পাশে পাওয়াটা ইংল্যান্ড টিমের জন্য একেবারে সামরিক অভ্যুত্থানের মতোই সাড়া ফেলা কাণ্ড। সব ধরনের ক্রিকেটে ওর অভিজ্ঞতা আর কোচ হিসাবে সাফল্য আমাদের সাহায্য করবে।’’