নিলামে উঠল চাঁদের কণা!

৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ডলার! তিন টুকরো চাঁদের কণার নিলামে দাম উঠল আকাশছোঁয়াই। 

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৫১
Share:

৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ডলার! তিন টুকরো চাঁদের কণার নিলামে দাম উঠল আকাশছোঁয়াই।

Advertisement

১৯৭০ সালে রাশিয়ার ‘লুনা ১৬’ অভিযানে পৃথিবীতে নিয়ে আসা হয়েছিল উপগ্রহের ওই তিনটি টুকরো। পরবর্তী কালে রুশ সরকার সেগুলি উপহার দেয় সোভিয়েত স্পেস প্রোগ্রামের প্রয়াত চিফ ডিজাইনার এবং ডিরেক্টর সের্গেই পাভলোভিচ কোরোলেভের স্ত্রী নিনা ইভানোভনা কোরোলেভাকে। ১৯৯৩ সালে সেগুলি নিলামে ৪ লক্ষ ৪২ হাজার ৫০০ ডলারে কিনেছিলেন কোনও এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে ফের সেই চাঁদের টুকরোগুলি নিলামে তুলল সদবি’জ। এ বারে কিনেছেন এক মার্কিন সংগ্রাহক। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে এ ক্ষেত্রেও নাম গোপন রাখা হয়েছে।

পৃথিবী থেকে লক্ষ মাইল দূরের বাসিন্দা চাঁদ। তার ভর লক্ষ কোটি টন। তবু পৃথিবীতে খুব সামান্যই ‘মুনরক’ বা চাঁদের টুকরো রয়েছে। ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে আমেরিকার ছ’বারের অ্যাপোলো অভিযানে মোট ৩৮২ কেজি চাঁদের মাটি নিয়ে আসা হয়েছিল। তৎকালীন সোভিয়েত তাদের তিনটি ‘লুনা ল্যান্ডারস’-এ নিয়ে এসেছিল ৩০১ গ্রাম। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, আমেরিকা ও রাশিয়ার আনা বেশির ভাগ নমুনাই গোপনে সরকারি হেফাজতে রয়েছে। সেগুলি বিক্রি করা বা কেনা যায় না। সদবি’জ জানিয়েছে, বাজারে মাঝেমধ্যে মুনরক কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলো হয় চোরাই জিনিস, না হলে নকল।

Advertisement

আরও পড়ুন: মহাপ্রলয় আসন্ন? আট দশকেই জলমগ্ন হবে অধিকাংশ মহাদেশ: রাষ্ট্রপুঞ্জ

রুশ ‘লুনা ১৬’-র নমুনাই একমাত্র ব্যতিক্রম। তার পিছনে একটি ব্যতিক্রমী গল্পও রয়েছে। সেই অভিযানে কোনও মানুষ যায়নি। একটি রোবট পাঠানো হয়েছিল। সে-ই নিয়ে আসে চাঁদের কণাগুলি। একটি ছোট্ট কাচের বাক্সে তার আনা তিনটি টুকরোকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। নীচে পাঁচ বাই পাঁচ সেন্টিমিটার ধাতব প্লেটে খোদাই করে লেখা, ‘লুনা ১৬’-র আনা মুনরক। একটি ম্যাগনিফায়ার লাগানো, চাঁদের কণাগুলিকে বড় করে দেখার জন্য। এগুলোও সরকারি সম্পত্তি ছিল। পরে কোরোলেভের স্ত্রীকে দেওয়া হয়। সোভিয়েতের মহাকাশ গবেষণার স্তম্ভ ছিলেন কোরোলেভ। ১৯৬৬ সালে তিনি মারা যান। স্তালিনের অত্যাচারের হাত থেকে বেঁচে ফেরা কোরোলেভ পরে সোভিয়েতের মহাকাশ গবেষণার রূপকার হয়ে ওঠেন। তাঁর হাত ধরেই সোভিয়েতের প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ-যন্ত্র তৈরি, কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো, মহাকাশে প্রাণী পাঠানো, প্রথম মানুষ পাঠানো, প্রথম কোনও মহিলাকে পাঠানো। কিন্তু এই অনেক ‘প্রথম’-এর কান্ডারীকে কৌশলগত কারণেই আড়ালে রেখেছিল সরকার। মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রীকে স্বীকৃতিস্বরূপ বা ক্ষতিপূরণ বাবদ ‘লুনা ১৬’-এর আনা ২০০ মিলিগ্রাম চাঁদের টুকরো উপহার দেওয়া হয়। সোভিয়েত পতনের পরে ১৯৯৩ সালে সেই মুনরক নিলামে ওঠে। এ বার ফের সেগুলি নিলামে তুলল সদবি’জ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement