—ফাইল চিত্র।
মহাকাশে যেতে চান? আর ক’দিন পরে ছাপোষা মানুষও চাইলেই ক’দিনের জন্য ঘুরে আসতে পারবেন মহাকাশে। সৌজন্যে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’। অপেক্ষা করতে হবে আর মাত্র ছয়-সাত বছর।
স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর উপলক্ষে ভারতীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে মহাকাশে নভশ্চর পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। পোশাকি নাম— গগনযান। যা সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি। ইসরো চেয়ারম্যান কে শিবন জানান, মহাকাশচারীদের বেছে নেওয়া হবে সেনার তিনটি বিভাগ থেকে। প্রাথমিক ভাবে শিকে ছিড়তে চলেছে তিনটি বাহিনীর পাইলটদের। চলতি বছরেই ওই বাছাই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছেন ইসরো কর্তারা। সংস্থা জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় মোট ছ’জনকে বেছে নেওয়া হবে। যাঁদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত মহাকাশে যাওয়ার সৌভাগ্য হবে জনা তিনেকের। মহাকাশ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জীতেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘তিন জনের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা উভয়েই থাকবেন।’’ ইসরো জানিয়েছে, প্রায় দেড় বছরের প্রশিক্ষণের অধিকাংশই হবে ভারতে। চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতির জন্য ইতিমধ্যেই নাসা, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ইসরো। গগনযানে ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত নভশ্চরেরা মহাকাশে থাকবেন। তার পরে তাঁদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা হবে।
ভারতীয় বায়ুসেনার সদস্যরা প্রথম মিশনে সফল ভাবে মহাকাশ যাত্রা শেষ করার পরেই সাধারণ নাগরিকদের মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে ইসরো। ইসরো-র সহকারি অধিকর্তা এ কে সিন্হার কথায়, ‘‘প্রথম মিশন সফল ভাবে হলে সামগ্রিক চিত্রটি পাওয়া যাবে। ইতিবাচক-নেতিবাতক দিকটি সামনে আসবে। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সাধারণ নাগরিকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি দেওয়া হবে। তার পরেই তাঁরা মহাকাশ যানে ওঠার ছাড়পত্র পাবেন।’’ কী ভাবে আমজনতার মধ্যে থেকে বেছে নেওয়া হবে মহাকাশ যাত্রীদের? ইসরোর কথায়, আবেদনের ভিত্তিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষার মাধ্যমে বেছে নেওয়া হবে।
আগামী দিনে মহাকাশ যাত্রা সুগম করতে আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের পরে মহাকাশে স্পেস স্টেশন বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতও। ইসরো জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তা তৈরি হয়ে যাবে। যেখানে প্রয়োজনে ১৫-২০ দিন মহাকাশচারীরা থাকতেও পারবেন। সেখানে থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা করবেন মহাকাশচারীরা। তবে গোটাটাই গগনযান অভিযানের সাফল্যের উপরে নির্ভর করছে।
তার আগে অবশ্য চলতি জুলাই মাসে চাঁদের উদ্দেশে উড়ে যাবে চন্দ্রযান-২। নামবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। সেপ্টেম্বর মাসে চাঁদের মাটি ছোঁবে মহাকাশ যানটি। ওই অভিযানের চূড়ান্ত নকশা প্রস্তুত হওয়ার পরেই আগামী এক দশকে ভারতের মহাকাশ যাত্রার বিবরণ আজ তুলে ধরেন ইসরো চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘‘চাঁদের পরেই শুরু হবে মিশন সূর্য। যার পোশাকি নাম আদিত্য এল-১। যা যাত্রা করবে আগামী বছর।’’ ইসরো সূত্রে বলা হয়েছে, সূর্য থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখেই মহাকাশযানটি শুরু করবে তার পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ। ওই দূরত্বে পৌঁছতে ১০৯ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে ইসরো। আদিত্য-র কাজ হবে সূর্যের করোনা বা বর্হিপৃষ্ঠের সম্পর্কিত তথ্য অনুসন্ধান করা। ইসরো প্রধানের বক্তব্য, মূলত পৃথিবীর জলবায়ু বৈচিত্র্যের পিছনে করোনার ভূমিকা কী, সেটি দেখাই হবে আদিত্যের কাজ। তার পর শুরু হবে শুক্র গ্রহ অভিযান। যা শুরু হবে ২০২৩ সালে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।