গোয়েন্দা বলতেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে ফেলুদা, ব্যোমকেশ থেকে শার্লক হোমস। কালেভদ্রে সেখানে উঁকি মারেন মিস মার্পলরা। বাস্তবে কিন্তু মহিলা গোয়েন্দাদের খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। জেনে নিন, দেশের প্রথম মহিলা ডিটেক্টিভ রজনী পণ্ডিত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।
১৯৮৩ সালে একজন গুপ্তচর হিসেবে জার্নি শুরু হয় রজনী পণ্ডিতের।
একজন দুঁদে গোয়েন্দা হতে বাবা শান্তারাম পণ্ডিতই অনুপ্রাণিত করেছিলেন রজনীকে। মুম্বই পুলিশের একজন ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেটর ছিলেন শান্তারাম পণ্ডিত। সেই ছোটবেলা থেকেই বাবাকে নানান ক্রিমিনাল কেসের খুঁটিনাটি নিয়ে তীব্র আগ্রহ দেখাতেন রজনী। আর বাবাকে কেবলই একটা প্রশ্ন করে যেতেন,‘পুলিশ কেন সরাসরি অভিযুক্তকে শাস্তি দিতে পারে না?’ তখন থেকেই তাঁর মাথায় জেদ চেপে যায় যে ডিটেক্টিভ তিনি হবেনই।
দাম্পত্য জীবনের কলহের কারণ খুঁজতে বিশেষ পারদর্শী রজনী। বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে সন্দেহের আনাগোনা হলেই তাঁরা ছোটেন রজনী পণ্ডিতের কাছে। বিশেষ পারদর্শীতার সঙ্গে রজনী মিটিয়ে ফেলেন সে সব সমস্যা।
বিগত ২৫ বছর ধরে নিজের ডিটেক্টিভ এজেন্সি চালিয়ে আসছেন রজনী পণ্ডিত। এজেন্সির নাম রজনী পণ্ডিত ডিটেক্টিভ সারভিসেস। এই মহূর্তে রজনীর ডিটেক্টিভ টিমে ২০ জন সদস্য। রজনীর দাবি, প্রায় ৭৫ হাজার কেস সমাধান করেছেন তিনি ও তাঁর টিম।
একটা সময় এই এজেন্সি চালাতে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ দেওয়া হলেও এখন নানান জগতের মানুষজন রজনীর কাছে এসে ভিড় জমান। সেই তালিকায় রয়েছেন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ থেকে চলচ্চিত্র জগতের মানুষজনও।
ছদ্মবেশ ধারণ করে ঘটনার তদন্ত করতেও বিশেষ পটু রজনী পণ্ডিত। তাঁর মক্কেলদের অনেকেই বলে থাকেন যে,‘রজনীজিকে অফিসে একরকম লাগে আর অফিসের বাইরে আরেকরকম।’ একজন সবজি বিক্রেতা থেকে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, কখনও বা পরিচারিকা— নানান ছদ্মবেশে তাঁকে দেখা যায় নানান ঘটনা সমাধান করতে।
নিজের তদন্ত করা নানান ঘটনার অভি়জ্ঞতা থেকে রজনী দুটো বইও লিখে ফেলেছেন—‘ফেসেস বিহাইন্ড ফেসেস’ আর ‘মায়াজাল’। প্রথম বইয়ের জন্য দুটি পুরস্কার এবং দ্বিতীয় বইয়ের জন্য ছ’টি পুরস্কারও ইতিমধ্যে পেয়ে গিয়েছেন রজনী।
এই মুহূর্তে রজনী দেশব্যাপী বহু মহিলারই অনুপ্রেরণা। রজনী পণ্ডিতের জীবন নিয়ে বলিউডে ছবিও তৈরি হয়েছে।‘ববি জাসুস’ নামে সেই ফিল্মে বিদ্যা বালনকে দেখা গিয়েছিল রজনীর চরিত্রে।