সূর্যের হাসিমুখ। ছবি : টুইটার থেকে।
মহাশূন্যের ঘুটঘুটে অন্ধকারকে পিছনে রেখে জ্বলছিল গনগনে হলুদ সূর্য। হঠাৎ তার গায়ে ফুটে উঠল কালো রঙের চোখ-মুখ। নাসার সোলার ডায়নামিক মানমন্দিরে সেই দৃশ্য ফুটে উঠতেই ছবি উঠল। কিন্তু দেখা গেল সূর্যের চোখ-মুখ মিলিয়ে যাচ্ছে না। বরং তা একই ভাবে রয়ে গিয়েছে মহাশূন্যে একখানা জ্বলন্ত ‘স্মাইলি ইমোজি’র মতো।
মঙ্গলবার ছিল আংশিক সূর্যগ্রহণ। তার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই সূর্যের এই পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। সূর্যের হাসিমুখের ছবিটি নাসা তুলেছে বুধবার স্থানীয় সময় ৯টা ৩৭ মিনিটে। তার পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোরে ছবিটি টুইটারে শেয়ার করে নাসা। তবে বেশ মজাচ্ছলেই ছবির বিবরণে নাসা লিখেছে, ‘‘সে চিজ!’’ (হাসিমুখে ছবি তোলার জন্য বিদেশে এমন বলা দস্তুর)। তার পর সূর্যের হাসিমুখের ব্যাখ্যাও দিয়েছে নাসা। তারা লিখেছে, ‘‘নাসার সোলার ডায়নামিক মানমন্দির সূর্যের হাসিমুখের এই ছবিখানা তুলেছে। যেখানে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ফাঁকে ধরা পড়েছে ‘কলঙ্ক’।’’ যদিও চাঁদের কলঙ্কের সঙ্গে সূর্যের এই কলঙ্কের মিল নেই কোনও। নাসা জানিয়েছে, এই কালো ছোপকে বলা হয় ‘করোনাল হোলস’। প্রবল গতিবেগ সম্পন্ন সৌরবাতাস যখন ছিটকে বের হয় মহাকাশে তখনই এই ধরনের কলঙ্ক তৈরি হয়।
সূর্যের হাসিমুখের ওই ছবি ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে সামাজিক মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই ১২ হাজার মানুষ পছন্দ করেছেন ছবিটি। তবে একই সঙ্গে অনেকে নিজের ভয়ের কথাও জানিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, ‘‘দেখতে ভাল লাগছে ঠিকই— কিন্তু মহাশূন্যে ও রকম জ্বলন্ত স্মাইলি দেখে বেশ ভয়ও হচ্ছে।’’ কেউ আবার নাসার লেখা চিজ-এর প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, প্রথমে চিজ বলো, তার পর হাসির চোটে দুনিয়াটাকে গ্রিল চিজ বার্গার বানিয়ে দাও।’’
কিন্তু সূর্যের এই হাসি থেকে কি ভয় পাওয়ার কারণ আছে? নাসা সে রকম কিছু উল্লেখ করেনি। তবে এক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এর প্রভাব পড়তে পারে পৃথিবীতেও। কারণ কালো যে অংশগুলি সূর্যপৃষ্ঠে দেখা গিয়েছে, তা আসলে খোলা চৌম্বক ক্ষেত্র। যেখানে সাধারণত সূর্যের তাপমাত্রা আশপাশের জ্বলন্ত প্লাজমার থেকে অনেক কম। তাপমাত্রার হেরফেরের কারণে ওই এলাকাগুলিতে সৌরঝড় হতে পারে। আর এই ধরনের সৌরঝড় থেকে বেরিয়ে আসা হলকা ক্ষতি করতে পারে মহাশূন্যে থাকা উপগ্রহগুলির। যা পৃথিবীর বিভিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং জিপিএস নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।