ATK-Mohunbagan

ভারসাম্যে এগিয়ে এটিকে-মোহনবাগান

কেরল কতটা শক্তিশালী তার প্রমাণ অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি। প্রস্তুতি ম্যাচে এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ১-৩ হেরেছিল। তবে এই মরসুমে একেবারে নতুন ভাবে দল সাজিয়েছে ওরা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা অতিমারির আতঙ্কের আবহেই মূলস্রোতে ফিরতে চলেছে ভারতীয় ফুটবল। আজ, শুক্রবার উদ্বোধনী ম্যাচে এটিকে-মোহনবাগান মুখোমুখি হচ্ছে কেরল ব্লাস্টার্সের। যে দলের কোচ আবার গত মরসুমে মোহনবাগানকে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করা স্পেনের কিবু ভিকুনা। তাই এই ম্যাচ শুধু বাংলা বনাম কেরলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই নয়, সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের আবেগও।

Advertisement

আমার কাছে এই ম্যাচের প্রধান আকর্ষণ শিল্প বনাম শক্তির দ্বৈরথ! আইএসএলের প্রথম বছর থেকেই আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের রণনীতি আমাকে মুগ্ধ করেছিল। স্পেনের কোচ হওয়া সত্ত্বেও ওঁর পরিকল্পনায় জার্মানি ও ইটালির ঘরানার ছোঁয়া রয়েছে। রক্ষণ মজবুত করে আক্রমণে ওঠেন। আরও ভাল লাগে এটিকে-মোহনবাগান কোচের দর্শন। পরিষ্কার বলে দেন, ম্যাচ জেতাটাই তাঁর কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্য যদি খেলায় সৌন্দর্য না থাকে, কী এসে যায়! কিবুর ভাবনা-চিন্তা ও রণকৌশল হাবাসের সম্পূর্ণ উল্টো। স্পেনীয় ভঙ্গিতে পাসিং ফুটবলেই বিশ্বাস করেন কেরল ব্লাস্টার্সের কোচ। গত মরসুমে ওঁর কোচিংয়ে দারুণ খেলেছিল মোহনবাগান। এত পাস খেলেছিল জোসেবা বেইতিয়ারা, বিপক্ষের ফুটবলারেরা নাজেহাল হয়ে গিয়েছিল। বেশ কয়েকটি ম্যাচে জয়ের পরেও কিবুকে বলতে শুনেছিলাম, ফুটবলারদের খেলায় তিনি খুশি নন। কারণ, জিতলেও আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি দল।

হাবাস ও কিবুর মধ্যে পার্থক্য একটা নয়, একাধিক। এটিকে-মোহনবাগান কোচ খুব আগ্রাসী। নিজের দলের ফুটবলারদের মধ্যেও তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। মনে পড়ে যাচ্ছে গত মরসুমে আইএসএল ফাইনালের কথা। ম্যাচের আগে বিশেষজ্ঞেরা চেন্নাইয়িন এফসিকেই এগিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার পরেই ছবিটা বদলে গিয়েছিল। চেন্নাইকে ৩-১ গুঁড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এটিকে। টিভিতে দেখেছিলাম, চোটে পেয়ে রয় কৃষ্ণ উঠে যাওয়ার পরে কী ভাবে সাইড লাইনের ধারে দাঁড়িয়ে ফুটবলারদের উজ্জীবিত করেছিলেন হাবাস। একেবারে যোদ্ধার মতো মানসিকতা। কিবু দর্শনীয় ফুটবল খেলে জিততে চান। গত মরসুমেই আই লিগে চার্চিল ব্রাদার্সের কাছে বিপর্যস্ত হওয়ার পরে যখন সর্বত্র সমালোচিত হচ্ছেন, তখনও বলে চলেছেন, হারলেও দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছে ছেলেরা। সেটাই ওঁকে বেশি তৃপ্তি দিয়েছিল। আমার মতে, শুক্রবারের উদ্বোধনী ম্যাচে এগিয়ে রয়েছেন হাবাস-ই।

Advertisement

এটিকে গত মরসুমে আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের অধিকাংশ ফুটবলারকেই রেখেছে। রক্ষণে প্রীতম কোটাল, প্রবীর দাসদের সঙ্গে এ বার তিরি, সন্দেশ জিঙ্ঘান, শুভাশিস বসুকে নিয়েছে। আমার মতে এ বারের আইএসএলে এটিকে-মোহনবাগানের রক্ষণই সেরা। মাঝমাঠ ও আক্রমণ ভাগও বেশ শক্তিশালী। এদু গার্সিয়া, হাভি হার্নান্দেস, জয়েশ রানে, মাইকেল সোসাইরাজ, প্রণয় হালদার ছিলই। এই মরসুমে সই করানো হয়েছে প্রতিশ্রুতিমান মিডফিল্ডার শেখ সাহিল ও গ্লেন মার্টিন্সকে। আক্রমণে রয় কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসের সঙ্গে রয়েছে মনবীর সিংহ। অঙ্ক করে দল সাজিয়েছেন হাবাস। প্রত্যেকটি বিভাগেই দারুণ ভারসাম্য।

কেরল কতটা শক্তিশালী তার প্রমাণ অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি। প্রস্তুতি ম্যাচে এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ১-৩ হেরেছিল। তবে এই মরসুমে একেবারে নতুন ভাবে দল সাজিয়েছে ওরা। আক্রমণে টটেনহ্যাম হটস্পারের অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা গ্যারি হুপারের সঙ্গে রয়েছে আর্জেন্টিনার ফাকুন্দো পেরেরা, অস্ট্রেলিয়ার জর্ডান মারে। মাঝমাঠের প্রধান ভরসা স্পেনের সের্খিয়ো সিদোঞ্চা, গত মরসুমে মোহনবাগানে খেলা নংদোম্বা নওরেম, প্রতিশ্রুতিমান সাহাল আব্দুল সামাদ ও রাহুল কে পি। বলছি ঠিকই যে, এটিকে-মোহনবাগান এগিয়ে তবে খেলায় পূর্বাভাস কি সব সময় খাটে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement