রাহুল ও পার্থিব। দুই ওপেনার টানছেন ভারতকে। ছবি: রয়টার্স।
ইংল্যান্ডকে প্রথম ইনিংসে চারশোর কমে আটকাতে পারা তো গেল না, তার উপর আবার মুরলী বিজয়ের চোট।
জোড়া ধাক্কায় চেন্নাই টেস্টের দ্বিতীয় দিনটাও মোটেই ভাল গেল না ভারতের।
আগের দিন ইংল্যান্ড শেষ করেছিল ২৮৪-৪-এ। শনিবার সেই স্কোরের সঙ্গে আরও ১৯৩ রান যোগ করে তারা। ১২০-তে অপরাজিত থাকা মইন আলিকে এ দিন ১৪৬-এর বেশি এগোতে না দিলেও ভারতীয় বোলাররা কিন্তু ইংরেজ ব্যাটিংয়ের লেজের দিকের ১০৮ রানের পার্টনারশিপ আটকাতে পারেননি। যার জেরে ৪৭৭-এ পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ভারতের মাটিতে প্রথম ইনিংসে সাড়ে চারশোর উপর রান তুলে মাত্র একবারই টেস্ট হেরেছে কোনও দল। সে ২০১০-এ অস্ট্রেলিয়া। এই তথ্যটাই কুকদের চাঙ্গা করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।
শনিবার কুকদের তাতানোর মতো ঘটনা ঘটলেও বিরাট কোহালিদের উৎসাহিত হওয়ার মতো তেমন কোনও ঘটনা ছিল না। প্রথম দিন ক্যাচ ফেলে মইনকে সেঞ্চুরি করতে দেওয়া, দ্বিতীয় দিন অষ্টম উইকেটের দুই ব্যাটসম্যানকে হাফ সেঞ্চুরির সুযোগ করে দেওয়ার পর মুরলী বিজয়ের চোটটা যেন ভারতীয় দলের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে।
এ দিন পয়েন্টে ফিল্ডিং করার সময় ডাইভ দিয়ে বল আটকাতে গিয়ে বাঁ কাঁধে গুরুতর চোট পান বিজয়। চোট এমনই যে, তাঁকে ওপেন করতেও পাঠানো যায়নি। পার্থিবকে পাঠাতে হয়। বিজয় শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচে নামতে পারেন কি না, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এমনিতেই ভারতীয় ওপেনাররা ধারাবাহিক ভাবে চোট সমস্যায় ভুগছেন। বিজয়ের চোট সেই ধারাবাহিকতাই রাখতে চলেছে কি না, সেটাই দেখার।
পার্থিব পটেল (২৮ ব্যাটিং) এবং লোকেশ রাহুল (৩০ ব্যাটিং) অবশ্য শুরুটা ভালই করেছেন। তাঁদের নিশ্ছিদ্র ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারত প্রথম ইনিংসে আপাতত ৬০-০। রবিবার ভারতীয় ব্যাটিং ফের একবার ইংল্যান্ড বোলারদের হতাশার অন্ধকারে তলিয়ে দিতে পারে কি না, এটা যেমন দেখার বিষয় হবে, তেমনই নজর থাকবে বিরাট কোহালির উপরও। দিনের শেষে চিপকের উইকেট নিয়ে উমেশ যাদব বললেন, ‘‘এই উইকেটে ভাল বল করা বেশ কঠিন। একমাত্র উইকেট ভাঙলে, বল ঘুরলে ম্যাচের রেজাল্ট হওয়া সম্ভব।’’ সেই উইকেটে ব্যাট করতে নেমে কোহালির একটা সেঞ্চুরি বা একটা বড় পার্টনারশিপ হলে হয়তো ভারত আশার আলো দেখতে পারে।
এ দিন শুরুতে ইংল্যান্ড ৩২১-৭ হয়ে যাওয়ার পর এই টেস্টে অভিষেক হওয়া অলরাউন্ডার লিয়াম ডসন এবং আদিল রশিদ মিলে ম্যাচ আবার নিজেদের দিকে ঘুরিয়ে নেন। রশিদ ৬০ করে আউট হলেও নড়ানো যায়নি ডসনকে (৬৬)। দ্বিতীয় দিনেও নিজের ঘরের মাঠের উইকেট সাহায্য করল না। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। মাত্র একটা উইকেট পেলেন দেড়শোর উপর রান দিয়ে।
এখন সেই বিরাট কোহালিই ভরসা। আর তাঁর ভরসা তাঁর ব্যাটিং সতীর্থরা।
ইংল্যান্ড
প্রথম ইনিংস (আগের দিন ২৮৪-৪)
মইন ক জাডেজা বো উমেশ ১৪৬
স্টোকস ক পার্থিব বো অশ্বিন ৬
বাটলার এলবিডব্লিউ ইশান্ত ৫
ডসন ন.আ. ৬৬
রশিদ ক পার্থিব বো উমেশ ৬০
ব্রড রান আউট ১৯
বল বো মিশ্র ১২
অতিরিক্ত ১৫
মোট ৪৭৭
পতন: ৭, ২১, ১৬৭, ২৫৩, ২৮৭, ৩০০, ৩২১, ৪২৯, ৪৫৫।
বোলিং: উমেশ ২১-৩-৭৩-২, ইশান্ত ২১-৬-৪২-২, জাডেজা ৪৫-৯-১০৬-৩,
অশ্বিন ৪৪-৩-১৫১-১, মিশ্র ২৫.২-৫-৮৭-১, করুণ ১-০-৪-০।
ভারত
প্রথম ইনিংস
লোকেশ ন.আ. ৩০
পার্থিব ন.আ. ২৮
অতিরিক্ত ২
মোট ৬০-০।
বোলিং: ব্রড ৫-২-৬-০, বল ৩-০-৯-০, মইন ৭-১-১৮-০,
স্টোকস ২-০-১২-০, রশিদ ২-০-১৩-০, ডসন ১-১-০-০।