শুক্রবার সেঞ্চুরি মিস করে হতাশ অভিনব মুুকুন্দ। ছবি: এএফপি।
প্রথম ইনিংসে রান পাননি। আর তাতে যে ভাবে তাঁকে ট্রোলড হতে হয়েছিল তা দুর্ভাগ্যজনক। কেই বলেছিলেন, অভিনব মুকুন্দের নাকি ডোমেস্টিক ক্রিকেটই খেলা উচিত। কেউ আবার বলেছিলেন, নেট বোলারদের ডেকে ব্যাট করা উচিত। এ রকম নানা মন্তব্যে রীতিমতো ক্ষতবিক্ষত হতে হয়েছিল ওপেনার অভিনব মুকন্দকে। কিন্তু তার পরের দিনই মাঠে নেমে ব্যাটে জবাব দিলেন তিনি। শিখর ধবন দ্রুত প্যাভেলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসের ভারতীয় ব্যাটিংয়ের হাল ধরলেন এই ওপেনার। করলেন ঝকঝকে ৮১ রান।
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে মুকুন্দ বলেন, ‘‘টেস্টে কিছু করার সুযোগ এসেছে। আমি পরেরটা নিয়ে ভাবতে চাই না। আমি ওপেনিংয়ে প্রথম পছন্দ না দ্বিতীয় পছন্দ সেটা কোনও পার্থক্য তৈরি করে না। আমি যেখানেই সুযোগ পা তখনই সেটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব। আমি অনেক খেটেছি। আমি ব্যাটিং আর ফিল্ডিংয়ের উন্নতি করার চেষ্টা করেছি। আমি হতাশ হয়েছিলাম যখন প্রথম দিন সেটা কাজে লাগেনি। কিন্তু আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’’
আরও খবর: ব্র্যাডম্যান, সহবাগের সঙ্গে এক তালিকায় ধবন
২০১১, ২০ জুন একসঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল বিরাট কোহালি ও অভিনব মুকুন্দের। জুনিয়র পর্যায়ে একসঙ্গে খেলেছেন দু’জনে। কিন্তু ভাগ্যটা অনেকটাই আলাদা। কোহালির থেকে ভাল শুরু করেও হারিয়ে গিয়েছিলেন। সেই অভিষেক টেস্টের পর যেখানে কোহালির ৫০এর উপর টেস্ট খেলা হয়ে গিয়েছে সেখানে মুকুন্দের ঝুলিতে মাত্র পাঁচ। আবারও একটা সুযোগ। প্রথম ইনিংসে ১২ রানে আউট। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোটা একটু হলেও আশার আলো দেখাচ্ছে মুকুন্দের কেরিয়ারকে। এটাই তাঁর সেরা ইনিংস। বলেন, ‘‘আমি ভাবার জন্য অনেক সময় পেয়েছি। ছ’বছর ছিল আমার কাছে। আমি সে সব নিয়ে বলতে চাই না। আমি অনেক ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। আমি আর সেখানে ফিরতে চাই না। আমি খুশি আমি আবার দলে ফিরতে পেরেছি। কিন্তু খারাপ লাগছে অত কাছে গিয়েও সেঞ্চুরিটা পেলাম না বলে।’’
ছোটবেলার সতীর্থ বিরাট কোহালির সঙ্গে আবারও এক ফ্রেমে অভিনব মুুকুন্দ। দু’জনেই ভরসা দিলেন ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসকে। ছবি: রয়টার্স।
একটা সময় একদম ক্রিকেট থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। জাতীয় দল, রাজ্য দল কোথাও জায়গা ছিল না তাঁর জন্য। কিন্তু এখন এই সুবর্ণ সুযোগকে কাজে লাগাতে চান তিনি। যদি দলে জায়গা পান তা হলে সব ম্যাচকেই একটা করে নতুন সুযোগ হিসেবে ভাবতে চান। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও টেস্টে সুযোগ এসেছিল মুকুন্দের সামনে। কিন্তু সেই সময় তাঁর ফিল্ডিং ভুগিয়েছিল তাঁকে। স্টিভ স্মিথের নিশ্চিত ক্যাচ ফেলে ভিলেন হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর ফিল্ডিং কোচ শ্রীধরের অনুশীলনে নিজেকে তৈরি করেছেন। বলেন, ‘‘ওই ক্যাচ ফেলাটা আমাকে তাড়া করে। ১০০ বারের মধ্য অমন ক্যাচ আমি ৯৯ বারই ধরতে পারব। কিন্তু তার পরও জানতাম একদিন ঠিক সুযোগ আসবে আর আমি নিজেকে প্রমান করব। সৌভাগ্যক্রমে সেটা এসেছে।’’