-ফাইল ছবি।
মাত্রায় খুব বেশি হয়ে যাওয়া কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আর রোজ রাতে নিয়ম করে একটি ট্যাবলেট খেয়ে যেতে হবে না। কাজ হবে ইঞ্জেকশনেই। আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)’ অনুমোদন দিতে না চাইলেও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ইঞ্জেকশন ‘ইনক্লিসিরান’-কে ব্রিটেনে সকলের জন্য ব্যবহারের অনুমোদন দিল সে দেশের ‘ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস (এনএইচএস)’।
এনএইচএস জানিয়েছে, বছরে দু’বার এই ইঞ্জেকশন নিলেই কাজ হবে। আগামী তিন বছরে ব্রিটেনে তিন লক্ষ মানুষকে ইনক্লিসিরান দেওয়া হবে।
ইনক্লিসিরান ইঞ্জেকশন ব্রিটেনে মূলত দেওয়া হবে বংশানুক্রমিক ভাবে যাঁরা উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগে চলেছেন, তাঁদের। সেই সঙ্গে দেওয়া হবে তাঁদের, যাঁদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়ে গিয়েছে ইতিপূর্বে। দেওয়া হবে তাঁদেরও, যাঁরা স্ট্যাটিন-এর মতো ওষুধ দিনের পর দিন খেয়েও কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি।
এনএইচএস জানিয়েছে, ইনক্লিসিরান ইঞ্জেকশনটি বানানো হয়েছে একটি অভিনব পদ্ধতিতে। যার নাম ‘জিন সাইলেন্সিং’। যার অর্থ, মানবশরীরের যে জিনটির জন্য আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে যায় এবং সেই অবস্থা দীর্ঘমেয়াদি হয়, এই ইঞ্জেকশন সেই জিনটিকেই নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারছে। একই ভাবে অ্যালঝাইমার্স ডিজিজ ও ক্যানসারেরও চিকিৎসার উপায় বার করার চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়ে।
এই ধরনের ইঞ্জেকশন মূলত লক্ষ্য হিসেবে বেছে নেয় মানবশরীরের বিশেষ এক ধরনের ‘মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ)’-কে। প্রতিটি কোষেই থাকা এই এমআরএনএ-ই ডিএনএ থেকে বার্তা পৌঁছে দেয় মানবশরীরের বিভিন্ন প্রোটিনকে। কী ভাবে সেই প্রোটিন কাজ করবে তার নির্দেশ পাঠায়।
সেই এমআরএনএ-কে নিষ্ক্রিয় করে দিতে গবেষকরা কৃত্রিম ভাবে একটি ক্ষুদ্র আরএনএ বানান। তার নাম ‘সিআরএনএ’।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক বাড়ানোর নির্দেশ বিশেষ একটি প্রোটিন ‘পিসিএসকে-৯’-কে পাঠায় এমআরএনএ। কিন্তু গবেষকরা দেখিয়েছেন, তাঁদের কৃত্রিম ভাবে বানানো অত্যন্ত ক্ষুদ্র আরএনএ- সিআরএনএ সেই এমআরএনএ-কে নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক বাড়ানোর নির্দেশ আর প্রোটিন ‘পিসিএসকে-৯’-কে পাঠাতে পারে না এমআরএনএ। নিয়ন্ত্রিত হয় কোলেস্টেরলের মাত্রা।