নাসার অপরচুনিটি রোভার। -ফাইল ছবি।
১৫ বছরে পা দিল মঙ্গলের মাটিতে নামা নাসার রোভার মহাকাশযান ‘অপরচুনিটি’। গত ৯ মাস ধরে অপরচুনিটি অবশ্য রয়েছে ‘কোমা’য়। পাসাডেনায় নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম বা মঙ্গলের কক্ষপথে থাকা কোনও মহাকাশযানের পাঠানো কম্যান্ডেই সে আর সাড়াশব্দ করছে না। কোনও সিগন্যালও পাঠাচ্ছে না। গত বছরের জুনে ভয়ঙ্কর ধূলিঝড় হয়েছিল মঙ্গলের ‘পারসিভ্যারেন্স ভ্যালি’ বা উপত্যকায়। কাছেপিঠেই থাকা অপরচুনিটি তার পরেই চলে গিয়েছে কোমায়।
নাসার এই রোভারটি মঙ্গলের মাটিতে নেমেছিল আজ থেকে ১৫ বছর আগে। ২০০৪-এর ২৪ জানুয়ারি। লাল গ্রহের যে জায়গাটিতে নেমেছিল নাসার ওই রোভার, তার নাম- ‘মেরিডিয়ানি প্লেনাম’। পরের দিনই (২৫ জানুয়ারি, ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা) সে প্রথম সিগন্যালটি পাঠিয়েছিল নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোলে।
অপরচুনিটির চেহারাটা একটা গল্ফ কার্ট (গল্ফের বল ও স্টিক রাখা হয় যেখানে)-এর মতো। ভাবা হয়েছিল তা ১ কিলোমিটারের বেশি চষে বেড়াতে পারবে না মঙ্গলের মাটি। কিন্তু সব হিসেবনিকেশ ওলটপালট করে দিয়ে গত ১৫ বছরে মঙ্গলের বুকে ৪৫ কিলোমিটার বা ২৮ মাইলেরও বেশি চষে বেড়িয়েছে অপরচুনিটি। ভাবা হয়েছিল, খুব বেশি হলে মঙ্গলের ৯০টা দিনের বেশি সে সক্রিয় থাকতে পারবে না লাল গ্রহের বুকে। সেই হিসেবও ভুল প্রমাণ করেছে অপরচুনিটি। গত ফেব্রুয়ারিজুন পর্যন্ত রীতিমতো সুস্থ, সবল থেকে মঙ্গলের মাটিতে কাটিয়ে দিয়েছে ৫ হাজারটি দিন।
আরও পড়ুন- মঙ্গলে ধুলোর ঝড়, বিপদে ‘অপরচুনিটি’
আরও পড়ুন- এ বার মঙ্গলেও উড়বে হেলিকপ্টার!
গত বছরের ১০ জুন গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম থেকে শেষ বারের মতো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছিল অপরচুনিটির সঙ্গে। ওই দিন পারসিভ্যারেন্স ভ্যালিতে ওঠা সেই ভয়ঙ্কর ধূলিঝড় পরে ছড়িয়ে পড়েছিল লাল গ্রহের গোটা পিঠে।
নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরিতে (জেপিএল) অপরচুনিটি প্রোজেক্ট ম্যানেজার জন কালাস বলেছেন, ‘‘মঙ্গলের মাটিতে তার (অপরচুনিটি রোভার) পদার্পণের ১৫তম বার্ষিকীটা আমরা খুব একটা উপভোগ করতে পারছি না। আমরা ওর সঙ্গে যোগাযোগের সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যতই সময় গড়াচ্ছে, ততই অপরচুনিটি থেকে সাড়াশব্দ পাওয়ার আশা কমে যাচ্ছে আমাদের।’’