Temperature

Human Temperature Endurance: তাপপ্রবাহ আরও বাড়বে এবছর, কোন তাপমাত্রায় হিট স্ট্রোক হয় জানেন?

খুব বেশি হলে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করতে পারে মানবশরীর। তা-ও সেটা সম্ভব বয়স অল্প থাকলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ১৭:৩৬
Share:

কখন হিট স্ট্রোক হয় জানেন কি? -ফাইল ছবি।

তৃষ্ণায় ছাতিফাটা গা ঝলসানো গরমের দিনগুলি এসে গেল। রোদে ফুটিফাটা হবে মাঠঘাট। এ বার গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা আরও বাড়ার পূর্বাভাসও দিয়েছেন আবহবিদ, জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। ফলে, অনিবার্য ভাবেই বাড়তে চলেছে হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের শিকার হওয়ার ঘটনা। এ রাজ্যের পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় যা আকছারই ঘটে গ্রীষ্মকালে। কলকাতাতেও হিট স্ট্রোকের শিকার হতে হয় প্রবীণ ও মহিলাদের।

এই পরিস্থিতিতে জরুরি, ঠিক কতটা তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে আমাদের শরীর, তা জানা। ঠিক কতটা আর্দ্রতায় তাপমাত্রা কতদূর পর্যন্ত সহনীয় হয় সেটা জানা থাকলে ঘর থেকে বেরনোর আগে সেই মতো কিছু ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হতে পারে। বা ঘর থেকে বেরিয়ে দূরে যাওয়ার পরিকল্পনা সাময়িক ভাবে স্থগিতও রাখা যেতে পারে।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা সেই সুযোগ করে দিল। জানা গেল, যে তাপমাত্রা পর্যন্ত আমাদের শরীরের সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে বলে এতদিন জানতাম আমরা তা সঠিক ছিল না। তার অনেক নীচের তাপমাত্রা পর্যন্ত মানবশরীর সহ্য করতে পারে। তার পর আর পারে না। তখনই হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব অ্যাপ্লায়েড ফিজিওলজি’-তে। বুধবার।

আমেরিকার পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণা জানিয়েছে, খুব বেশি হলে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করতে পারে মানবশরীর। তা-ও সেটা সম্ভব বয়স অল্প থাকলে। স্বাস্থ্যবান হলে। ৪৫ বছর পেরনোর পর ওই তাপমাত্রাও আর মানবশরীরের পক্ষে সহনীয় থাকে না।

তাপমাত্রা তার উপরে উঠলেই মানবশরীরের স্বাভাবিক কাজকর্মগুলি আর স্বাভাবিক থাকে না। রক্ত সংবহন প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটে। হৃদপিণ্ডে, মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত পৌঁছয় না বা চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণে পৌঁছয়। তার ফলেই হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের মতো ঘটনা ঘটে। এমনকি হয় কার্ডিয়াক বা সেরিব্রাল অ্যাটাকও।

আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মানবশরীর সহ্য করতে পারে। তার কাজকর্মগুলি মোটামুটি স্বাভাবিক ভাবে চালিয়ে যেতে পারে। ফারেনহাইট স্কেলে যা ৯৫ ডিগ্রি, যখন আর্দ্রতার পরিমাণ থাকে ১০০ শতাংশ। আর ১১৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট যখন আর্দ্রতার পরিমাণ হয় ৫০ শতাংশ।

এই গবেষণা জানাল, নতুন ভাবে ভাবার সময় এসেছে। মানবশরীর ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০০ শতাংশ তাপমাত্রায় ৮৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার বেশি সহ্য করতে পারে না। পারে না তরুণ তরতাজাদের শরীরও। পারেন না স্বাস্থ্যবানরাও।

Advertisement

এ বছর ভারত-সহ গোটা বিশ্বে তাপপ্রবাহের ঘটনা আর তাদের তীব্রতা আরও বাড়তে চলেছে বলে ইতিমধ্যেই পূর্বাভাস দিয়েছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা। একই পূর্বাভাস দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের জলবায়ু সংক্রান্ত রিপোর্টও।

গবেষকরা এও জানিয়েছেন, মানবশরীরের পক্ষে এই সহনীয় তাপমাত্রার শেষ গণ্ডিটা তাঁরা মেপেছেন মূলত আর্দ্র জলবায়ুর দেশগুলিতে। যার মধ্যে পড়ে ভারতও। তবে শুকনো জলবায়ুর দেশগুলিতে, মরুভূমি লাগোয়া দেশগুলিতে আর্দ্র জলবায়ুর দেশগুলির তুলনায় আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকে। তার ফলে ওই সব দেশে ঘাম হয় বেশি পরিমাণে। যা মানবশরীরের তাপমাত্রা নামিয়ে আনে কিছুটা হলেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement