পরম্পরা: অলিম্পিক্স মশালের হাতবদলের অনুষ্ঠান। গ্রিসের অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন ক্যাটেরিনা সেফানিডি আগুন থেকে জ্বালাচ্ছেন মশাল। যা এ বার চলে যাবে জাপানে। বৃহস্পতিবার আথেন্সে। এপি
কিংবদন্তি ব্রিটিশ অ্যাথলিট সেবাস্টিয়ান কো মনে করেন, এখনই টোকিয়ো অলিম্পিক্স বাতিল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। সঙ্গে অবশ্য যোগ করেছেন, গেমস এক বছর পিছিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়াও ‘হাস্যকর’।
অতিমারি করোনাভাইরাসের জেরে পরিস্থিতি যা-ই হোক, আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) অবশ্য এখনও বলে যাচ্ছে ২৪ জুলাই-ই গেমস শুরু হবে। আর ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার প্রধান কো বলেছেন, ‘‘আইওসি-র সিদ্ধান্ত নিয়ে এখনই আন্দাজের উপর কোনও মন্তব্য করবেন না। বিশেষত যখন এখনও আমাদের হাতে চার মাস সময় পড়ে রয়েছে।’’ যোগ করেছেন, ‘‘যে কোনও কিছুই হতে পারে।’’
কো নিজে পর পর দু’টি অলিম্পিক্সে ১৫০০ মিটারে সোনা জিতেছিলেন। ২০১২ লন্ডন অলিম্পিক্সে তিনিই ছিলেন আয়োজকদের প্রধান কর্তা। তাই টোকিয়ো অলিম্পিক্সের ভবিষ্যৎ নিয়ে কো-র মন্তব্যের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। ‘‘আমরা সবাই জানি বিশ্ব জুড়ে পরিস্থিতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় বদলে যাচ্ছে। কিন্তু অলিম্পিক্স নিয়ে এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো কিছু হয়নি। যখন যা খবর আসছে তার ভিত্তিতে আমরা চেষ্টা করছি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্যও নেই,’’ বলেছেন কো।
আইওসি জানিয়েছে, বিভিন্ন দেশের অ্যাথলেটিক্স সংস্থার সঙ্গে তাদের গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। তবে আইওসি-র প্রেসিডেন্ট থোমাস বাখ একইসঙ্গে এ-ও বলেছেন যে, এই আলোচনায় তাঁকে নানা অস্বস্তিকর প্রশ্নের সামনে পড়তে হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সবাই মেনে নিয়েছে এখনও চার মাস সময় হাতে থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আর একটু অপেক্ষা করা যেতেই পারে।’’
কো-কে প্রশ্ন করা হয়, ইউরো বা কোপা আমেরিকার মতো অলিম্পিক্সও কি এক বছর পিছিয়ে ২০২১-এ হতে পারে? অ্যাথলেটিক্সের প্রাক্তন নামী তারকার জবাব, ‘‘এমনিতে মনে হতে পারে এটাই সহজতম সমাধান। কিন্তু অ্যাথলেটিক্সেরও নিজস্ব জগৎ রয়েছে। আমাদেরও নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী টুর্নামেন্ট, লিগ করতে হয়। জানি ইউরো এক বছর পিছিয়ে গিয়েছে। আসলে খেলার ক্যালেন্ডারগুলো খুবই জটিল একটা বিষয়। ইচ্ছে করলেই এক বছর পিছিয়ে দেওয়া যায় না। তবু বলছি কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়াটা হাস্যকর। গোটা বিশ্বই এখন স্বচ্ছতা চায়। আমরাও তার বাইরে থাকতে পারি না।’’ যোগ করেছেন, ‘‘কিন্তু তিনটি ডায়ামন্ড লিগ বাতিল করেছি। কিন্তু সব নয়। সবাই মানবে পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। তাই যে কোনও কিছুই হওয়া সম্ভব।’’
এ দিকে গ্রিসের রাজধানী আথেন্সে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার অলিম্পিক্সের মশাল চিরাচরিত প্রথা মেনে আয়োজক দেশ জাপানের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। করোনা আতঙ্কে পুরো অনুষ্ঠানটি হয়েছে আথেন্সের দর্শকশূন্য প্যানাথেনিক স্টেডিয়ামে। এখানেই ১৮৯৬-তে আধুনিক অলিম্পিক্সের
সূচনা হয়েছিল।