লিগ জট কাটাতে আই লিগের ক্লাবগুলির কোর্টেই বল ঠেলল ফেডারেশন। এবং সে জন্য কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার রাস্তা নিচ্ছে তারা।
আই লিগের ক্লাবগুলি কী চায়, তা ঠিক করতে লিগ সাব কমিটির সভা ডাকা হচ্ছে। শনিবার দিল্লি থেকে ফোনে ফেডারেশন সচিব কুশল দাস বলে দিলেন, ‘‘লিগ সাব কমিটির চেয়ারম্যানকে বলেছি সভা ডেকে ক্লাবগুলির সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাতে।’’ মজার ব্যাপার হল, ওই কমিটির চেয়ারম্যান আবার ফেডারেশন ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলার সুব্রত দত্ত। যিনি আইএসএলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দুই প্রধানকে প্রকাশ্যেই মদত দিয়ে আসছিলেন। নানা পরামর্শ দিচ্ছিলেন। তাঁকেই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দিয়ে পাল্টা চাল দিলেন সচিব। বোঝাই যাচ্ছে তিনি দেখতে চান, বিদ্রোহী দুই প্রধানকে কীভাবে সামলান সুব্রত।
আইএসএলে কলকাতার দুই প্রধানের আর খেলার কোনও সুযোগ নেই জানিয়ে দিয়েছেন ফেডারেশন সচিব। জানা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান যে সব দাবি নিয়ে লড়াই চালাচ্ছিল তার একটিও মানতে রাজি হচ্ছে না নীতা অম্বানীর কোম্পানির কর্তারা। উল্টে ফেডারেশনের মাধ্যমে আইএমজি-আর নানা শর্ত দিচ্ছে ক্লাবগুলিকে। কুশলবাবু বললেন, ‘‘ক্লাবগুলি আইএসএলের পাশাপাশি আই লিগ খেলতে চায় কী না জানাক। যদি না চায় তা হলেও জানাক। আমরা কর্মসমিতির সভা ডেকে সিদ্ধান্ত জানাব।’’
দুই প্রধানের কর্তারা চাইছিলেন, আইএসএল চ্যাম্পিয়নকে যেন এএফসির কোনও টুনার্মেন্টে খেলার সুযোগ না দেওয়া হয়। তা মানা হচ্ছে না। ফেডারেশন চাইছে, আই লিগ ও আইএসএল— দুই লিগের চ্যাম্পিয়নরা খেলুক এএফসির দুটো টুনার্মেন্টে। ‘‘লিগের টিমগুলি আমাদের জানাক ওরা এ এফ সি-র কোন টুনার্মেন্ট খেলতে চায়,’’ বলে দিয়েছেন কুশল। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘দুই লিগের প্রথম চারটে দলকে নিয়ে যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কথা হচ্ছিল তা করা সম্ভব নয়। অত টাকা খরচ করতে রাজি নয় স্পনসররা।’’
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ না হলেও সুপার কাপ নামে একটি দশ-বারো দিনের টুনার্মেন্ট করার কথা ভাবা হচ্ছে জানালেন কুশলবাবু। শুনে মনে হল, এটা কার্যত ক্লাবগুলির সামনে ‘গাজর’ ঝোলানো। গুরুত্বহীন একটা টুনার্মেন্ট। ‘‘আইএসএলের ক্লাবগুলির সঙ্গে আই লিগের ক্লাবগুলি কিছু ম্যাচ খেলতে চাইছে। সে জন্য সুপার কাপ নামে একটি টুর্নামেন্ট হয়তো হতে পারে। তবে সেটা হবে এর পর্বের লিগ। এক জায়গায়। ওটা একটা আলাদা টুর্নামেন্ট বলেই বিবেচিত হবে। এএফসি-র কোনও টুনার্মেন্টে খেলার সঙ্গে এর সম্পর্ক থাকবে না,’’ বলে দিয়েছেন কুশল।
আই লিগের ক্লাবগুলি পুরষ্কার অর্থ বাড়ানোর দাবি করেছে। বিদেশি ফুটবলার বাড়ানোর প্রস্তাবও এসেছে ক্লাবেদের পক্ষ থেকে। স্বীকার করলেন ফেডারেশন সচিব। তবে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আগে আই লিগের ক্লাবগুলো ঠিক করুক তারা কী চায়। তারপর অন্য সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে।’’