নায়ক: দু’ইনিংসে ১১ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা রশিদ। এএফপি
প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা, খারাপ আলো আর বাংলাদেশের মরিয়া লড়াইকে হার মানিয়ে চট্টগ্রামে লেখা হল আফগান রূপকথা। যখন বাংলাদেশকে ২২৪ রানে হারিয়ে টেস্ট জিতে নিল রশিদ খানের আফগানিস্তান।
সোমবার, শেষ দিনে আফগানিস্তানকে জেতার জন্য পেতে হত চার উইকেট। কিন্তু টানা বৃষ্টি এবং খারাপ আবহাওয়ার জন্য খেলা শুরু হতে হতে দুপুর একটা হয়ে যায়। এর পরে আফগানিস্তানের বোলাররা মাত্র ২.১ ওভার বল করতে না করতেই ফের বৃষ্টিতে বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত গ্রাউন্ডসম্যানদের অক্লান্ত চেষ্টায় খেলা শুরু হয় বিকেল ৪.২০ মিনিটে। ওই সময় বাংলাদেশের শেষ চার উইকেট তুলে নিতে আফগান বোলারদের হাতে ছিল মাত্র ১৮.৩ ওভার।
কিন্তু ওই সাড়ে আঠারো ওভারই যথেষ্ট ছিল রশিদের কাছে। তাঁর স্পিনের জাদুর কাছে হার মানেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। শেষ চার উইকেটের মধ্যে একাই তিন উইকেট তুলে নিয়ে দলকে জিতিয়ে দেন টেস্টে প্রথম অধিনায়কত্ব করতে নামা ২১ বছর বয়সি রশিদ। দু’ইনিংস মিলিয়ে রশিদের সংগ্রহ ১১ উইকেট। এর সঙ্গে রয়েছে প্রথম ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার পাশাপাশি আর একটা বিরল কৃতিত্বের মালিকও হয়ে গেলেন এই আফগান লেগস্পিনার। একই টেস্টে দশ উইকেট এবং হাফসেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব এত দিন ছিল বিশ্বের দুই অন্যতম সেরা অধিনায়কের। ইমরান খান (১৯৮৩ বনাম ভারত) এবং অ্যালান বর্ডার (১৯৮৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ)। যে ক্লাবে এ দিন ঢুকে পড়লেন অধিনায়ক রশিদও। পাশাপাশি সব চেয়ে কম বয়সি অধিনায়ক হিসেবে টেস্টও জিতে ফেললেন তিনি। শুধু রশিদই নন, রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিল তাঁর দেশও। গত বছরই টেস্ট খেলিয়ে দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে আফগানিস্তান। এবং প্রথম তিন টেস্টের মধ্যে জিতে নিয়েছে দুই টেস্ট। যে কৃতিত্ব একমাত্র অস্ট্রেলিয়া ছাড়া আর কারও নেই। অভিষেক টেস্টে আফগানিস্তান হেরে গিয়েছিল ভারতের কাছে। কিন্তু পরের দুই টেস্টে তারা হারিয়ে দেয় আয়ারল্যান্ড
এবং বাংলাদেশকে। এই টেস্টের পরেই অবসর নিলেন আফগান অলরাউন্ডার মহম্মদ নবি। ম্যাচের সেরার পুরস্কার নবির হাতেই তুলে দিয়েছেন রশিদ। বলছেন, ‘‘আফগান ক্রিকেট অনেক কিছু পেয়েছে নবির কাছ থেকে।’’ তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দিন আলোচনায় ছিলেন রশিদই। টুইটারে তাঁকে বলা হচ্ছে, ‘কিং রশিদ’।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস: ৩৪২ (রহমত শা ১০২, আসগর আফগান ৯২, রশিদ খান ৫১। তাইজুল ইসলাম ৪-১১৬)। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ২০৫ (মোমিনুল হক ৫২, রশিদ ৫-৫৫)। আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস ২৬০ (ইব্রাহিম জাদরান ৮৭, শাকিব আল হাসান ৩-৫৮)। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ১৭৩ (শাকিব ৪৪, রশিদ ৬-৪৯)।