ফাইল চিত্র।
অজিঙ্ক রাহানে কি রান পেলেন? তাঁর ব্যাট করার ভঙ্গিতে কি দল উপকৃত হচ্ছে? এ ধরনের প্রশ্ন উঠতেই থাকে তাঁকে নিয়ে। এমনকি দেশের হয়ে টেস্টে ১২টি সেঞ্চুরি-সহ ৪৭১৪ রান করা সত্ত্বেও প্রশ্ন ওঠে, তিনি কি প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য?
প্রত্যেক বারই তিনি তার জবাব দেন। জবাব আসে ব্যাট থেকেই। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত যখন ৫৫-৩, সেই পরিস্থিতি থেকে চেতেশ্বর পুজারার সঙ্গে ১০০ রানের জুটি গড়েন রাহানে। ৬১ রান করে ম্যাচে ফেরান ভারতকে।
সোমবার ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এত সমালোচনার মধ্যেও কী ভাবে মাথা ঠিক রেখে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস গড়া সম্ভব? সমালোচনাই কি তাঁকে ভাল খেলতে অনুপ্রাণিত করে? তৃতীয় টেস্টের দু’দিন আগে ‘ভার্চুয়াল’ সাংবাদিক বৈঠকে রাহানের উত্তর, ‘‘আমাকে নিয়ে যে এত কথা হচ্ছে, তাতে খারাপ লাগছে না। বরং আমি খুশি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নিয়েই আলোচনা হয়। এ বিষয়ে চিন্তা করি না।’’ যোগ করেন, ‘‘দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাচ্ছি, এর চেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আর কিছু হয় না। মাঠের বাইরে কী হচ্ছে, তাতে কান দিলে প্রভাব পড়বে খেলায়। কী করলে দল উপকৃত হচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত সাফল্য নিয়ে আমরা ভাবি না।’’
লর্ডস টেস্টের চতুর্থ দিন বিরাট কোহালি ফিরে যাওয়ার পরেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের উপরে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেন জেমস অ্যান্ডারসন, মার্ক উডরা। সেই মুহূর্তে আরও একটি উইকেট পড়লে ভারত আদৌ ম্যাচে ফিরতে পারত কি না, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না।
রাহানে ও পুজারাও জুটি গড়ার সময় বিপক্ষের চাপ অনুভব করেছেন। দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছিল যা-ই হোক, আউট হওয়া চলবে না। যে প্রসঙ্গে তিনি আরও পরিষ্কার করে বললেন, ‘‘যতটা সম্ভব ক্রিজ়ে সময় কাটাতে চেয়েছিলাম আমরা। পুজারা ও আমি আগেও এ ধরনের পরিস্থিতিতে ব্যাট করেছি। পুজারার খেলার ধরন নিয়েও অনেক কথা হয়। অনেকেই মনে করেন, মন্থর গতিতে ইনিংস সাজায় ও। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে দু’শোর উপরে বল খেলে দেওয়াই ছিল আসল লক্ষ্য। পুজারা খুব ভাল ভাবে সেই দায়িত্ব পালন করেছে। আমাকে বলেছিল স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলতে। নিজেও সেটাই করছিল।’’
২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরের ছবিও ঠিক এমনই ছিল। দু’টি টেস্ট শেষে ১-০ এগিয়ে ছিল ভারত। কিন্তু সেখান থেকে সিরিজ় জিততে পারেননি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তবে বর্তমান ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির দল আত্মবিশ্বাসী। সিরিজ় জিতে ফেরার জন্যও মরিয়া। শেষ দু’বারের চেয়ে এই ভারতীয় দলের ক্রিকেটারেরা অভিজ্ঞ। তাই জেতার বিষয়ে প্রত্যেকে অনেক বেশি ইতিবাচক। রাহানের কথায়, ‘‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের সিরিজ় এখন অতীত। আমরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভাবি। আগেই বলেছিলাম, একটি করে টেস্ট ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। আগেরটা জিতেছি। এ বার নতুন ম্যাচ, নতুন পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে হবে।’’
হেডিংলে টেস্টে পেসারদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানোর কি কোনও সম্ভাবনা আছে? রাহানের জবাব, ‘‘বেশ কয়েক দিন বিশ্রাম পেয়েছে পেসাররা। প্রত্যেকেই তৈরি।’’