—নিজস্ব চিত্র।
পচা আবর্জনার স্তুপ থেকে ছড়ানো উত্কট গন্ধে দু’দণ্ড দাঁড়ানোর উপায় নেই দিনবাজার লাগোয়া করলা নদীর পাড়ে। ওই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই নাকে রুমার চেপে চলছে কেনাকাটা। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলেই করলা ছাপিয়ে ভাসছে আবর্জনা। ছড়াচ্ছে দূষণ। স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকের অভিযোগ, বাজারের আবর্জনা নিয়মিত সাফাই না হওয়াতেই যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে তাঁদের।
যদিও জলপাইগুড়ি পুরসভার কর্তারা ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সাফাইয়ের কাজ নিয়মিত হচ্ছে না এটা ঠিক কথা নয়। কিন্তু পরিত্যক্ত থার্মোকল বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে সমস্ত গাড়ি থার্মোকলের বাক্সে মাছ নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে আসে, তাঁদের সেগুলি বাধ্যতামুলকভাবে ফেরত নেওয়ার নিয়ম তৈরির কথা ভাবা হয়েছে। আশা করছি পুজোর আগেই ওই নিয়ম চালু হয়ে যাবে। সেটা হলে সমস্যা অনেক কমবে।” কিন্তু পুর কর্তারা নিয়মিত আবর্জনা সাফাই হয় বলে দাবি করলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তা মানছেন না। তাঁদের অভিযোগ, দিনের পর দিন বাজারের জঞ্জাল জমে পচছে। দুর্গন্ধে বিক্রিবাটা দায় হয়ে পড়েছে। ক্রেতারা সুস্থ মতো কেনাকাটা করতে পারছেন না। বারবার জানানোর পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুরসভা।
পাইকারি মাছ বিক্রেতা সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত মিত্রর অভিযোগ, গোটা দিনবাজার চত্বরে আবর্জনার স্তুপ। পুরসভার দায়িত্ব পরিষেবা দেওয়া। কিন্তু তা মিলছেনা। তিনি বলেন, “পাইকারি মাছের ব্যবসায়ীদের মাথা পিছু ট্রেড লাইসেন্স ও কনজারভেন্সি ফি বাড়ানো হয়েছে। কেউ অমত করেনি। কিন্তু সামান্য পরিষেবাও মিলছে না।” তাঁর বক্তব্য, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে থার্মোকলের বাক্সে যে মাছ আসছে সেটা ট্রাকেই ফেরত চলে যায়। সামান্য কিছু যা পরে থাকে সেটা কেন পুরসভা সাফাই করার ব্যবস্থা করবে না।
দিনবাজারে অন্তত ২৫টি পাইকারি মাছের গদি এবং ২০টি পাইকারি সবজির গদি রয়েছে। ছাড়াও রয়েছে শতাধিক খুচরো বিক্রেতার দোকান। বাজার জুড়ে থিকথিকে কাদা আর পচা আবর্জনার উত্কট গন্ধ। নিকাশি নালাগুলি ছাপিয়ে আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ায় পচা জলকাদা ভেঙেই যাতায়াত করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। পাইকারি মাছ বাজার লাগোয়া রাস্তার দু’পাশে রয়েছে সবজির খুচরো দোকান। নদীর পাড় থেকে জঞ্জাল পচা কটু গন্ধে সেখানে বসে থাকতে পারেন না ব্যবসায়ীরা।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান অবশ্য দাবি করেছেন, থার্মোকল নামানো বন্ধ করলেই ওই এলাকা পরিষ্কার করা হবে।