মহড়া: বুধবার গ্রিসের অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে অলিম্পিক্স-মশাল বহন করার প্রস্তুতিতে অভিনেত্রী জিয়োর্জিউ। এপি
সারা বিশ্বে নানা খেলায় যতই প্রভাব পড়ুক এবং অলিম্পিক্স নিয়ে ঘোর সংশয় তৈরি হোক, টোকিয়োর সংগঠকেরা এখনও পিছিয়ে আসতে নারাজ। সংগঠক কমিটির প্রেসিডেন্ট ইয়োশিরো মোরি জানিয়েছেন, অলিম্পিক্স নির্ধারিত সময়েই শুরু হবে। তবে তিনি স্বীকার করেছে, করোনাভাইরাস যে ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে তাঁরা চিন্তিত।
টোকিয়ো অলিম্পিক্সের এগজিকিউটিভ বোর্ডের এক সদস্য পরামর্শ দিয়েছেন, অলিম্পিক্স দু’বছরের জন্য পিছিয়ে দিলেই সব চেয়ে ভাল হবে। ‘‘আমরা অবশ্য উদ্বিগ্ন। করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বে ৪,২৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে, ১১৭,৩৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। তার প্রভাব অলিম্পিক্সে তো পড়বেই। কিন্তু সংগঠক হিসেবে আমরা নির্ধারিত সময়েই গেমস করার জন্য এগোচ্ছি।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গ্যানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) সঙ্গে নিয়ামক সংস্থা আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি কথা বলছে। টোকিয়োর সগংঠকেরা খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে তাদের মতামত জানাবে। তবে মোরি এমন মন্তব্য খুব তড়িঘড়ি ভাবে করতে বাধ্য হলেন কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে। কারণ, এ দিনই তাঁদের এগজিকিউটিভ বোর্ডের এক সদস্য সতর্কবার্তা জারি করেন যে, অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়াই ঠিক হবে। তাতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। এর আগে জাপানের এক মন্ত্রীও মন্তব্য করেছিলেন যে, অলিম্পিক্স পিছিয়ে যেতে পারে। মোরি যদিও বলেছেন, ‘‘এ ভাবে এক বা দু’বছরের জন্য গেমস পিছিয়ে দেওয়া যায় না। আমার মনে হয়, মন্তব্যটি ঠিক ভাবে করা হয়নি।’’
আশঙ্কা করা হচ্ছে, অলিম্পিক্স যদি বাতিল করতে হয় তা হলে বিশাল পরিমাণ আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে পারে জাপান। ইতিমধ্যেই বহু স্পনসর লগ্নি করে ফেলেছে, নতুন করে সব স্টেডিয়াম গড়ে তুলতে সরকারি আর্থিক অনুদান ব্যবহার করে ফেলা হয়েছে। ২০১৯-এর শেষে সংগঠকদের হিসাব ছিল, পুরো গেমস আয়োজন করতে খরচ হবে ১.৩৫ ট্রিলিয়ন ইয়েন (ভারতীয় মুদ্রায় ৯৫ হাজার ৪৭৭ কোটি)। এর মধ্যে টোকিয়ো শহর কর্তৃপক্ষের দেওয়ার কথা ৫৯৭ বিলিয়ন ইয়েন (ভারতীয় মুদ্রায়, ৪২ হাজার ২১২ কোটি) জাপানের অর্গ্যানাইজিং কমিটি দেবে ৬০৩ বিলিয়ন ইয়েন (ভারতীয় মুদ্রায় ৪২ হাজার ৫০০ কোটি) এবং জাপানের কেন্দ্রীয় সরকার দেবে ১৫০ বিলিয়ন ইয়েন (ভারতীয় মুদ্রায় ১০ হাজার ৬০৩ কোটি)।
তবে চাউর হয়ে গিয়েছে যে, এটা আদৌ সঠিক তথ্য নয়। আসলে জাপান এর দশ গুণ টাকা খরচ করছে সফল এবং তাক লাগানো অলিম্পিক্স করার জন্য। জাপানের ব্যবসায়ী এবং লগ্নিকারীরা টাকা ঢালতে শুরু করে দিয়েছিলেন। রেকর্ড ৩৪৮ বিলিয়ন ইয়েন (ভারতীয় মুদ্রায় ২৪ হাজার ৬১২ কোটি) মূল্যের জাপানি স্পনসরশিপ রয়েছে। এর বাইরে রয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির চুক্তিবদ্ধ স্পনসর। জাপানের সংগঠকেরা সেই কারণে অলিম্পিক্স জুলাইয়েই শুরু করতে মরিয়া।
এফ ওয়ানে পরীক্ষা: অস্ট্রেলীয় গ্রঁ প্রি-তে তিন জন সদস্যকে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা হবে, তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না। তাঁদের মধ্যে দু’জন হাস এফ ওয়ান টিমের এবং এক জন ম্যাকলারেনের। অস্ট্রেলিয়াও এখন ইটালি থেকে তাদের দেশে ভ্রমণের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ফাঁকা গ্যালারিতে: টোকিয়ো অলিম্পিক্সের যোগ্যতামান হিসেবে বিবেচিত ইন্ডিয়া ওপেন ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা ফাঁকা গ্যালারিতে হবে। ভারতের ব্যাডমিন্টন সংস্থা এবং বিশ্ব সংস্থা যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, নয়াদিল্লিতে ২৪-২৯ মার্চ যে চ্যাম্পিয়নশিপ হওয়ার কথা ছিল, তা নির্ধারিত সময়েই হবে। তবে সাবধানতা হিসেবে স্টেডিয়ামে দর্শক থাকবেন না। যদি ম্যাচ দেখতে হয়, তা হলে ইউটিউব বা হটস্টারই ভরসা।