বদলে যাওয়া স্কোরবোর্ড। যেখানে হিউজ আর আহত নন, চির অপরাজিত। ছবি: গেটি ইমেজেস
‘আমার ছোট্ট ভাইটা যেখানে শেষ শটটা খেলেছিল, সে জায়গায় দাঁড়িয়ে একটা কথা মনে হচ্ছে। আমার নিজের কোনও ভাই নেই। ফিলিপকে নিজের ভাই বলে ডেকেছিলাম বলে গর্ব হচ্ছে।’
আগের দিন ফিল হিউজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। রবিবার, হিউজের ২৬তম জন্মদিনে মাইকেল ক্লার্ক তাঁর প্রয়াত সতীর্থকে শ্রদ্ধা জানালেন প্রায় একই রকম মর্মস্পর্শী এক লেখায়।
হিউজের জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য ঝরে পড়েছে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। কোথাও জনৈক কিশোর ৩৭ রান করে মাঠ ছেড়ে চলে গিয়ে বলেছে, হিউজের হয়ে সেঞ্চুরিটা করলাম। কোথাও ৬৩ রান করে ডিক্লেয়ার দিয়ে দিয়েছে ব্যাটসম্যান। পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। বদলে ফেলা হয়েছে শেফিল্ড শিল্ডে নিউ সাউথ ওয়েলস বনাম সাউথ অস্ট্রেলিয়ার স্কোরবোর্ডও। হিউজের নামের পাশে এ ক’দিন লেখা ছিল, ৬৩ আহত ও অবসৃত। আজ থেকে তা বদলে গিয়ে দাঁড়াল ‘হিউজ ৬৩ অপরাজিত’।
এরই মাঝে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্টের ভাগ্য কী হবে, তা ঠিক হল না। দু’রকম ভাবনার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। এক, সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হতে পারে অ্যাডিলেডে। যা হিউজের ঘরের মাঠ। দুই, দিন ক’য়েক পিছিয়ে দিয়ে শনি বা রবিবার থেকে টেস্ট শুরু হতে পারে ব্রিসবেনেই।
ভারতীয় দল আগামিকাল অ্যাডিলেড থেকে ব্রিসবেন যাচ্ছে। খুব সম্ভবত কোহলিরা ব্রিসবেনে পৌঁছনোর পর জেনে যাবেন, প্রথম টেস্টের ভাগ্য কী হতে চলেছে।
শুভরাত্রি বন্ধু। ইনস্ট্যাগ্রামে এই ছবি পোস্ট করে লিখেছেন মাইকেল ক্লার্ক। ছবি: টুইটার
ভারতীয় বোর্ডও সহযোগিতার সব রকম হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আগামী বুধবার হিউজের অন্ত্যেষ্টি নিউ সাউথ ওয়েলসের ম্যাকসভিলেতে, তাঁর পুরনো হাইস্কুলে। শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় বোর্ড থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, দলের যে কোনও ক্রিকেটারই চাইলে এই অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দিতে পারেন। তবে পুরো ভারতীয় দলের যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। আপাতত ঠিক আছে, কোচ ডানকান ফ্লেচার, টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী এবং অধিনায়ক বিরাট কোহলি যাবেন। এঁদের সঙ্গে আরও কয়েক জন ক্রিকেটারকেও দেখা যেতে পারে।
ক্লার্ক তাঁর কলামে লিখেছেন, “হিউজের ক্রিকেট সাফল্যের কথা আমি এখানে বলতে চাই না। যদিও ক্রিকেট মাঠে ওর সাফল্য প্রচুর আছে। আমি শুধু মানুষ ফিলের কথাই বলব। আমি ওর প্রতি শুরুতেই আকৃষ্ট হয়েছিলাম। ওর মুচকি হাসি আর জীবনের প্রতি ভালবাসা আমাকে টেনেছিল। ১২ বছরের ক্রিকেট জীবনে আমি এ রকম উদারমনের, খোলামেলা মানুষ দেখিনি।”
হয়তো ক্রিকেটও দেখেনি। তাই আজ ক্রিকেটবিশ্ব শোকস্তব্ধ।
হিউজের ঘটনাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কিন্তু তা বলে ক্রিকেটে বাউন্সারকে যেন অবৈধ ঘোষণা না করা হয়। তা হলে কিন্তু লড়াইটাই হারিয়ে যাবে।
অ্যালান ডোনাল্ড
কেউ ভুলেও শন অ্যাবটকে দোষ দিচ্ছে না। আমরা ওর পাশে আছি। শন, যখন তুমি মাঠে ফিরতে চাইবে, কথা দিচ্ছি আমি প্রথম প্যাড পরে তোমার বিরুদ্ধে নেটে ব্যাট করতে নামব।
মাইকেল ক্লার্ক
বোলাররা শর্ট বল করার আগে দু’বার ভাববে। আর আসন্ন সিরিজে এটা বেশি প্রভাব ফেলবে অস্ট্রেলিয়ান বোলিংয়ে। বাউন্সারটা আমাদের পেস আক্রমণের একটা বড় অস্ত্র। সেটাই ঠিক মতো করতে পারবে না।
ইয়ান চ্যাপেল