ছবি- শাটারস্টকের সৌজন্যে।
হ্যাঁ, আদ্যোন্ত বরফই। তবে একেবারেই অন্য রকম রূপে। বরফের এই নতুন রূপটি আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা।
আবিষ্কারটি উস্কে দিল এই জল্পনাও, চাঁদে বা মঙ্গলের মতো যেখানে তাপমাত্রা থাকে স্বাভাবিকের অনেক অনেক নীচে, সেখানে এই রূপেও থাকতে পারে বরফ। থাকতে পারে তার উপর নির্ভর করে টিকে থাকা অণুজীবও।
বরফের এই রূপটি আদতে একটি কেলাস বা ‘ক্রিস্টাল’। যার ৪টি ধার (‘সাইড’) রয়েছে। যা জন্মাতে পারে হাড়জমানো ঠাণ্ডায় বা অকল্পনীয় চাপে। তবে গবেষণাগারের বাইরে বরফের এই নতুন অন্য রকম রূপটি টিকতেই পারবে না। উধাও হয়ে যাবে, জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বরফের এই নতুন রূপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আইস-১৯’। এর আগে বরফের ১৮টি রূপের হদিশ মিলেছিল। কিন্তু তাদের একটির সঙ্গেও বিন্দুমাত্র মিল নেই বরফের এই সদ্য আবিষ্কৃত রূপের।
অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার কমিউনিকেশন্স’-এ। একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে এই আবিষ্কারের সমর্থনে জাপানের বিজ্ঞানীদের আরও একটি গবেষণাপত্র।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই রূপে বরফ থাকতে পারে পৃথিবীর ‘ম্যান্টল’ (পৃথিবীর ম্যান্টলে থাকে নানা রকমের ধাতু) বা চাঁদে। থাকতে পারে মঙ্গলের মতো গ্রহেও যেখানকার তাপমাত্রা স্বাভাবিকের অনেক অনেক নীচে।
তুষারকণার (‘স্নোফ্লেক্স’) সঙ্গে আমরা খুবই পরিচিত। এই তুষারকণার মোট ৬টি ধার থাকে। তুষারকণার কেলাসের ৬টি কোণে থাকে ৬টি অক্সিজেন পরমাণু। হাইড্রোজেন পরমাণুগুলি থাকে তাদেরই চার পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। সজ্জার কোনও নিয়মকানুন তারা মানে না। তাই তুষারকণা খুব একটা স্থায়ীও হয় না। একটু চাপ দিলেই তাদের আকার বদলে যায়। সেই জন্যই হিমবাহ গলে গিয়ে নদীর জন্ম দেয়। বরফের নতুন রূপের মাত্র ৪টি ধার। সেই কেলাসে হাইড্রোজেন পরমাণুগুলি রয়েছেও অদ্ভূত ভাবে।
গবেষকরা বরফের এই নতুন রূপটির হদিশ পেয়েছেন গবেষণাগারে, শূন্যের ১৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নীচে। তার উপর চাপও প্রয়োগ করতে হয়েছিল খুব বেশি। ২ গিগাপাসকাল (এক গিগাপাসকাল বলতে বোঝায় ১০০ কোটি পাসকাল বা বায়ুমণ্ডলের চাপ)।