চাকায় চলা রোভারের পরিবর্তে আগামী দিনে উড়ন্ত চাকি (‘ফ্লাইং সসার’) পাঠানো হতে পারে চাঁদে। গ্রহাণুতে। ছবি- এমআইটি-র সৌজন্যে।
চাঁদেও এ বার উড়ন্ত চাকি!
ভিনগ্রহীদের যানের যে সব ছবি আমাদের চোখে ভাসে, অনেকটা তেমনই দেখতে।
চাকায় চলা রোভারের পরিবর্তে আগামী দিনে উড়ন্ত চাকি (‘ফ্লাইং সসার’) পাঠানো হতে পারে চাঁদে্ গ্রহাণুতে। যে সব মুলুকে কোনও বায়ুমণ্ডলের অস্তিত্ব নেই। সেই উড়ন্ত চাকির মতো দেখতে রোভার চলবে সৌরশক্তিতে।
অভিনব এই রোভার বানিয়েছে আমেরিকার ‘ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি' (এমআইটি)। সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পত্রিকা ‘জার্নাল অব স্পেসক্র্যাফ্ট অ্যান্ড রকেট্স’-এ।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, মূলত দু’টি কারণে চাঁদে ও গ্রহাণুতে আগামী দিনে এই ধরনের রোভার পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে। প্রথমত, আকাশে বিমান থেকে যেমন নীচের অনেক বেশি এলাকা দেখা সম্ভব হয়, তেমনই এই ধরনের রোভার থেকে চাঁদ ও গ্রহাণুর অনেক বেশি এলাকা একই সঙ্গে দেখা যাবে। দ্বিতীয়ত, চাঁদ ও গ্রহাণুর পিঠ (‘সারফেস’) এতই এবড়োখেবড়ো যে, সেখানে রোভার বেশি দূর চালানো সম্ভব হয় না। তা ছাড়াও সেখানে রয়েছে ছোটখাটো বহু পাহাড়। সেই দুর্গম এলাকায় রোভার চালানো খুব মুশকিল। ফ্লাইং সসার রোভারের ক্ষেত্রে সেই অসুবিধা নেই।
গবেষকরা জানিয়েছেন, চাঁদে বা গ্রহাণুতে কোনও বায়ুমণ্ডল নেই বলে অনেক বেশি পরিমাণে সৌরশক্তি পাবে এই ধরনের উড়ন্ত চাকি রোভার। বায়ুমণ্ডল নেই বলে সূর্য থেকে ছুটে আসা সৌরকণারা (মূলত ইলেকট্রন) যে আধান বহন করে আনব্, তা-ই এই রোভার চালানোর প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎশক্তি তৈরি করবে। ফলে, রোভার চালানোর জন্য তার ভিতরে কোনও ব্যাটারি পুরে তাকে পৃথিবী থেকে পাঠাতে হবে না। এর ফলে রোভারটিকে মহাকাশে পাঠানোর কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে। কমবে জ্বালানি ও আনুষঙ্গিক খরচও।
একই কারণে রোভার বানানো হয়েছে খুব হাল্কা পদার্থ— ‘মাইলার’ দিয়ে। যা মূলত পলিইথিলিন টেরেপথ্যালেট। এতেও মহাকাশযানে চাপিয়ে এই রোভারকে চাঁদে বা কোনও গ্রহাণুতে পৌঁছে দেওয়ার কাজটা সহজতর হয়ে যাবে। এমনটাই দাবি বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদদের।