ছবি: সংগৃহীত।
ভারতের তিনটে নেটে পর পর রোহিত শর্মা, অজিঙ্ক রাহানে এবং বিরাট কোহালি।
নেট প্র্যাকটিসের ব্যাটিং অর্ডার যদি ইঙ্গিতবাহক হয়, তা হলে রবিবারের ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ওয়ান ডে সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে রাহানে আবার ফিরছেন ওপেনিংয়ে।
সাংবাদিক বৈঠকে রোহিত শর্মাও বলে গেলেন, ‘‘শিখর ধবনের জায়গায় রাহানে অবশ্যই ওপেনার হিসেবে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় আছে। তবে আমাদের এই টিমের একটা বিশেষত্ব হল, যে কোনও ব্যাটসম্যান যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে পারে।’’
স্ত্রীর অসুস্থতার জন্য শিখর ধবন সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে সরে দাঁড়ানোয় রাহানের সামনে আবার ওয়ান ডে-তে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার একটা সুযোগ এসে গিয়েছে। ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে যে সুযোগ আর খুব বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না।
ভারতীয় দলে নতুন করে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার যে লড়াইয়ে রাহানের সঙ্গী হতে চলেছে তিনটি অস্ত্র। এক, শ্রীলঙ্কা সফরের পর থেকে হাড়ভাঙা খাটুনি। দুই, ‘মনোবিদ’ সচিন তেন্ডুলকরের টোটকা। এবং তিন, স্টান্সে সামান্য পরিবর্তন।
শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরার পরে রাহানের লড়াই শুরু হয়ে যায় তাঁর দীর্ঘদিনের কোচ প্রবীণ আমরের ক্লাসে। যে ক্লাসে অবশ্য টেকনিক্যাল রদ বদলের চেয়ে বেশি ফোকাস করা হয়েছে মানসিক শক্তির ওপর। কিন্তু ছোট একটা ‘টেকনিক্যাল অ্যা়ডজাস্টমেন্ট’ও করেছেন রাহানে। কী সেটা? মুম্বই থেকে আমরে ফোনে বললেন, ‘‘স্টান্সে সামান্য পরিবর্তন আনছে অজিঙ্ক।’’ কী সেটা, ভেঙে বলতে চাইলেন না রাহানের কোচ। তবে এটুকু আঁচ পাওয়া গেল, পায়ের পজিশনে সামান্য বদল এনেছেন রাহানে। যাতে অফসাইডে আরও বেশি মসৃণতা আসে।
আমরে অবশ্য আরও বেশি জোর দিয়েছেন তাঁর ছাত্রের ফোকাসকে পাঁচ দিনের ক্রিকেট থেকে এক দিনের ক্রিকেটে ফিরিয়ে আনতে। ‘‘শ্রীলঙ্কা সফরে ও টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিল, কিন্তু ওয়ান ডে ম্যাচটায় রান পায়নি। আসলে ও ঠিক মতো ফোকাস করতে পারেনি। এটা হয়। এক জন দলের বাইরে থাকা অবস্থায় দুম করে সুযোগ পেলে সমস্যা হতেই পারে। আমাদের সেটাই এ বার দূর করার চেষ্টা করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: চেন্নাইয়ে মহড়া শুরু যুযুধান দুই শক্তির, উড়বে কি বিতর্কের আগুন
সচিন যে দিন রাহানের নেটে ঘুরে গেলেন, সে দিন কী হল? জানা যাচ্ছে, সে দিন মোটামুটি ‘মোটিভেশনাল সেশন’ই হয়েছে। আমরে বলছিলেন, ‘‘সচিন যদি এসে আপনাকে উদ্বুদ্ধ করে, তার চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে? জীবন্ত কিংবদন্তি সামনে দাঁড়িয়ে কাউকে তাতালে তার খেলা তো এমনিতেই ভাল হয়ে যাবে।’’
শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ফিরে এসে একটা দিনও অনুশীলন বন্ধ রাখেননি রাহানে। তা সে জিম হোক বা প্র্যাকটিস সেশন। আমরে বলছিলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে আমরা তৈরি হওয়ার একটা সুযোগ পেলাম। সামনে তিনশো বল খেলার সুযোগ থাকলে কী ভাবে নিজেকে সেট করতে হবে, সেটাই আমাদের প্রস্তুতির ফোকাস ছিল।’’ রাহানের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ, তিনি নাকি মিডল অর্ডারে নামলে উপমহাদেশের উইকেটে সে ভাবে স্ট্রাইক রোটেট করতে পারেন না। স্বয়ং মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যে অভিযোগটা করেছিলেন অধিনায়ক থাকার সময়। আমরে এ সব নিয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও জানা যাচ্ছে, মিডল ওভারে স্ট্রাইক রোটেট করে ব্যাট করাটাও প্রস্তুতির অঙ্গ ছিল।
শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে পাঁচটি ওয়ান ডে-তে ওপেন করতে নেমে ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছিলেন রাহানে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যদি আবার মিডল অর্ডারে ঠেলে দেওয়া হয় তাঁকে, সমস্যা হবে না? কোচ আমরে মনে করছেন, হবে না। ‘‘অজিঙ্ক সে ভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে। টিম ম্যানেজমেন্ট যেখানেই ওকে খেলাক না কেন, অজিঙ্ক ঠিক মানিয়ে নিতে পারবে।’’
বোঝাই যাচ্ছে, রাহানে কিন্তু নতুন করে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার লড়াইয়ে পুরো তৈরি হয়েই নামছেন ময়দানে।